খালেদা ও ফখরুলকে শিষ্টাচার শিখতে বললেন তথ্যমন্ত্রী
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আমাদের প্রধানমন্ত্রীর শিষ্টাচার নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন। আমি বলব, খালেদা জিয়া, মির্জা ফখরুল ইসলাম ও বিএনপি নেতাকর্মীরা শিষ্টাচার জানেন না। তাদের শিষ্টাচার শিখতে হবে।
বুধবার (৩১ আগস্ট) বিকেল ৩টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী মিলনায়তনে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে) ১৫ ও ২১ আগস্টের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
তিনি বলেন, আমি ফখরুল সাহেবকে অনুরোধ জানাই দেশের প্রধানমন্ত্রী যখন খালেদা জিয়ার পুত্র কোকোর মৃত্যুতে দেখা করতে গিয়েছিলেন তাকে ঢুকতে না দিয়ে ২০ মিনিট দাঁড় করিয়ে রেখেছিল এটা কি ধরনের শিষ্টাচার? প্রধানমন্ত্রী যখন খালেদা জিয়াকে গণভবনে আমন্ত্রণ জানালো কথা বলার জন্য তখন তিনি যে ভাষায় কথা বলেছেন সেটা কী ধরনের শিষ্টাচার? ২১ আগস্ট তৎকালীন বিরোধী দলের নেত্রী আহত হলেন সংসদে দাঁড়িয়ে খালেদা জিয়া বললেন তাকে কে মারতে যাবে? তিনি সঙ্গে করে গ্রেনেড নিয়ে গিয়েছিলেন। এটা কী ধরনের শিষ্টাচার? মির্জা ফখরুল প্রধানমন্ত্রীর শিষ্টাচারের কথা বলেন, শিষ্টাচার আমাদের শেখাবেন না। শিষ্টাচার খালেদা জিয়া ও আপনাদের শেখা উচিত।
মন্ত্রী বলেন, গুম খুন নিয়ে সংবাদমাধ্যমে অবশ্যই সংবাদ পরিবেশিত হবে কিন্তু তাদের আমি বিনীতভাবে অনুরোধ জানাব দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় মানবাধিকার লঙ্ঘন বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ডের বিচারের পথ বন্ধ করা। ২১ শে আগস্টে গ্রেনেড হামলার মাধ্যমে শেখ হাসিনাকে হত্যার চেষ্টা চালানোর জন্য ২৪ জন নিরীহ মানুষকে হত্যা করা এবং সেই হত্যাকাণ্ড নিয়ে উপহাস করা। ২১ আগস্টের হামলা নিয়ে সংসদে তখনকার বিরোধীদলীয় নেত্রী শেখ হাসিনা সংসদে একটি নিন্দা প্রস্তাব আনার জন্য বলেছিলেন। বেগম খালেদা জিয়া সেটি করতে দেননি। ২৪ জন নিহত হলেন, সংসদের বিরোধী দলীয় নেত্রী আহত হলেন তারপরেও নিন্দা প্রস্তাব আনতে দেননি। এটা কি মানবাধিকার লঙ্ঘন নয়?
মানবাধিকার নিয়ে যারা লেখেন তাদের প্রতি অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন, জিয়াউর রহমান যাদের রাতের অন্ধকারে কোনো বিচার ছাড়া ফাঁসিতে ঝুলিয়ে হত্যা করেছিলেন তাদের পরিবার রাস্তায় রাস্তায় মানববন্ধন করছেন। ফাঁসি দেওয়ার তিন মাস পরে রায় হয়েছিল। বিচারের আগেই ফাঁসি দিয়েছিলেন। এসব হলো সবচেয়ে বড় মানবাধিকার লঙ্ঘন।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ১৫ ও ২১ আগস্টের হত্যাকাণ্ড একই সূত্রে গাঁথা। বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রধান কুশীলব জিয়াউর রহমান এবং ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার প্রধান কুশীলব খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান। ১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে স্বাধীনতাকে হত্যা করতে চেয়েছিল অন্যদিকে ২১ আগস্ট হামলার মাধ্যমে শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগ নেতৃত্বকে হত্যা করে দেশকে তালেবান রাষ্ট্রে পরিণত করতে চেয়েছিল।
তিনি আরও বলেন, আজ বিএনপি যে কত জনের তালিকা নিয়ে কথা বলে। ১০ জন এর মধ্যে ফিরে এসেছে। ২৩-২৪ জন খুনের মামলার আসামি, ডাকাতি মামলার আসামি। এখন দেখা যাচ্ছে, বিএনপি সন্ত্রাসীদের পক্ষ রাস্তায় দাঁড়িয়েছে। তাদের মানবাধিকার নিয়ে কথা বলে। কিছু কিছু হারিয়ে গেছে ২০ বছর আগে বিএনপি ক্ষমতা থাকাকালে। সরকার সেটিকেও এড্রেস করছে।
ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) সভাপতি সোহেল হায়দার চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক আকতার হোসেনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে) এর বর্তমান সভাপতি ওমর ফারুক, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন, বিএফইউজের সাবেক সভাপতি মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল, সাবেক মহাসচিব আব্দুল জলিল ভূঁইয়া, বর্তমান সভাপতি ওমর ফারুক, সাবেক সাধারণ সম্পাদক আজিজুল ইসলাম ভূঁইয়া, সহ-সভাপতি মানিক লাল ঘোষ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক খায়রুল আলম প্রমুখ।
আইবি/এসকেডি