প্রেসক্লাবের সামনে সমাবেশ করতে কে কবে অনুমতি নিয়েছে
প্রেসক্লাবের সামনে সভা-সমাবেশ করতে কে, কবে অনুমতি নিয়েছে বলে প্রশ্ন রেখেছেন বিএনপি মহাসচিব মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। রোববার (২৮ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে দলীয় চেয়ারপারসনের গুলশানের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নে তিনি পাল্টা এ প্রশ্ন করেন।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, আপনারা এতদিন ধরে সাংবাদিকতা করেন। এতদিন পর জিজ্ঞেস করছেন অনুমতির কথা। প্রেসক্লাবের সামনে কে, কবে অনুমতি নেয়? প্রেসক্লাবের সামনে অনুমতি নিয়ে সভা করতে হয়? যখন অনুমতি নেওয়ার দরকার, তখন তো নিচ্ছিই।
তিনি বলেন, সোহরাওয়ার্দীতে মিটিং করতে গেলে পুলিশসহ সব পক্ষের অনুমতি নিই। আগে হোটেল লেকশোরে অনুষ্ঠান করার জন্য অনুমতি লাগতো না। এখন পুলিশ লেকশোরকে চিঠি দিয়েছে, এখানে অনুষ্ঠান করতে হলে অনুমতি নিতে হবে, এখন আমরা নিচ্ছি।
মির্জা ফখরুল বলেন, প্রেসক্লাবের সামনে ছাত্রদলের শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ সমাবেশ ছিল। পুলিশ অতর্কিত লাঠিচার্জ করে, টিয়ার গ্যাস ও শর্টগান ব্যবহার করে প্রায় শতাধিক ছাত্রনেতাদের আহত করেছে। আহতদের অনেকে এখনও হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। এরমধ্যে কয়েকজনের অবস্থা সংকটাপন্ন বলে জানতে পেরেছি। এ হামলা থেকে আবারও স্পষ্ট হলো, সরকার মত প্রকাশে স্বাধীনতা দিতে নারাজ। গণতান্ত্রিক অধিকারগুলোকে তারা হরণ করে নিয়েছে। তারা রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে মানুষের অন্যায়ের বিরুদ্ধে মত প্রকাশের স্বাধীনতা চরমভাবে ক্ষুণ্ন করেছে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, হামলার বিষয়টিকে সরকার কিভাবে নেবে, তা আমরা দেখবো। দেখেন সমঝোতার জন্য আমাদের টিম গেছে আইজিপির কাছে। স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী পালন করার জন্য আমাদের সব প্রোগ্রাম তাদেরকে জানিয়েছি, সে অনুযায়ী প্রস্তুতিও গ্রহণ করেছি। আজকের ঘটনার সঙ্গে তো এগুলোর কোনো সম্পর্ক নেই। আজকের ছাত্রদলের প্রোগ্রামে পুলিশ ইচ্ছাকৃতভাবে ঘটনা ঘটিয়েছে। সেক্ষেত্রে সম্পূর্ণ দায়-দায়িত্ব তো তাদের। তার জন্য তারা যদি সুবর্ণ জয়ন্তীতে ব্যবস্থা নেয়, তাহলে এটা একেবারেই গ্রহণযোগ্য হবে না। নিশ্চয়ই তারা সুবর্ণ জয়ন্তীর কর্মসূচি পালনের সুযোগ দেবেন।
ডিজিটাল সিকিউরিটি আইন সবচেয়ে নিকৃষ্ট আইন বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এ আইনের মাধ্যমে সরকার চরমভাবে একনায়কতান্ত্রিক সরকারে পরিণত হয়েছে। তারা জনগণকে নূন্যতম সম্মান করছে না। আমরা আশা করছি, সরকার এ অবস্থা থেকে সরে আসবে। জনগণের অধিকারকে প্রতিষ্ঠা করার সুযোগ সৃষ্টি করবে।
স্থানীয় সরকার নির্বাচনের প্রসঙ্গ টেনে মির্জা ফখরুল বলেন, আজকের নির্বাচনে মূলত সব কেন্দ্র দখল করে নিয়েছে। কিশোরগঞ্জের ভৈরবে, মানিকগঞ্জের সিংগাইরে, চাঁদপুরের শাহরাস্তিতে, চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া, গাজীপুর কালীগঞ্জ, জয়পুরহাট সদর, রাজশাহীর চারাঘাট, ঝিনাইদহের মহেশপুর- সব কেন্দ্র দখল করে নিয়েছে।
গতকাল শনিবার দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সভাপতিত্বে ভার্চুয়াল বৈঠকে মহাসচিব ছাড়া খন্দকার মোশাররফ হোসেন, জমির উদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সেলিমা রহমান ও ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু উপস্থিত ছিলেন। সেই বৈঠকের সিদ্ধান্ত তুলে ধরতেই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
এএইচআর/আরএইচ