জ্যান্ত কবর দেওয়ার হুমকি এমপি নদভীর, পুরোনো ভিডিও ভাইরাল
চট্টগ্রামের সাতকানিয়া-লোহাগাড়া আসনের সংসদ সদস্য আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামউদ্দিন নদভীর একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওতে নদভীকে একজনকে মারধর ও হুমকি দিতে দেখা যায়। মারধরের শিকার ব্যক্তির নাম জসিম উদ্দিন। তিনি সৌদি প্রবাসী ও আওয়ামী লীগ নেতা বলে স্থানীয় কয়েকজন জানিয়েছেন।
১ মিনিট ১৭ সেকেন্ডের ওই ভিডিওতে শুরুতে জসিম উদ্দিনকে বলতে দেখা যায়, যেখানে যে ওজনের প্রয়োজন সে ওজনের দিতে হবে। ইঞ্জিনিয়াররা আসলেও বরাবর দেয় না। এরপর এমপি নদভী তেলেবেগুনে জ্বলে ওঠেন। তাকে শাসিয়ে চড়-থাপ্পড় দিতে থাকেন।
এ সময় নদভীকে কয়েকজন থামাতে চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। থামাতে চেষ্টা করা একজনকে ধাক্কা দেন তিনি।
এরপর নদভী বলেন, আমাকে এখনো চিনস নাই। আমি কথা শেষ করেছি? আমি এখন চিফ ইঞ্জিনিয়ারের সঙ্গে কথা বলতাম। পরিবেশ-মজলিস বুঝছ না। আমি এখানে কেন আসছি? আমি যেটা পারব, সেটা তুরা পারবি? ফালতু। আমি মানুষ কি রকম গরম সেটা জানোস না। একেবারে জীবন্ত মাটিতে পুঁতে ফেলব। অমুক আওয়ামী লীগের নেতা আমার এখানে এসব চলবে না। এখানে বাস্তবতা চলবে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কয়েকবছর আগে এমপি নদভী সাতকানিয়ার পশ্চিম ঢেমশা এলাকার ডলুখালের ওপর নির্মিত ব্রিজ পরিদর্শনে গেলে এ ঘটনা ঘটে।
ভিডিওর বিষয়ে সাংসদ আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামউদ্দিন বলেন, আমরা ব্রিজ উদ্বোধন করতে গেছিলাম। ওই সময় জসিম বারবার উত্তেজিত হয়ে যাচ্ছি। তাকে থামাতে আমি শাসন করেছি। এমপি হিসেবে তাকে শাসন করার অধিকার আমার আছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত ১০ মার্চ সাতকানিয়া সদর ইউনিয়নের চিববাড়ি এমএ মোতালেব কলেজের একটি ভবন উদ্বোধন হয়। এতে স্থানীয় সংসদ সদস্য নদভীকে বাদ দিয়ে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল ও আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়াকে অতিথি করা হয়। এটি নিয়ে সাতকানিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এম এ মোতালেব এমপি নদভীর রোষানলে পড়েন।
পরদিন ১১ মার্চ লোহাগাড়া উপজেলার পদুয়া ইউনিয়নে একটি স্মরণ সভার বক্তৃতা দেন এমপি নদভী। সেখানে বক্তব্যে তিনি বলেন, বিপ্লব বড়ুয়া সাহেব এ ধরনের কর্মপরিধি উদ্বোধন করতে চান, ভবিষ্যতে তাহলে নির্বাচন করেন। এমপি হয়ে আসেন। তারপর উদ্বোধন করেন। আপনি প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী হয়ে, দপ্তর সম্পাদক হয়ে নিয়মের বাইরে কাজ করতে পারবেন না। এ ধরনের প্রকল্প উদ্বোধনের জন্য ভবিষ্যতে আসতে পারবেন না। আসলে আমি বাঁধা দেব। আমি সহজ মানুষ নই। আমি প্রধানমন্ত্রীকে সম্মান করি।
তিনি বলেন, এমপি কে হবে, নমিনেশন কে পাবে, এটি প্রথমে তকদিরের ব্যাপার। দ্বিতীয় হচ্ছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আস্থা ও নির্দেশনা। তিনি যাকে দেবেন সেই নির্বাচন করবে। তবে ১০০ কোটি টাকা খরচ করব যারা বলে তাদেরকে বলছি আমি ১ হাজার কোটি টাকা খরচ করব।
এমআর/এমএ