সরকারকে কেউ বিশ্বাস করে না : খন্দকার মোশাররফ
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, আজ এ সরকারকে কেউ বিশ্বাস করে না। সারা বিশ্ব বিশ্বাস করে, তাদের অধীনে সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন হতে পারে না। তাই তাদের হটানো ছাড়া বিকল্প কিছু নেই।
মঙ্গলবার (১৩ ডিসেম্বর) বিকেলে নয়াপল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে এসব কথা বলেন তিনি। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসসহ কারাবন্দি নেতাদের মুক্তি ও ৭ ডিসেম্বর দলীয় কার্যালয়ে হামলার প্রতিবাদে এ সমাবেশের আয়োজন করে ঢাকা মহানগর বিএনপি।
খন্দকার মোশাররফ বলেন, আজ আমাদের নেত্রী খালেদা জিয়া কারাগারে, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বিদেশে অবস্থান করতে বাধ্য হচ্ছেন। আমাদের টার্গেট এ সরকারের পতন ঘটিয়ে তাকে মুক্ত করা। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানকে দেশে ফিরিয়ে রাজনীতি করার মুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি করে দেওয়া।
নেতাকর্মীদের রাজপথে আন্দোলন করার জন্য প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, প্রশাসনের ভাইদের বলব, আপনারা শপথ নিয়েছেন দেশের জনগণের সঙ্গে কাজ করবেন। আপনারা কারও রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী নন। রাজনৈতিকভাবে আপনার কারও সেবাদাসও নন। জনগণের সেবক।
তিনি আরও বলেন, প্রশাসনের সঙ্গে বিএনপির কোনো দ্বন্দ্ব নেই। আমরা রাজনীতি করি, রাজনৈতিক দলের সঙ্গে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় শান্তিপূর্ণভাবে দাবি আদায়ের আন্দোলন করি। প্রশাসনের সঙ্গে আমাদের শত্রুতা নেই। এই অবৈধ সরকারের হুকুম মানতে গিয়ে আজ র্যাব আন্তর্জাতিকভাবে স্যাংশন খেয়েছে। আমেরিকা তাদের বিরুদ্ধে স্যাংশন দিয়েছে। দুর্ভাগ্য র্যাব এ অবৈধ সরকারের হুকুম তালিম করতে গিয়ে স্যাংশনে পড়েছে।
আওয়ামী লীগ গত ১৫ বছরে এতো নির্যাতন করেও বিএনপিকে দুর্বল করতে পারেনি উল্লেখ করে মোশাররফ বলেন, যার প্রমাণ বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশে লাখ লাখ মানুষের অংশগ্রহণ। জনগণ পরিষ্কার বার্তা দিয়েছে যে, এই সরকারকে তারা চায় না। সেই লক্ষ্যে আমরা যুগপৎ আন্দোলন গড়ে তুলতে ১০ দফা দাবি ঘোষণা করেছি।
সমাবেশে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে যে বর্বরতা ঘটেছে তা গণতন্ত্রকামী মানুষের কাছে কালো অধ্যায় হিসেবে পরিগণিত হবে। তারা যেভাবে লাঠি চার্জ, গুলি ও টিয়ারশেল ছুড়ে নেতাকর্মীদের মেরে আহত করেছে, লুটপাট করেছে; অসভ্য ব্যবহার ও আচরণ করেছে। তারা আমাদের নেতা প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ও খালেদা জিয়ার ছবি ভেঙে ফেলছে। তারা হিংস্র, হত্যাকারী। এই চেহারা এখন শুধু দেশে নয়, আন্তর্জাতিকভাবে উন্মোচিত হয়েছে।
ঢাকায় অবস্থানরত কূটনৈতিকদের আওয়ামী লীগের দেওয়া চিঠি প্রসঙ্গে খসরু বলেন, বিদেশি মিশনগুলোতে যা পাঠিয়েছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা। আসলে তারা দোষী, নাকি নির্দোষ তা জনগণের কাছে প্রমাণিত।
তিনি বলেন, সরকার বিদেশিদের বলে অভ্যন্তরীণ বিষয়ে মাথা ঘামাবেন না। আবার তারাই বিদেশিদের কাছে নালিশ করে। বিদেশিদের পেছনে দৌড়াচ্ছে। কোনো কাজ হবে না। দেশের জনগণ এ সরকারকে আগেই বাতিল করেছে, এখন বিশ্ব তাদের বাতিল করেছে। তাদের বিদায় না হওয়া পর্যন্ত কোনো পথ নেই।
আরেক স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বলেন, আজ এ সরকারের অন্যায় অত্যাচার ও দুর্নীতির প্রতিবাদ করলে পুলিশ গুলি চালাচ্ছে। আমাদের নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার করেছে। আপনারা কাকে রক্ষার জন্য এই কাজ করছেন। গুটিকয়েক লোককে রক্ষার জন্য কোটি কোটি মানুষের বিরুদ্ধে কাজ করছেন। গুটি কয়েক মানুষের স্বার্থ রক্ষা না করে জনগণের পক্ষে থাকুন। বিচারকদের বলব, শপথ নিয়েছেন কিন্তু তা পালন করেননি। আল্লাহর কাছে আপনাদের জবাবদিহি করতে হবে।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমানের সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান, ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল আউয়াল মিন্টু, ডা. জাহিদ হোসেন প্রমুখ।
সমাবেশে সঞ্চালনা করেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনু ও উত্তরের সদস্য সচিব আমিনুল হক।
এএইচআর/এসকেডি