সীতাকুণ্ডের আহাজারিতে পদ্মা সেতুর গর্জিয়াস অনুষ্ঠান বাতিলের দাবি
সীতাকুণ্ডের ভয়াবহ ধ্বংসযজ্ঞের পরিপ্রেক্ষিতে পদ্মা সেতুর ‘সুপার গর্জিয়াস’ উদ্বোধনী অনুষ্ঠান বাতিল চেয়েছেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সভাপতি আ স ম আবদুর রব। জমকালো এ অনুষ্ঠানের অর্থ দুর্ঘটনায় নিহতদের পরিবার ও আহতদের পুনর্বাসনে বরাদ্দের আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। মঙ্গলবার এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব দাবি জানান।
রব বলেন, সীতাকুণ্ডের আহাজারিতে যখন সমগ্র জাতি মর্মান্তিক বেদনায় শোকার্ত তখন অস্বাভাবিক ব্যয়ে নির্মিত পদ্মা সেতুর উদ্বোধনের নামে জমকালো অনুষ্ঠান হবে দুর্দশাগ্রস্ত জনগণের প্রতি সরকারের চরম নিষ্ঠুরতার বহিঃপ্রকাশ। সরকারকে এই ‘নির্মম পদক্ষেপ’ গ্রহণ থেকে অবশ্যই সরে আসতে হবে।
তিনি বলেন, রাষ্ট্র কখনো ‘সুপার গর্জিয়াস’ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে না বরং সব অনুষ্ঠানই অনাড়ম্বরে সীমিত রাখে। জনগণের সম্পদ অপচয় রোধ করে নিয়ন্ত্রণ করাই সরকারের নৈতিক দায় ও কর্তব্য। ফলে সরকার কোনোক্রমেই অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানের বাইরে বিলাসবহুল কোনো অনুষ্ঠানের আয়োজন করতে পারে না। রাষ্ট্র ব্যক্তি মালিকানাধীন বাণিজ্যিক কোনো প্রতিষ্ঠান নয়।
জেএসডি সভাপতি বলেন, মনে রাখা প্রয়োজন, জমকালো অনুষ্ঠানের মাধ্যমে রাষ্ট্রের কারো দৃষ্টি আকর্ষণের প্রয়োজন পড়ে না। অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানেই রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ মর্যাদা সুরক্ষিত হয়। গর্জিয়াস, আড়ম্বরপূর্ণ, রাজকীয় ইত্যাকার আয়োজন গণপ্রজাতন্ত্রের বৈশিষ্ট্য নয়।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণের সিদ্ধান্ত বিশ্ব দরবারে দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করার পাশাপাশি জাতির আত্মবিশ্বাসও বাড়িয়ে দিয়েছে। তাহলে প্রশ্ন, সুপার গর্জিয়াস অনুষ্ঠান করে আর কী অর্জিত হবে?
রব বলেন, ইলেকট্রনিক মাধ্যমে সারা বিশ্ব যেখানে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান দেখতে পাবে সেখানে জেলায় জেলায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের নামে রোড শো, লেজার শো, আতশবাজির ন্যায় অপচয়ের মহোৎসব বাংলাদেশের কয়েক কোটি মানুষের চরম দরিদ্রতার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। জনগণের সম্পদের মাত্রাতিরিক্ত অপচয় নিশ্চয়ই আত্মতৃপ্তির বিষয় হতে পারে না।
তিনি বলেন, ক্রমবর্ধমান বৈশ্বিক মন্দায় বাংলাদেশের আমদানি, রপ্তানি ও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভসহ বিপর্যস্ত অর্থনৈতিক বাস্তবতায় যেখানে অপ্রয়োজনীয় ও বিলাস পণ্য আমদানিতে কঠোর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা হয়েছে সেখানে উদ্বোধনের নামে ‘সুপার গর্জিয়াস’ ব্যয়বহুল বিলাসী অনুষ্ঠান কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। পদ্মা সেতুর সুপার গর্জিয়াস উদ্বোধনী অনুষ্ঠান অবিলম্বে বাতিল করতে হবে।
এইউএ/ওএফ