দেখি কেমন ব্যাটা তোমরা, হ্যাডম থাকলে মাঠে আইসো : মায়া
কয়েকটি রাজনৈতিক দলের ‘হুমকিধামকি’র কথা উল্লেখ করে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বলেছেন, ‘ওরা বলে আওয়ামী লীগ দৌড়ায়ে জায়গা পাইব না। বঙ্গোপসাগরে ফালায় দিব। আমাদের পিঠের চামড়া নাকি রাখব না। কত বড় কথা? এই মাসটা যাক। সেপ্টেম্বর মাসে আমরা মাঠে নামব। দেখি কেমন ব্যাটা তোমরা। হ্যাডম থাকলে মাঠে আইসো।’
সোমবার (১৫ আগস্ট) ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নগর ভবন প্রাঙ্গণে ‘জাতীয় শোক দিবস-২০২২’ উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে তিনি এসব কথা বলেন।
মায়া বলেন, ‘ষড়যন্ত্র কিন্তু এখনও আছে। এ ষড়যন্ত্র ১৯৭১ সাল থেকে শুরু হয়েছে। একটার পর একটা অঘটন ঘটিয়েছে। ওরা কিন্তু তৎপর। সাপ কিন্তু মরে না যতক্ষণ পর্যন্ত না তাকে পুরোপুরি না মারবেন। লেজে পা দিয়া ছাড়তে নেই। এই সাপকে (ষড়যন্ত্রকারীদের) চিরতরে মারতে হবে। যেন বার বার আর ষড়যন্ত্র করে মানুষ হত্যা করতে না পারে।’
অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস বলেন, ‘খুনি কর্নেল রশিদ আর কর্নেল ফারুক দুজনই ভায়রা ভাই। তারা তাদের স্বীকারোক্তিতে, সংবাদমাধ্যমের কাছে সাক্ষাৎকারে, তারা বার বার উল্লেখ করেছেন যে, দুইজনের (জিয়াউর রহমান ও খন্দকার মোশতাক) সঙ্গে বারবার তারা শলা-পরামর্শ করেছেন, দেখা করেছেন, কথা বলেছেন। মোশতাকের সঙ্গে কুমিল্লার বার্ডে তারা সভা করেছেন। ৭৫ সালের মার্চ মাসে কর্নেল রশিদ গিয়ে বঙ্গবন্ধুকে খুন করার জন্য খুনি জিয়াউর রহমানের সম্মতি চেয়েছেন।’
তিনি বলেন, ‘ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার কাছে সেনাবাহিনীর অধঃস্তন কর্মকর্তা গিয়ে বলেন, আমরা রাষ্ট্রপতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব, আমরা ক্যু করার জন্য প্রস্তুত হচ্ছি। উনি (জিয়া) জবাবে কী বলেছেন? উনি কি সেই অধঃস্তন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছেন? উনি কি সেই অধঃস্তন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মার্শাল ল কোর্টে ব্যবস্থা নিয়েছেন? তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়ে তাকে কারাগারে নিক্ষেপ করার ব্যবস্থা নিয়েছেন? না, তিনি বলেছেন, ‘ইউ গো আহেড’। তোমরা এগিয়ে যাও। তোমরা এগিয়ে যাওয়া মানে -- হ্যাঁ, তোমরা এগিয়ে গিয়ে রাষ্ট্রপতিকে হত্যা করো। তোমরা এগিয়ে গিয়ে ক্যু করো। রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করো। একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা যখন সেনাবাহিনীর অধঃস্তন কোনো কর্মকর্তাকে যখন সম্মতি দেয়, সেটা হলো আদেশ। নির্দেশনা দিয়েছেন তিনি। রাষ্ট্রদ্রোহী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হয়েছেন। খুনের নির্দেশনা দিয়েছেন খুনি জিয়াউর রহমান।’
বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে জিয়াউর রহমান পুরোপুরি অবগত ছিলেন এবং হত্যাকাণ্ডে মদদ দিয়েছেন, সহযোগিতা করেছেন— উল্লেখ করে মেয়র ব্যারিস্টার শেখ তাপস বলেন, ‘মার্চ মাস থেকে আগস্ট মাস পর্যন্ত তিনি পুরো তথ্য নিজে লুকিয়ে রেখেছেন এবং খুনিদের সব রকম সহযোগিতা করেছেন । সেনাবাহিনীর মহড়া করার জন্য, অস্ত্র গোলাবারুদ দেওয়ার জন্য সব রকম সহযোগিতা-সহায়তা করেছেন খুনি জিয়া।’
খুনিরা ১৫ আগস্ট হত্যাকাণ্ডের পরে কোথায় গিয়েছিল— প্রশ্ন রেখে শেখ তাপস বলেন, ‘আবারও গিয়েছে খুনি মোস্তাকের কাছে, বঙ্গভবনে। তাকে নিয়ে রেডিওতে বার্তা দেওয়ার জন্য। আর গিয়েছে খুনি জিয়াউর রহমানের কাছে। যারা প্রথম এ হত্যাকাণ্ডের প্রতিরোধ করার চেষ্টা করেছিলেন। কর্নেল নুরুদ্দীনসহ শাফায়াত জামিলকে সেনাবাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের ধরে জিয়াউর রহমানের কাছে নিয়ে গিয়েছিল। কেন জিয়াউর রহমানের কাছে যাবে তারা? কারণ, তারা তো জিয়াউর রহমানের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে সংশ্লিষ্ট এবং তাদের আস্থার জায়গা হলো খুনি জিয়াউর রহমান।’
আলোচনা সভা শেষে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ ১৫ আগস্ট কালরাতে শাহাদৎ বরণকারী সবার রুহের মাগফেরাত কামনা করে বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত করা হয়।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফরিদ আহাম্মদ, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. হুমায়ুন কবির, ঢাকা-৫ আসনের সংসদ সদস্য কাজী মনিরুল ইসলাম মনু, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কাজী মোর্শেদ হোসেন কামাল প্রমুখ।
এএসএস/আরএইচ