চট্টগ্রাম থেকে সরকার পতনের বার্তা যাবে : আমীর খসরু
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, চট্টগ্রাম থেকে যে বার্তা আমরা দেই, সে বার্তা সারা বাংলাদেশে চলে যায় এবং মানুষ উজ্জীবিত হয়। সে বার্তা ফ্যাসিস্টদের পতনের বার্তা।
তিনি বলেন, সরকার আজ ভয়ে এত বেশি ভীত হয়ে গেছে যে, তারা আমাদের ভয় দেখাতে চাচ্ছে। মানুষ যখন ভীত হয়ে আরেকজনকে ভয় দেখাতে চায়, তার অবস্থাটা আপনারা বুঝতে পারছেন। এত ভীত তারা আজকে। কিন্তু বিএনপি নেতা-কর্মীরা সে ভয়কে আজ জয় করে ফেলেছে। ইতোমধ্যে আমাদের ১৩ জন সহযোদ্ধা শহীদ হয়েছেন।
বুধবার (১১জানুয়ারি) বিকেলে নগরের সিআরবি সাত রাস্তার মোড়ে বিএনপির কেন্দ্র ঘোষিত গণঅবস্থান কর্মসূচিতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। কর্তৃত্ববাদী সরকারের পদত্যাগ এবং ১০ দফা দাবিতে চট্টগ্রাম বিভাগীয় বিএনপি এ কর্মসূচির আয়োজন করে।
এ সময় আমির খসরু বলেন, আমরা বাড়িতে ফিরে যাচ্ছি না। যেখানেই হামলা হচ্ছে বিএনপির নেতা-কর্মীরা প্রতিরোধ করছে। আগামীদিনের আন্দোলনে আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে যেতে হবে। আগামী ১৬ জানুয়ারি আমাদের পরবর্তী কর্মসূচি হবে বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদে দেশের সব জেলা, উপজেলাগুলোতে প্রতিবাদ সভা।
তিনি বলেন, আমাদের ১০ দফা আন্দোলনের অংশ হিসেবে এ অবস্থান কর্মসূচি দেওয়া হয়েছে। এর মাধ্যমে আরেকটি ধাপ আমরা এগিয়ে গেছি। পলো গ্রাউন্ডের জনসভার পর আজকে এবং ২৪ তারিখের গণমিছিলে চট্টগ্রামবাসী আবারও প্রমাণ করেছেন দখলদার ও অনির্বাচিত সরকারকে জনগণ আর চায় না। আজকে আবারও বার্তা দেওয়া হচ্ছে দখলদার সরকার বিদায় হও।
তিনি আরও বলেন, আজকে গুম, খুন, হত্যা, মিথ্যা মামলা, গায়েবি মামলার মাধ্যমে বিএনপির এ আন্দোলনকে বাধাগ্রস্ত করার কোনো সুযোগ নাই। এ আন্দোলনের মালিকানা বাংলাদেশের জনগণ নিয়ে ফেলেছে। আন্দোলনের মালিকানা যখন জনগণ নিয়ে নেয় তখন সে আন্দোলনের প্রতিরোধ কেউ করতে পারবে না। সুতরাং নেতা যেই থাকুক বিএনপির এ আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।
আমীর খসরু বলেন, শেখ হাসিনা আপনি দেয়ালের লিখন পড়তে শিখুন। আপনাকে বিদায় হতে হবে। জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে আপনারা টিকতে পারবেন না। আর কিছু চাটুকারের দল নিয়ে যদি মনে করেন আবারও ভোট চুরির কারবার করবেন, সে কাজ করতে দেবে না বাংলাদেশের মানুষ। ভোট চোরদের এরমধ্যে চিহ্নিত করেছে বাংলাদেশের মানুষ। প্রত্যেকের কর্মকাণ্ড দেখছে। তারা রাজনীতিতে পরাজিত হয়ে গেছে। তারা পুলিশের একটি অংশ, সরকারি কর্মকর্তাদের একটি অংশকে ব্যবহার করছে।
প্রধান বক্তার বক্তব্যে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহাজাহান বলেন, চট্টগ্রামের পলোগ্রাউন্ড ও ঢাকার সমাবেশ শত বাধার পরও জনসমুদ্রে পরিণত হয়েছিল। চট্টগ্রাম রাজনীতির তীর্থস্থান। এই চট্টগ্রাম থেকে শহীদ জিয়া স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন। তিনি লড়াই করে ব্যর্থ হননি। আমরাও হবো না। আওয়ামী লীগ যে গণতন্ত্রকে হত্যা করেছিল, খালেদা জিয়া লড়াই করে তা পুনরুদ্ধার করেছেন। তারেক রহমান দূরে থাকলেও তার সঙ্গে আমাদের অবস্থান দুই ফুট দূরত্বের। তার নেতৃত্বেই শেখ হাসিনার পতন হবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দিন বলেন, আওয়ামী লীগের জন্ম হয়েছে ভারত থেকে। তারা ভারতকে পছন্দ না করে বাংলাদেশকে পছন্দ করতে পারবে না। এটা জিয়াউর রহমানোর বাংলাদেশ। শহীদ জিয়া বলেছিলেন, আমাদের এক ইঞ্চি জায়গাও কেউ নিতে পারবে না। তারা সেই জিয়াকে হত্যা করেছে। বাংলাদেশ আমাদের পবিত্র জন্মভূমি। এই জন্মভূমি রক্ষায় বিএনপির কর্মীরা যথেষ্ট। জালিম সরকারকে দূর করতে না পারলে নিস্তার পাওয়া যাবে না। আগামী দিনে কর্মসূচি পালন করার জন্য সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজদের কাছ থেকে কোনো অনুমতি নিতে হবে না।
চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক ডা. শাহাদাত হোসেনের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্করের পরিচালনায় বক্তব্য রাখেন বিএনপির উপদেষ্টা আবুল খায়ের ভূঁইয়া, জয়নাল আবেদীন ফারুক, অধ্যাপক জয়নাল আবেদীন ভিপি, গোলাম আকবর খোন্দকার, এস এম ফজলুল হক, কেন্দ্রীয় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম ও দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহবায়ক আবু সুফিয়ান।
এমআর/এসএম