বিএনপির কার্যালয় থেকে লুটপাটের অভিযোগ মোশাররফের
নয়াপল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে গত ৭ ডিসেম্বর আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও আওয়ামী লীগের পেটুয়া বাহিনী ভাঙচুর করার পাশাপাশি কম্পিউটার, ল্যাপটপ, ফাইলপত্র, গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্রসহ নগদ টাকা লুট করেছে বলে অভিযোগ করেছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন।
সোমবার (১২ ডিসেম্বর) দুপুরে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ করেন তিনি। এর আগে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্যদের নিয়ে কার্যালয়ের বিভিন্ন ফ্লোর ঘুরে দেখেন খন্দকার মোশাররফ।
খন্দকার মোশাররফ বলেন, বিজয়ের মাসে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে পুলিশ এবং আওয়ামী লীগের পেটুয়া বাহিনী যেভাবে আসবাবপত্র তছনছ করেছে, লুটপাট করেছে, নগ্ন সন্ত্রাস করেছে তা নজরিবহীন।
তিনি আরও বলেন, কার্যালয়ের প্রথম ফ্লোরে আমাদের চেয়ারপারসনের অফিস। সেটি বন্ধ থাকে। কিন্তু আপনারা দেখেছেন সেটির দরজা ভেঙে কীভাবে ভাংচুর ও লুটপাট করেছে। তৃতীয় তলায়ও তছনছ করেছে। শুধু তাই নয়, বিভিন্ন উপকরণ কম্পিউটার, ল্যাপটপ, ফাইলপত্র, নথিপত্র সব নিয়ে গেছে।
সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, চতুর্থতলার আমাদের ছাত্র সংগঠনগুলোর অফিসেও ভাঙচুর করেছে। সেখান থেকেও কম্পিউটার, ল্যাপটপ, ফাইলপত্র, নথিপত্র সব নিয়ে গেছে। অ্যাকাউন্টস অফিস থেকেও সব লুটপাট করে নিয়ে গেছে।
তিনি আরও বলেন, বিএনপির কার্যালয়ে ৬ তলায় একটি লাইব্রেরি আছে। সেটিও তাদের বর্বরতা থেকে রক্ষা পায়নি। জিয়াউর রহমানের মুরাল পর্যন্ত ভেঙে ফেলেছে।
৭ ডিসেম্বর পুলিশ অতর্কিত হামলা চালিয়েছে দাবি করে মোশাররফ বলেন, যেভাবে হামলা চালিয়েছে তা বিশ্বে নজিরবিহীন। নিন্দা করার ভাষা নেই। অফিস থেকে সিনিয়র নেতাদের গ্রেপ্তার করেছে। ৪ শতাধিক নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এসব গ্রেপ্তারের উদ্দেশ্য ছিল ১০ ডিসেম্বরের সমাবেশ বানচাল করা। মধ্যমপন্থি গণতান্ত্রিক দল হিসেবে বিএনপি তাদের কর্মসূচি পালন করেছে।
বিএনপির বিভাগীয় প্রতিটি সমাবেশে সরকার বাধা দিয়েছে উল্লেখ করে বিএনপির সিনিয়র এ নেতা বলেন, সরকার কীসের ভিত্তিতে এই ঘটনা ঘটালো তা আমাদের হিসাবে মেলে না। তাদের হিসাবে খেলা, কিন্তু বিএনপি এই খেলায় বিশ্বাস করে না। জনগণ বিক্ষুব্ধ, জনগণ রায় দিয়েছে দেশের পরিস্থিতি স্বাভাবিক অবস্থায় আনা আওয়ামী লীগের পক্ষে সম্ভব নয়। জনগণ এই সরকারকে আর চায় না।
৭ ডিসেম্বরের সরকারের আচরণ প্রমাণ করে তারা গায়ের জোরের সরকার- এমন মন্তব্য করে তিনি আরও বলেন, আমরা ১০ দফা দিয়েছি। এই ১০ দফাকে সমর্থন করে যারা যুগপৎ আন্দোলন করবে তারাও কর্মসূচি দিয়েছে। নেতাকর্মীদের মুক্তির দাবিতে আগামীকাল ১৩ ডিসেম্বর নয়াপল্টন অফিসের সামনে থেকে গণমিছিল করবে বিএনপি।
বিএনপির কার্যালয়ে ভাঙচুরের ঘটনায় বিএনপির পরবর্তী পদক্ষেপ কী হবে? -সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে মোশাররফ আরও বলেন, গতকাল আমরা অফিসে (কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে) আসতে পেরেছি। কার্যালয় থেকে কী কী খোয়া গেছে তার তালিকা করছি। তারপর সিদ্ধান্ত নেব কী করব।
ব্রিফিংয়ে উপস্থিত দলটির আরেক স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, আমরা প্রতিটি সমাবেশ শান্তিপূর্ণভাবে করার চেষ্টা করেছি। বরং সরকার বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেছে প্রতিটি সমাবেশে। সরকারের নির্দেশে তাদের দলের কর্মীরা ১০ তারিখ ঘিরে এমন কোনো অপকর্ম নেই, যা করেনি। আতঙ্কিত করছে সরকার, বিএনপি শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করে দেখিয়েছে। আমরা গণতান্ত্রিক আন্দোলন করব। এই সরকারকে বিদায় জানাব।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আব্দুল মঈন খান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু প্রমুখ।
এএইচআর/এসএম