শাহবাগে মশাল মিছিলে পুলিশের লাঠিচার্জ
কাশিমপুর কারাগারে লেখক মুশতাক আহমেদের মৃত্যুর ঘটনায় মশাল মিছিল করেছে প্রগতিশীল ছাত্রজোট। শুক্রবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্য থেকে শুরু হওয়া পূর্বঘোষিত এ মশাল মিছিল শাহবাগের ব্যারিকেড অতিক্রম করলেই পুলিশ লাঠিচার্জ ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে।
মিছিলে অংশ নেওয়া অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন বলে দাবি করেছে প্রগতিশীল ছাত্রজোট। আহত হওয়া কয়েকজন ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ভর্তি আছেন।
আন্দোলনকারীরা আরও দাবি করছে, তিন জনকে আটক করা হয়েছে। জানা গেছে, রাজু ভাস্কর্য থেকে শুরু হওয়া মশাল মিছিলটি শাহবাগ ব্যারিকেড অতিক্রমকালে পুলিশের সঙ্গে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।
এ সময় পুলিশ টিয়ারশেল নিক্ষেপ এবং লাঠিচার্জ করে। আন্দোলনকারীরাও পুলিশকে লক্ষ্য করে মশাল নিক্ষেপ করেন। এরপর পুলিশ ক্ষিপ্ত হয়ে ব্যাপক লাঠিচার্জ এবং কয়েক জনকে আটক করে। এতে আন্দোলনকারীরা পিছু হটতে বাধ্য হয়।
ছাত্রফ্রন্টের ঢাবি শাখার সভাপতি সালমান সিদ্দিকী বলেন, ‘আমরা মশাল মিছিল নিয়ে শাহবাগ যাচ্ছিলাম। পুলিশ ব্যারিকেড দিলে তা সরিয়ে আমরা সায়েন্সল্যাব যেতে চাইলে পুলিশ অতর্কিতভাবে আমাদের ওপর হামলা চালায়। আমাদের তিন নেতাকর্মীকে আটক করেছে। প্রায় ১৫ জন আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি আছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘আগামীকাল সকাল ১১টায় পুলিশি হামলার প্রতিবাদে আমরা ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল করব।’
এ বিষয়ে রমনা থানার ডিসি সাজ্জাদুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, ‘মিছিল নিয়ে তারা শাহবাগ এলে তাদেরকে ঘুরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে পুলিশ। আত্মরক্ষার্থে পুলিশ তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। তখন তারা পেছনে সরে পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট পাটকেল ছোড়ে। আমি নিজেসহ আমাদের ১২-১৪ জন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। তারা (আন্দোলনকারীরা) আহত হয়েছে কি-না জানি না। কিন্তু তাদের ইট পাটকেলে আমরা আহত হয়েছি।’
আটকের বিষয়ে ডিসি বলেন, ‘তাদের দুয়েকজনকে হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। যাচাই-বাছাই করে তারা যদি জড়িত না থাকে, তাহলে ছেড়ে দেওয়া হবে। তাদের নাম ঠিকানা এখন জানানো সম্ভব হচ্ছে না।’
কারাবন্দি লেখক মুশতাক আহমেদ বৃহস্পতিবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) রাত সাড়ে ৮টার দিকে মৃত্যুবরণ করেন। তিনি রাষ্ট্রবিরোধী ষড়যন্ত্রের অভিযোগে র্যাবের করা মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে কাশিমপুর কারাগারে ছিলেন। আজ রাতে এশার নামাজের পর আজিমপুর কবরস্থানে তার মরদেহ দাফন করা হবে বলে জানা গেছে।
তার মৃত্যুর বিষয়টিকে বামপন্থি এ সংগঠনের পক্ষ থেকে হত্যাকাণ্ড বলে উল্লেখ করা হয়েছে। মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ার পর ২৫ ফেব্রুয়ারি রাতেই বিক্ষোভ মিছিল বের করেন তারা। এ মৃত্যুর প্রতিবাদে সরব হয়ে সকাল থেকে রাস্তায় নেমেছিলেন বামপন্থি ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মীরা। সকালে শাহবাগে তারা অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন। কর্মসূচির অংশ হিসেবে সন্ধ্যায় মশাল মিছিল করারও ঘোষণা দিয়ে রাখে প্রগতিশীল ছাত্রজোট। এদিকে, বিকেলে ছাত্র অধিকার পরিষদের পক্ষ থেকে প্রয়াত এ লেখকের গায়েবানা জানাজার আয়োজন করা হয়।
এফআর