সমাবেশ মঞ্চে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা
বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় গণসমাবেশ অনানুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়েছে। সমাবেশের মঞ্চে একে একে কেন্দ্রীয় নেতারা আসা শুরু করেছেন। এর মধ্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবেদীন ফারুক, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হাবিবুন নবী খান সোহেল, মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, রাজশাহীর সাবেক মেয়র মিজানুর রহমান মিনু, ছাত্রদলের সভাপতি কাজী রওনুকুল হাসান শ্রাবণসহ আরও অনেকে মঞ্চে অবস্থান করছেন। ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি আজিজুল বারী হেলাল অনুষ্ঠান পরিচালনা করছেন।
শনিবার (১০ ডিসেম্বর) বেলা ১১টায় গোলাপবাগ মাঠে বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশ আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হবে। এর আগে ভোর থেকেই বিএনপি নেতাকর্মীদের স্লোগানে স্লোগানে মুখরিত হয়ে ওঠে গোলাপবাগ মাঠ।
দেশের বিভিন্ন জেলা ও রাজধানীর বিভিন্ন ইউনিট থেকে খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে সমাবেশস্থলে প্রবেশ করতে দেখা যাচ্ছে নেতাকর্মীদের। এরই মধ্যে গোলাপবাগ মাঠ বিএনপি নেতাকর্মীদের পদচারণায় কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে গেছে। সমাবেশে আসা নেতাকর্মীদের চাঙ্গা রাখতে মাইকে বিভিন্ন রকম স্লোগান দেওয়া হচ্ছে এবং দলীয় ও দেশাত্মাবধক গান পরিবেশন করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন : রাজনীতির খেলায় ফাউল যেন না হয়
সমাবেশ মঞ্চে ঠিক সামনে ঢাকা মহানগর যুবদলের নেতাকর্মীদের অবস্থান নিতে দেখা গেছে। তারা একের পর এক স্লোগান দিয়ে সবাইকে চঙ্গা রাখার চেষ্টা করছে। মাঝে মধ্যে মঞ্চ থেকে নেতারা কর্মীদের উদ্দেশে বিভিন্নরকম নির্দেশনাও দিচ্ছেন।
অন্যান বিভাগীয় সমাবেশগুলোতে মঞ্চে দলীয় চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের চেয়ার ছবি দিয়ে আলাদা করে রাখতে দেখা গিয়েছিল। কিন্তু ঢাকার সমাবেশ মঞ্চে সে চিত্র এখনো চোখে পড়েনি। মূল মঞ্চের ব্যানারের সামনে একটা এলইিডি স্ক্রিন বসানো হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, সমাবেশ শুরুর পর তারেক রহমান নেতাকর্মীদের উদ্দেশে ভিডিও কনফারেন্সে বক্তব্য রাখবেন। তবে এ বিষয়ে বিএনপির দায়িত্বশীল কোনো নেতা কথা বলতে রাজি হয়নি।
রংপুর থেকে আসা বিএনপি কর্মী আয়নাল হক বলেন, অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে এ সমাবেশে এসেছি। আমরা আমাদের লক্ষ্য পূরণ না করে ঘরে ফিরবো না। খালেদা জিয়াকে মুক্ত করে দেশের গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনাই আমাদের লক্ষ্য। এই আওয়ামী লীগ সরকার আত্যাচারের সব সীমা ছাড়িয়ে গেছে, জনগণ তাদের আর এক মুহূর্তও ক্ষমতায় দেখতে চায় না। এ জন্য সরকারের পদত্যাগ ছাড়া আমরা ঘরে ফিরবো না।
আরও পড়ুন : ১০ ডিসেম্বর : কী খেলা হবে?
সাভার থেকে আসা যুবদল নেতা শিপন মিয়া বলেন, নানা রকম পুলিশি তল্লাশি, হয়রানির শিকার হয়ে আমাদের সামবেশে যোগ দিতে হয়েছে। দেশে আজ গণতন্ত্র নেই বলে এতো অন্যায় নির্যাতন সহ্য করতে হচ্ছে সাধারণ মানুষজনকে।
সকালে সমাবেশস্থলে মিছিল নিয়ে আসা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদলের সাবেক সদস্য সচিব আমান উল্লাহ আমান বলেন, সরকার আমাদের সঙ্গে বৈষম্যমূলক আচরণ করেছে। সমাবেশ বানচালের চেষ্টা করা হয়েছে। আমাদের মহাসচিবসহ হাজারও নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে। তার প্রতিবাদে আমরা এখানে এসেছি। এ সরকারের পদত্যাগ না হওয়া পর্যন্ত ঘরে ফিরব না।
এর আগে নানা নাটকীয়তা, সহিংসতা, গ্রেপ্তার শেষে শুক্রবার সমাবেশের অনুমতি পায় বিএনপি। এরপর থেকেই দলে দলে বিএনপি নেতাকর্মীরা গোলাপবাগ মাঠে আসতে শুরু করেন। এমনকি সন্ধ্যা গড়িয়ে রাত নামতেই কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে উঠে রাজধানীর এই মাঠটি। পরে ঢাকা মহানগরের বিভিন্ন ইউনিটের নেতাকর্মীদের পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা নেতাকর্মীরাও তাদের ব্যানার-ফেস্টুন সেটে দেন।
দেশের বিভিন্ন জেলা শহর থেকে সমাবেশে আসা একাধিক নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সমাবেশে যোগ দিতে কয়েকদিন আগে থেকেই তারা ঢাকায় প্রবেশ করেছেন। নানা চড়াই-উতরাই পার করার পরেও সমাবেশস্থল নির্ধারিত হওয়াতে উচ্ছ্বসিত তারা। তবে অনেকে আবার এটাকে মন্দের ভালো হিসেবেও দেখছেন।
শনিবার রাজধানীর গোলাপবাগ মাঠে সমাবেশ শুরু হবে বেলা ১১টায়। এই সমাবেশ থেকে দলের পক্ষ থেকে ১০ দফা আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
এমএইচডি/এসএম