গণফোরাম নামে দুটো দল আছে, তা বলার সুযোগ নেই : ড. কামাল
ড. কামাল হোসেন বলেছেন, গণফোরাম নামে দুটো দল আছে, তা বলার সুযোগ নেই। কিছু লোক বেরিয়ে গেছে। তারা বেরোতেই পারে। কাউকে তো বাধ্য করে রাখা যায় না। আমরা যারা গণফোরাম করেছি এবং এখনও করে যাচ্ছি, তারা জনগণের ঐক্যের ওপর ভরসা করেই মাঠে আছি।
শনিবার (৬ মার্চ) বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি। গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন বলেন, কোনো দল থেকে কিছু লোক বেরিয়ে গিয়ে বিকল্প বক্তব্য রাখতে পারে, বিকল্প ভূমিকা রাখতে পারে। আমি মনে করি, আমাদের দল সঠিকভাবে ও ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করে যাচ্ছে। অনেক সময় মানুষ ক্ষমতার স্বার্থে বেরিয়ে যায়। সত্যিকার অর্থে কোনো দ্বিমত থাকলে, আসেন সেটা নিরসন করি।
গত ২৭ ফেব্রুয়ারি গণফোরামের বিদ্রোহী অংশ সংবাদ সম্মেলন করে অধ্যাপক আবু সাইয়িদকে আহ্বায়ক করে ১৫ সদস্যের নির্বাহী কমিটি গঠন করে। এতে অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী ও দলটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসিন মন্টুকে সদস্য করা হয়।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে কামাল হোসেন বলেন, যারা বেরিয়ে গেছে, তারা তো গেছেই। এখন কেউ আসতে চাইলে আমরা তাদের নিয়ে আরও বৃহত্তর ঐক্য করব। জনগণের শক্তি দিয়ে পরিবর্তন আনা যায়। আমরা অন্য কোনো চিন্তা করি না। আলোচনা করে ঐক্যফ্রন্টের ব্যানারে সুবর্ণ জয়ন্তীর কর্মসূচি দেওয়া হবে।
ডিজিটাল সিকিউরিটি আইন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমি বাদ দেওয়ার পক্ষে মন্তব্য করেছি। ডিজিটাল আইনের কথা বলে মানুষের বাক স্বাধীনতা ও চিন্তা স্বাধীনতার ওপর আঘাত করা হচ্ছে। এ অবস্থা থেকে আমাদের সমাজকে পুরোপুরিভাবে মুক্ত করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, বর্তমান সংকট থেকে উত্তরণের জন্য আমাদের ঐক্যের প্রয়োজন। এ সংকট থেকে উত্তরণের একমাত্র পথ জনগণের ঐক্যবদ্ধ হওয়া। আমাদের লেগে থাকতে হবে, যাতে সরকার বাধ্য হয়ে এগুলো থেকে সরে দাঁড়ায়। যদি আমরা ঐক্যবদ্ধ না হই, তাহলে সুশাসন পাওয়া অসম্ভব। সুশাসন না থাকলে বিদ্যমান কঠিন সমস্যা থেকে উত্তরণ সম্ভব না। বর্তমান সরকার জনগণের চাওয়া ও কথার বিপরীত অংশ তুলে নিয়ে আসছে। এতে জনগণের আশা আকাঙ্ক্ষা পূরণ না হয়ে বরং উল্টোটা হচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে ড. কামাল হোসেনের লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান গণফোরামের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মোকাব্বির খান। লিখিত বক্তব্যে কামাল হোসেন বলেন, গণতন্ত্র, আইনের শাসন ও দুর্নীতিমুক্ত জনপ্রশাসনের মাধ্যমে অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক অধিকার সুনিশ্চিত করার স্বপ্ন নিয়ে জনগণ বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে মহান স্বাধীনতা অর্জন করেছে। কিন্তু স্বাধীনতার ৫০ বছরেও জনগণের কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য অর্জন হয়নি। আমাদের অর্থনৈতিক অগ্রগতি হয়েছে, মাথাপিছু আয় বেড়েছে, কিন্তু বৈষম্য কমেনি।
তিনি বলেন, আজ যারা নিজেদের নির্বাচিত দাবি করে দেশ শাসন করছে, তাদের প্রতি জনগণের আস্থা বিশ্বাস ও সমর্থন নেই। ৩০ লাখ শহীদের রক্ত ও ২ লাখ নির্যাতিত মা-বোনের ত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতা আজ নতজানু নীতি গ্রহণ করেছে। দেশে আজ গণতন্ত্র ও আইনের শাসনের পরিবর্তে দুর্নীতি-দুঃশাসনের স্বর্গরাজ্য গড়ে উঠেছে। জনগণের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। সামনে অগ্রসর হওয়া ছাড়া জনগণের আর কোনো বিকল্প নেই।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন গণফোরামের আহবায়ক কমিটির সদস্য আ ও ম শফিকুল্লাহ, অ্যাডভোকেট জানে আলম, অ্যাডভোকেট সুরাইয়া খান, মোস্তাক আহমেদ প্রমুখ।
এএইচআর/আরএইচ/এমএমজে