ঢাবিতে সংঘর্ষ : অংশ নিয়েছিলেন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতারাও
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) এলাকায় ছাত্রদল-ছাত্রলীগের সংঘর্ষের ঘটনায় ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতাদেরও অংশ নিতে দেখা গেছে। তবে তাদের দাবি, সাধারণ শিক্ষার্থীদের স্বার্থে ও সমর্থনে তারা মাঠে ছিল।
বৃহস্পতিবার (২৬ মে) সরেজমিনে টিএসসি, দোয়েল চত্বর, কার্জন হল, হাইকোর্ট এলাকায় ছাত্রলীগের বেশ কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতাকে মিছিল, স্লোগান ও ছাত্রদল নেতাকর্মীদের ওপর হামলা করতে দেখা যায়।
ছাত্রলীগের একটি অংশের দাবি, আসন্ন সম্মেলনকে ঘিরে নিজেদের কর্ম প্রয়াস দেখাতে সক্রিয়ভাবে আন্দোলনে মাঠে থাকছেন এসব নেতারা।
কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে সহ-সভাপতি তিলোত্তমা শিকদার, রাকিব হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক নাজিম উদ্দিন, বরিকুল ইসলাম বাঁধন, আইন সম্পাদক ফুয়াদ হোসেন শাহাদাত, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সম্পাদক আল আমিন রহমান, মানব সম্পদ উন্নয়ন বিষয়ক সম্পাদক নাহিদ হাসান শাহীনসহ অন্যান্য কেন্দ্রীয় নেতাদের দেখা গেছে।
এদের মধ্যে সহ-সভাপতি তিলোত্তমা শিকদারকে এক ভিডিওতে ছাত্রদলকর্মীকে লাঠি দিয়ে মারতে দেখা গেছে। আরেক সহ-সভাপতি রাকিব হোসেনকে মারধর থেকে উদ্ধার করে এক ছাত্রদলকর্মীকে রিকশায় উঠিয়ে দিতে দেখা যায়।
এছাড়াও ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় ও ঢাবি শাখায় পদায়নের অপেক্ষায় থাকা নেতাদেরও দেখা গেছে। এদের মধ্যে সলিমুল্লাহ মুসলিম হলের মিলন খান, সোহরাব হোসেন, জহুরুল হক হলের আমির হামজা, সূর্যসেন হলের শরিফুল আলম শপুসহ অনেককেই দেখা গেছে। এছাড়াও ঢাবি শাখার বিভিন্ন হলের শীর্ষ নেতাদের দেখা গেছে।
জানতে চাইলে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সম্পাদক আল আমিন রহমান বলেন, ছাত্রলীগের সহনশীলতার রাজনীতির কারণে কয়েকদিন আগে ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক রাজু ভাস্কর্যের মতো জায়গায় দাঁড়িয়ে যেভাবে জননেত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে যে ভাষায় কথা বলেছে এবং ক্যাম্পাসের শান্তিপূর্ণ পরিবেশকে নষ্ট করতে যে হুমকি দিয়েছে তা আমাদের হৃদয়ে আঘাত করেছে।
তিনি বলেন, আমাদের সবসময় আহ্বান থাকবে যারা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মিত শিক্ষার্থী, যারা প্রগতিশীলতার রাজনীতি চর্চা করে তারা রাজনীতি করুক। কাউকে প্রতিক্রিয়াশীল রাজনীতির চর্চা করতে দেব না। ছাত্রদল হোক আর যেই হোক যারা ক্যাম্পাসে বিশৃঙ্খলা করবে ছাত্রলীগের প্রত্যেক নেতাকর্মী এবং সাধারণ শিক্ষার্থীরা তাদেরকে এভাবে প্রতিহত করবে।
আইন সম্পাদক ফুয়াদ হোসেন শাহাদাত বলেন, শুক্রবার বিসিএস পরীক্ষা। যার কারণে ক্যাম্পাসের স্বাভাবিক পরিবেশ বজায় রাখার জন্য আমরা বিশৃঙ্খলা এড়াতে সচেষ্ট থেকেছি। শুধু ছাত্রলীগ নয়, সাধারণ শিক্ষার্থী ও বিসিএস পরীক্ষার্থীরাও এতে স্বপ্রণোদিত হয়ে অংশগ্রহণ করেছে। যাতে ক্যাম্পাসের শান্তিপূর্ণ পরিবেশ ও শিক্ষার পরিবেশ বজায় থাকে।
সাধারণ শিক্ষার্থীদের সমর্থনে ছাত্রলীগ মাঠে ছিল উল্লেখ করে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য সাংবাদিকদের বলেন, ছাত্রদল তার পুরনো ইতিহাসের মতো ফের ক্যাম্পাসকে উত্তপ্ত করতে চাইছে। অতীতের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের অংশ হিসেবে মিছিলের নামে মহড়া দিচ্ছে। তবে সাধারণ শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসকে শান্তিপূর্ণ রাখতে রাস্তায় নেমে এসেছে। তারা সন্ত্রাসীদের প্রতিহত করেছে। তাদের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করেছে ছাত্রলীগ।
বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে পূর্বঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে ছাত্রদল হাইকোর্ট এলাকা দিয়ে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে চাইলে ছাত্রলীগের বাধার মুখে পড়ে। পরে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে দুপক্ষই। চেষ্টা করেও ক্যাম্পাসে ঢুকতে না পেরে হামলার মুখে পিছু হটে ছাত্রদল। এতে অন্তত ৪৭ নেতাকর্মী আহত হয়েছেন যাদের মধ্যে পাঁচজনের অবস্থা গুরুতর বলে দাবি ছাত্রদলের। তবে এ ঘটনায় ছাত্রলীগের কেউ হতাহত হয়নি বলে জানা যায়।
এইচআর/ওএফ