নিজের অধীনে নির্বাচনে পরাজিত হতে চাওয়া পাগলামি : জাপা
দেশের বর্তমান শাসন পদ্ধতিতে শতভাগ ক্ষমতা প্রধানমন্ত্রীর হাতে বলে দাবি করেছেন জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান ও বিরোধী দলীয় উপনেতা গোলাম মোহাম্মদ (জিএম) কাদের। তিনি বলেন, ‘মন্ত্রিসভা ও সংসদ পরিবর্তন করে কোনো লাভ নেই। নিজের অধীনে নির্বাচনে কেউ পরাজিত হতে চাইবে, এটা আশা করা পাগলামি।’
সোমবার (১৯ জুন) রাজধানীর বানানীতে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে উপস্থিত গণমাধ্যম কর্মীদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন তিনি।
জিএম কাদের বলেন, ‘বর্তমান পদ্ধতিতে কোনোভাবেই সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। নির্বাচন ব্যবস্থা সরকারের ক্ষমতার বাইরে আনতে হবে। ১৯৯০ সালে আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জামায়াতসহ সবাই এরশাদের বিপক্ষে আন্দোলন করেছে। আবার বিএনপির বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি ও জামায়াতসহ সবাই আন্দোলন করেছে। ১৯৯৬ সালে যখন বিএনপি নির্বাচন ব্যবস্থা কুক্ষিগত করতে চেয়েছিল, তখনকার বিরোধী দলীয় নেতা ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, চিরস্থায়ীভাবে আমরা তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা চাই। ২০০৬ সালের পর বিএনপি আবার তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা প্রভাবিত করতে চেয়েছিল। তখনো জাতীয় পার্টি, আওয়ামী লীগসহ সবাই মিলে আন্দোলন করেছিলাম। পরবর্তীতে ‘ওয়ান ইলেভেন’ সরকার আসে।’
তিনি বলেন, ‘সংবিধান অনযায়ী নির্বাচন করতে হবে, এর কোনো অর্থ নেই। কারণ, ১৯৯১ সালে ও ২০০৮ সালে সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন হয়নি। শেখ হাসিনা ও খালেদা জিয়া সব সময় সংবিধান মানেননি। তত্ত্বাবধায়ক সরকার যে ব্যবস্থা ছিল তাও এখন বাতিল হয়েছে। তাই এখন একটি নতুন ব্যবস্থা করা জরুরি। কোনো সরকার যাতে নির্বাচন ব্যবস্থা প্রভাবিত করতে না পারে।’
সরকার যদি আগ্রহ দেখায় অথবা সবাই যদি একটি ফর্মুলায় আসতে চায় তবে তারাও একটি প্রস্তাব দেবেন বলে জানান জাপা চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, ‘আমরা যে প্রস্তাব দেব তা হয়ত শতভাগ গ্রহণযোগ্য নাও হতে পারে। তবে সবার আলোচনার মাধ্যমে সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য একটি চিরস্থায়ী ব্যবস্থা হতে পারে। সেজন্য সরকারকে আন্তরিকভাবে এগিয়ে আসতে হবে।’
অপর এক প্রশ্নের জবাবে জিএম কাদের বলেন, ‘বাংলাদেশে এখন গণতন্ত্র নেই। যদি গণতন্ত্র সংজ্ঞায়িত করি– গভর্নমেন্ট অব দ্য পিপল, বাই দ্য পিপল, ফর দ্য পিপল। আর রাজতন্ত্র যদি হয় গভর্নমেন্ট অব দ্য কিং, বাই দ্য কিং, ফর দ্য কিং। তাহলে এখন আমাদের দেশে গভর্নমেন্ট অব দ্য আওয়ামী লীগ প্লাস, বাই দ্য আওয়ামী লীগ প্লাস, ফর দ্য আওয়ামী লীগ প্লাস।’
এএইচআর/এসএসএইচ/