জনগণের আদালতে দাঁড়াতে প্রস্তুত হন : সরকারকে রিজভী
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারকে জনগণের আদালতে দাঁড়ানোর জন্য প্রস্তুত হতে বলেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। মঙ্গলবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ‘শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের রাষ্ট্রীয় খেতাব বাতিলের সিদ্ধান্তের অপচেষ্টার প্রতিবাদে’ আয়োজিত মানববন্ধনে তিনি এমন মন্তব্য করেন।
মানববন্ধনের আয়োজন করে ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব)। সেখানে রিজভী বলেন, আলজাজিরা প্রচারিত খবরের কুকীর্তি ঢাকার জন্য দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তানের খেতাব বাতিলের পাঁয়তারা করা হচ্ছে। এই খেতাব বাতিল হলে আপনি (সরকার) অপমানিত হবেন, জিয়াউর রহমানের কিছু হবে না। জিয়াউর রহমান সুপ্রতিষ্ঠিত বীর মুক্তিযোদ্ধা। নিজের কমান্ডারকে হত্যা করে স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে দেশ ও জাতিকে স্বাধীনতা যুদ্ধ করতে অনুপ্রেরণা দিয়েছেন। আপনি সেই লোকটিকে অপমান করবেন? করতে পারেন কিন্তু তাতে তার (জিয়াউর রহমান) কিছু যায় আসে না।’
‘জনগণ আপনাদের মনে রাখবে। জনগণ সেই প্রস্তুতি নিচ্ছে। জনগণের আদালত সবচেয়ে বড় আদালত। সেই আদালতের প্রধান বিচারপতি জনগণ। আমি আওয়ামী লীগ ক্ষমতাসীনদের বলতে চাই, জনগণের আদালতের সামনে আপনাদের দাঁড়াতে হবে, প্রস্তুত হন।’
বাংলাদেশে গণতন্ত্র নাই— মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে অনেক তন্ত্র আছে। হাসিনাতন্ত্র আছে, মিথ্যাতন্ত্র, লুটপাটতন্ত্র, ব্যাংক লোপাটের তন্ত্র, জাতীয় অর্থনীতি লুটপাটের তন্ত্র। শুধু একটি তন্ত্র নেই, সেটি হচ্ছে গণতন্ত্র। এই গণতন্ত্রের জন্য আজকের লড়াই। এই গণতন্ত্র নেই বলেই গণতন্ত্রের প্রতীক বেগম খালেদা জিয়া বন্দী। দেশের শ্রেষ্ঠ মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমানের মুক্তিযুদ্ধের খেতাব কেড়ে নেওয়ার ষড়যন্ত্র চলছে।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘গোপনে, অন্ধকারে কত অনাচার করছে সরকার। কত ধরনের অপকীর্তি করছে, কত ধরনের অন্যায় করছে। এসব করে মাফিয়াতন্ত্র কায়েম করেছে। কথা বলার স্বাধীনতা হত্যা করে, গণতন্ত্র হত্যা করে, খবরের কাগজে পড়া স্বাধীনতা হত্যা করে, মাফিয়াদের দিয়ে দেশ চালানো হচ্ছে। মাফিয়াদের দিয়ে যারা দেশ চালায় তারা নিজেই মাফিয়া।’
তিনি বলেন, ‘স্বর্ণাক্ষরে জিয়াউর রহমানের নাম লেখা রয়েছে। আলজাজিরার সংবাদ থেকে দৃষ্টি অন্যদিকে সরানোর জন্য জিয়াউর রহমানের খেতাব বাতিলের পাঁয়তারা করা হচ্ছে। তারেক রহমানের বিরুদ্ধে সাজা দিয়েছেন, বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়েছে। এখানে কিন্তু অন্য কোনো কারণ নেই।’
‘সাংবাদিক মুজাক্কিরের (বুরহান উদ্দিন মুজাক্কির) হত্যার দায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার’ মন্তব্য করে তিনি আরও বলেন, ‘আজ নোয়াখালীতে, ওবায়দুল কাদের নোয়াখালীতে দুটি গ্রুপ তৈরি করে রেখেছেন। সেখানে তার ভাই মির্জা কাদেরের আন্দোলনে নিরীহ সাংবাদিক মুজাক্কিরকে প্রাণ দিতে হলো। ওই হত্যাকাণ্ডের দায় প্রধানমন্ত্রীর। ওই হত্যার দায় ওবায়দুল কাদেরের। তবুও তাদের কোনো অনুশোচনা নেই। সমস্ত লজ্জা-শরম ধুয়ে-মুছে নিচে ফেলে দিয়েছে।’
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রিজভী বলেন, দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তানদের খেতাব কেড়ে নিলে দেশের সম্মানই ভূলুণ্ঠিত হয়। রণাঙ্গনের মুক্তিযোদ্ধা অবসরপ্রাপ্ত মেজর হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বীর বিক্রম বলেছেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় ৮০ মুক্তিযোদ্ধা লড়াই করেছেন। অথচ আওয়ামী লীগ তালিকা করছে আড়াই লাখ।
ড্যাবের সভাপতি অধ্যাপক ডা. হারুন আল রশিদের সভাপতিত্বে ও মহাসচিব অধ্যাপক ডা. আবদুস সালামের পরিচালনায় আলোচনায় আরও অংশগ্রহণ করেন ড্যাবের সহসভাপতি ডা. সিরাজুল ইসলাম, কোষাধ্যক্ষ ডা. জহিরুল ইসলাম শাকিল, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব ডা. মেহেদী হাসান, যুগ্ম মহাসচিব ডা. শাহ মুহাম্মদ আমান উল্লাহ, ডা. এরফানুল হক সিদ্দিকী প্রমুখ।
এমএইচএন/এমএআর