খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা বাসায় নেওয়ার মতো হয়নি
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার কিছুটা উন্নতি হলেও বাসায় ফেরার মতো অবস্থা তৈরি হয়নি। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, খালেদা জিয়ার হার্টে রিং পরানোর পর শারীরিক অবস্থার উন্নতি হওয়ায় তাকে সিসিইউ থেকে কেবিনে স্থানান্তর করা হয়েছে। এর মধ্যে তার ওষুধেও কিছুটা পরিবর্তন করা হয়েছে। কিন্তু তার পুরাতন রোগগুলো এখনও উঠা-নামার মধ্যে আছে। সেগুলো একটা স্থিতিশীল অবস্থায় না আসা পর্যন্ত তার বাসায় ফেরা অনিশ্চিত।
বিএনপির চেয়ারপারসনের মিডিয়া উইংয়ের সদস্য শায়রুল কবির খান ঢাকা পোস্টকে বলেন, ম্যাডাম এখনও কেবিনে আছেন। উনাকে কেবিনেই পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। শারীরিক অবস্থা আগের মতোই আছে।
তিনি আরও বলেন, হার্টের সমস্যা নিয়ে ম্যাডাম হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। পরে উনার হার্টে ব্লক ধরা পড়ায় রিং পরানো হয়। বর্তমানে হার্টের অবস্থা কিছুটা ভালো হলেও পুরানো রোগগুলো উঠা-নামার মধ্যে আছে। ম্যাডামের শারীরিক অবস্থা উন্নতি বাসায় ফেরার মতো এখনও হয়নি।
শনিবার (১৯ জুন) খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, ম্যাডাম এখনও কেবিনে পর্যবেক্ষণে আছেন। মেডিকেল বোর্ডের অধীনে উনি চিকিৎসাধীন আছেন।
তিনি আরও বলেন, মেডিকেল বোর্ডের চিকিৎসকরা নিয়মিত বৈঠক করে ম্যাডামের শারীরিক অবস্থা পর্যবেক্ষণ করছেন। দুই দিন আগের ওষুধেও কিছুটা পরিবর্তন আনা হয়েছে। এখন সেই অনুযায়ী চলছে।
বিএনপি সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের অক্টোবর মাসে খালেদা জিয়া হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় তাকে দেখতে লন্ডন থেকে ঢাকায় এসেছিলেন প্রয়াত ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী সৈয়দা শর্মিলা রহমান সিঁথি। তখন এক মাসের বেশি সময় দেশে থেকে নিয়মিত শাশুড়িকে দেখতে হাসপাতালে যাতায়াত করেন। কিন্তু এবার গত এক সপ্তাহ ধরে খালেদা জিয়া হাসপাতালে থাকলেও তাকে দেখতে লন্ডন থেকে নিজ পরিবারের কেউ দেশে আসেনি। তবে ছেলে তারেক রহমান, তার স্ত্রী জোবায়েদা রহমান এবং ছোট ছেলের স্ত্রী শর্মিলা রহমান নিয়মিত চিকিৎসকদের মাধ্যমে খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার খোঁজ নিচ্ছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপির চেয়ারপারসনের ঘনিষ্ঠ একজন ব্যক্তিগত কর্মকর্তা বলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান নিয়মিত মায়ের শারীরিক অবস্থার খোঁজ-খবর নেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও চিকিৎসক ডা. জাহিদ হোসেনের কাছ থেকে। আর তার স্ত্রী ডা. জোবায়েদা রহমান খালেদা জিয়ার মেডিকেল বোর্ডের একজন সদস্যও। তিনি নিয়মিত শাশুড়ির শারীরিক অবস্থার খোঁজ-খবর রাখছেন। এছাড়া ছোট ছেলের স্ত্রী শর্মিলা রহমান গত কয়েক বছর ধরে কয়েক মাস পর পরই দেশে আসেন শাশুড়ি খালেদা জিয়াকে দেখতে। এখনও তিনি শাশুড়ির শারীরিক অবস্থার খোঁজ রাখছেন। এখন ম্যাডামের যে অবস্থা সেটা যদি স্থিতিশীল থাকে হয়ত আগামী কয়েক মাসের মধ্যে আবার দেশে আসবেন।
গত ১০ জুন (শুক্রবার) গভীর রাতে হৃদরোগের সমস্যা নিয়ে বসুন্ধরার এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি হন ৭৬ বছর বয়সী সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। পরে এনজিওগ্রাম করে তার হৃদযন্ত্রে একটি রিং পরানো হয়। যদিও তার হৃৎপিণ্ডে আরও দুটি ব্লক ধরা পড়ার কথাও জানিয়েছিলেন চিকিৎসকরা।
এএইচআর/এসএসএইচ