ব্রিটিশ রানির ‘এমবিই’ পদক গ্রহণ করলেন শেহরিন
ব্রিটিশ রানির ‘মেম্বার অব দ্য মোস্ট এক্সিলেন্ট অর্ডার অব দ্য ব্রিটিশ এম্পায়ার (এমবিই)’ খেতাব খচিত পদক গ্রহণ করলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের ঘনিষ্ঠ সহচর, বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শহীদ ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলীর দৌহিত্র ও আওয়ামী লীগের সাবেক প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. মো. সেলিমের ছেলে শেহরিন সেলিম রিপন।
চলতি বছরের জানুয়ারিতে ঘোষিত এই খেতাবের পদক ১২ জুলাই ব্রিটিশ স্ত্রী ফারহানা সেলিমকে নিয়ে ব্রিটিশ রাজপ্রাসাদ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে গ্রহণ করেন। রাজপরিবারের সদস্য প্রিন্স উইলিয়াম শেহরিনের হাতে এ পদক তুলে দেন।
লন্ডনে কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়ার পর কর্মহীন হয়ে পড়া মানুষদের সহযোগিতার জন্য শেহরিন শুরু করেছিলেন ‘কর্ম স্বাধীন’ নামে একটি প্রকল্প। এ প্রকল্পের অধীনে তাদের বিভিন্ন প্রশিক্ষণের মাধ্যমে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে দেন তিনি।
এ ছাড়া, বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পের মাধ্যমে পূর্ব লন্ডনের সুবিধাবঞ্চিত পাঁচ সহস্রাধিক মানুষকে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে দিয়েছেন শেহরিন। পূর্ব লন্ডনের সুবিধাবঞ্চিত মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে দীর্ঘ ২০ বছর ধরে কাজ করে আসছেন তিনি। সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদানের জন্য প্রতি বছর ব্রিটেনের রানির জন্মদিন ও নববর্ষে এ খেতাব দেওয়া হয়।
অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে শেহরিন বলেন, এমন অর্জন আমার জন্য অত্যন্ত সৌভাগ্যের। একজন বাংলাদেশি তথা বাঙালির জন্য এটা গৌরবের। আজকের এ দিনে আমি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা জানাই। বাংলাদেশ স্বাধীন না হলে হয়তো বিদেশের মাটিতে আমাদের এভাবে বিচরণ সম্ভব হতো না।
ব্রিটেনের রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের সিংহাসনে আরোহণের প্লাটিনাম জুবিলি বা ৭০ বছর পূর্তি উপলক্ষে যুক্তরাজ্য জুড়ে ছিল নানা আয়োজন। এ আয়োজনের অংশ হিসেবে গত ৪ জুন সেন্ট পল’স ক্যাথেড্রালে রানির রাজত্বের জন্য ঐতিহ্যবাহী ধন্যবাদ জ্ঞাপনের অনুষ্ঠান এবং একটি গিল্ডহল অভ্যর্থনা অনুষ্ঠানে শেহরিন সেলিম রিপন আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে যোগ দেন। বিশ্বের যেকোনো নাগরিকের জন্য এটি সম্মানের।
ওই অনুষ্ঠানে রানি এলিজাবেথ, তার পরিবারের সদস্য প্রিন্স উইলিয়াম ও কেট কেমব্রিজের ডিউক এবং ডাচেস, প্রিন্স হ্যারি ও মেগান সাসেক্সের ডিউক এবং ডাচেস, প্রিন্স চার্লস, ক্যামিলা ডাচেস অব কর্নওয়াল, রাজকুমারী অ্যান, প্রিন্স এডওয়ার্ডসহ নিকটাত্মীয়রা সেখানে উপস্থিত ছিলেন।
এ ছাড়া, প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ার, গর্ডন ব্রাউন, ডেভিড ক্যামেরুন, তেরেসা মে সেখানে উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে যোগ দেন মেয়র অব লন্ডন সাদিক খান, বিরোধীদলীয় নেতা স্যার কিয়ার স্টারমার, স্কটল্যান্ডের ফাস্ট মিনিস্টার নিকোলা স্টার্জন, স্বাস্থ্য সচিব সাজিদ জাভিদ, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী প্রীতি প্যাটেলসহ মন্ত্রী ও এমপিরা উপস্থিত ছিলেন।
প্লাটিনাম জুবিলিতে অংশ নেওয়া প্রসঙ্গে নিজের অনুভূতি ব্যক্ত করতে গিয়ে তিনি বলেছিলেন, রানি গত ৭০ বছর ধরে আমাদের সেবা দিয়ে গেছেন। সেজন্য আমরা তার প্রতি কৃতজ্ঞতা এবং ধন্যবাদ জানাচ্ছি। তার সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করেছি। এই অনুষ্ঠানটি দেশজুড়ে উদযাপন একটি মাইলফলক। সেখানে অংশ নিতে পারা নিঃসন্দেহে আনন্দের।
মোহাম্মদ শেহরিন সেলিম রিপন যুক্তরাজ্যে সর্ব ইউরোপিয়ান বঙ্গবন্ধু পরিষদ ও জাতীয় চার নেতা পরিষদের সহ-সভাপতি, শহীদ ক্যাপ্টেন মনসুর আলী ফাউন্ডেশন বাংলাদেশের সভাপতি এবং মুক্তিযুদ্ধকালীন পত্রিকা সাপ্তাহিক দাবানলের সম্পাদক ও প্রকাশকের দায়িত্ব পালন করছেন।
এইউএ/আরএইচ