গণতন্ত্র মঞ্চের বৈঠকে অংশ নিয়ে জোট ছাড়ার কারণ জানালেন নুর
গণতন্ত্র মঞ্চের পরিচালনা পর্ষদের সভায় উপস্থিত হয়ে জোট কি কারণে ছাড়ছেন তা আনুষ্ঠানিকভাবে শরিক দলগুলোর শীর্ষ নেতাদের জানিয়েছেন গণঅধিকার পরিষদের সদস্য সচিব নুরুল হক নুর। রোববার (৭ মে) বিকেলে সেগুণ বাগিচা গণতন্ত্র মঞ্চের শরিক দল বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির কার্যালয়ে মঞ্চের পরিচালনা পর্ষদের সভায় অংশ নিয়ে নুর তা জানান।
বৈঠকে শেষে গণতন্ত্র মঞ্চের সমন্বয়কের দায়িত্বে থাকা বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, গণঅধিকার পরিষদ গণতন্ত্র মঞ্চ থেকে বের হয়ে গেছে। জোট থেকে তাদের এই সদস্য পদ প্রত্যাহার দুঃখজনক। রাজপথের আন্দোলন যখন একটা চূড়ান্ত রূপে যাচ্ছে, জনগণ বিরোধীদের ঐক্যবদ্ধ দেখতে চায়। তখন গণঅধিকার পরিষদের এই সিদ্ধান্ত আন্দোলনের জন্য নেতিবাচক বার্তা দেবে। সরকার বিরোধীদের আন্দোলনে যেভাবে বিভক্তি তৈরি করতে চায়, প্রতিনিয়ত বিরোধীদের বিরুদ্ধে তাদের যে বিষদগার, তাদের এই সিদ্ধান্ত সরকারকে উৎসাহ দেয়।
গণঅধিকার পরিষদের নেতারা সভায় উপস্থিত হয়ে কী বলেছেন এমন প্রশ্নের জবাবে সাইফুল হক বলেন, তারা জানিয়েছেন তারা তাদের দলকে গোছাতে চান। নিজেদের মতো করে কর্মসূচি পালন করবেন। আগামী ১২ মে শাহবাগে গণতন্ত্র মঞ্চ সভার ঘোষণা দিয়েছিল। গণঅধিকার পরিষদও ১২ মে তাদের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সভা ঘোষণা করে। এটা যেন পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি মনে না হয়, তাই গণঅধিকার পরিষদ তাদের ১২ তারিখের সভা পিছিয়ে দিচ্ছে। এটা তারা আজকের সভায় জানিয়েছে।
হঠাৎ গণঅধিকার পরিষদ কেন জোট ছাড়ল এমন প্রশ্নের জবাবে সাইফুল হক বলেন, তাদের অস্বস্তির জায়গা থেকে জোট থেকে নিজেদের প্রত্যাহার করেছে। গত ২ মে অনুষ্ঠিত গণতন্ত্র মঞ্চের সভাতেও গণঅধিকার পরিষদের প্রতিনিধিরা জানিয়েছিলেন, গত কয়েকটি মিটিং অংশ না নিলেও তারা মঞ্চের সঙ্গে থাকবেন। গণতন্ত্র মঞ্চ ছেড়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নানা প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে, বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে। এগুলোর জবাব গণঅধিকার পরিষদকেই দিতে হবে।
এ সময় মঞ্চের আরেক শরিক দল নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, গণতন্ত্র মঞ্চের আন্দোলন এতে কোনো বিঘ্ন হবে না। সরকার বিরোধীদের আন্দোলনে বিভিন্ন কূটকৌশল করে ভাঙন ধরাতে চায়।
রোববার বিকেলে গণতন্ত্র মঞ্চের পরিচালনা পর্ষদের পূর্ব নির্ধারিত সভা ছিল। সেই অনুযায়ী বৈঠক শেষে বিকেল পৌনে পাঁচটার সাংবাদিকদের সঙ্গে মঞ্চের নেতারা কথা বলার প্রস্তুতি নেন। এমন সময় সভাস্থলে হাজির হন গণঅধিকার পরিষদের সদস্যসচিব নুরুল হক ও যুগ্ম আহ্বায়ক ফারুক হাসান। তখন গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা সাংবাদিকদের কাছ থেকে কিছুটা সময় চেয়ে নেন। এর ২০ মিনিট পরে গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। তখন গণঅধিকার পরিষদের কেউ উপস্থিত ছিলেন না।
মঞ্চের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন ভাসানী অনুসারী পরিষদের সভাপতি শেখ রফিকুল ইসলাম, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের চেয়ারম্যান হাসনাত কাউয়ুম, জেএসডির কার্যকরী সাধারণ সম্পাদক জহির উদ্দিন স্বপন প্রমুখ।
এএইচআর/এমএ