মাঠে জায়গা না পেয়ে রাস্তায় নেতাকর্মীরা
বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশে যোগ দিতে সারা দেশের নেতাকর্মীরা রাজধানীর গোলাপবাগ মাঠে আসছেন। শুক্রবার (৯ ডিসেম্বর) রাতেই নেতাকর্মীদের উপস্থিতিতে পরিপূর্ণ হয়ে যায় সমাবেশস্থল। সকাল থেকে দলে দলে আসতে থাকেন আরও হাজার হাজার নেতাকর্মী। মাঠে জায়গা না পাওয়ায় তারা সমাবেশস্থলের আশপাশের এলাকা ও রাস্তায় অবস্থান নিয়েছেন।
রাস্তায় অবস্থান নেওয়া বিএনপি নেতাকর্মীরা সারাক্ষণ স্লোগান দিচ্ছেন। ‘টেক ব্যাক বাংলাদেশ’, ‘অ্যাকশন অ্যাকশন, তারেক জিয়ার অ্যাকশন’, ‘জ্বালো রে জ্বালো, আগুন জ্বালো’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে দেখা যায় তাদের।
শনিবার (১০ ডিসেম্বর) বেলা ১১টায় সরেজমিনে দেখা যায়, গোলাপবাগ মাঠে জায়গা না পেয়ে বিএনপির নেতাকর্মীরা মানিকনগর, টিটিপাড়া, মুগদা ও কমলাপুরের রাস্তায় অবস্থান নিয়েছেন। দলটির নেতাকর্মীরা গ্রুপে গ্রুপে অবস্থান নিয়ে বিভিন্ন স্লোগান দিচ্ছেন। সমাবেশস্থল ও এর আশপাশের এলাকার রাস্তা স্লোগানে স্লোগানে মুখরিত হয়ে আছে।
আরও পড়ুন : রাজনীতির খেলায় ফাউল যেন না হয়
সমাবেশে আসা নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তাদের কেউ গাজীপুর থেকে, কেউ নরসিংদী থেকে আর কেউ নারায়ণগঞ্জ থেকে এসেছেন। তারা সমাবেশস্থলে যাওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু মাঠে নেতাকর্মীদের প্রচুর ভিড় থাকায় ভেতরে প্রবেশ করতে পারেননি।
আরও পড়ুন : ১০ ডিসেম্বর : কী খেলা হবে?
কমলাপুরে রাস্তায় অবস্থান নেওয়া গাজীপুর থেকে আসা বিএনপি নেতা রাকিব হোসেন বলেন, সকালে গাজীপুর থেকে ঢাকায় এসেছি। পরিবহন সংকট থাকায় কখনো হেঁটে আবার কখনো সিএনজি বা রিকশায় করে এসেছি। কিন্তু মাঠের ভেতরে জায়গা না পেয়ে কমলাপুরে অবস্থান নিয়েছি। সমাবেশ শেষ না হওয়া পর্যন্ত এখানেই থাকব।
নারায়ণগঞ্জ থেকে আসা বিএনপি নেতা জোবায়ের হোসেন বলেন, ঢাকায় আসতে বিভিন্ন জায়গায় বাধা পেয়েছি। তারপরও অনেক কষ্ট করে এসেছি দলের সমাবেশ সফল করতে। সমাবেশস্থলে যেতে না পেরে কিছুটা খারাপ লাগছে। তবে রাস্তায়ও প্রচুর নেতাকর্মী রয়েছেন তাদের সঙ্গে বসে স্লোগান দিচ্ছি।
দুপুর পৌনে ১২টার দিকে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনের সামনে র্যাব-৩-এর অধিনায়ক লে. কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, বিএনপির সমাবেশকে কেন্দ্র করে কমলাপুর, টিটিপাড়া ও মতিঝিল এলাকার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে র্যাব-৩ এর প্রায় ২৫০ জন সদস্য মোতায়েন রয়েছেন। যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে র্যাব-৩ এর সদস্যরা কাজ করছেন। সমাবেশের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতেও আমরা কাজ করছি। আমরা এতক্ষণ পর্যন্ত আশপাশের এলাকায় টহল দিয়েছি। কোনো ধরনের সন্দেহজনক বা অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটতে দেখিনি।
আরও পড়ুন : দলাদলি নয় গলাগলি হোক
শুক্রবার দুপুরে ঢাকা মেট্রোপলিটন গোয়েন্দা পুলিশ প্রধান অতিরিক্ত কমিশনার হারুন অর রশীদ জানান, বিএনপির প্রস্তাবিত দাবির পরিপ্রেক্ষিতে তাদের গোলাপবাগ মাঠে সমাবেশের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। ২৬টি শর্তে তাদের এ অনুমতি দেওয়া হয়।
১০ ডিসেম্বর সমাবেশের জন্য বিএনপি শুরু থেকেই নয়াপল্টনের সড়ক ব্যবহারের দাবি জানিয়ে আসছিল। আর সরকার শুরু থেকেই বলে আসছিল নয়াপল্টনে সমাবেশ করতে দেওয়া হবে না। ডিএমপি থেকে প্রথমে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ও পরে মিরপুরের বাঙলা কলেজ মাঠ এবং সবশেষ কালশীর মাঠে সমাবেশ করতে বলা হয়। কিন্তু বিএনপি সেগুলোর কোনোটিতেই সমাবেশ করতে রাজি হয়নি। তারা গোলাপবাগ মাঠকে বেছে নিয়েছে।
এমএসি/এসএসএইচ/