বাংলাদেশের সাহিত্য : পঞ্চাশ পেরিয়ে
ফিরে দেখার একটা আনন্দ আছে; কখনো কখনো এমন উপলক্ষ আসে যখন ফিরে দেখতে ইচ্ছে করে। অতীতের দিকে চোখ ফেরানোর মুহূর্ত হিসেবে পঞ্চাশ বছর বা অর্ধশতক খুব কম কিছু নয়। পঞ্চাশ বছরের প্রস্তুতিতে ঘটে যেতে পারে বিপ্লব অথবা জাগরণ। বাংলাদেশ অতিক্রম করেছে স্বাধীনতা ও বিজয়ের অর্ধশতক।
উদযাপনের এই মৌসুমে আমরা ফিরে দেখতেই পারি বাংলাদেশের সাহিত্যের প্রেক্ষাপট। কোনো বিশ্লেষণাত্মক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে এ লেখায় আমার বক্তব্য হাজির করছি না, বরং শনাক্তযোগ্য কিছু প্রবণতার রূপরেখা উপস্থাপন করছি মাত্র। তার আগে চিহ্নিত করতে চাই ‘বাংলাদেশের সাহিত্য’-এই অভিধার সংজ্ঞায়নের সমস্যাকে।
দীর্ঘ পঞ্চাশ বছর জুড়ে বাংলাদেশের সাহিত্যকে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে জাতীয়তাবাদী দৃষ্টিকোণ থেকে। বাঙালির জাতীয় মুক্তিসংগ্রামের ইতিহাস ও তাত্ত্বিক পটভূমিতে কেবলই পূর্ব বাংলার বাঙালিকে সম্পৃক্ত করে নির্মিত হয়েছে বাংলাদেশের সাহিত্যের বয়ান। এ কারণে বাঙালির বাংলা ভাষাকেন্দ্রিক সৃষ্টশীলতাকে মূল উপাদান হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছে। এই দৃষ্টিকোণের সমস্যা এই যে, বাংলাদেশের বহুভাষিক, বহুসাংস্কৃতিক ও বহুজাতিক বাস্তবতা এখানে হারিয়ে যায়। কেননা বাংলাদেশ কেবল বাঙালির রাষ্ট্র নয়; অপরাপর অনেক ভাষাভাষী জাতি ও জনগোষ্ঠী বহু বছর ধরে এদেশে বসবাস করছে; অপর ভাষার সৃষ্টিশীলতা বাংলাদেশের সাহিত্য স্বাগত জানায়নি।
আরও পড়ুন : হেলাল হাফিজের রাজনৈতিক পাঠ
এদেশের গুরুত্বপূর্ণ লেখক, সাহিত্য সমালোচক ও গবেষক সাংস্কৃতিক জাতীয়তাবাদের বাঙালি কেন্দ্রিকতায় কোনো সমস্যা খুঁজে পাননি। এ কারণে বাংলাদেশের সাহিত্য বিষয়ক ইতিহাস ও সমালোচনা পুস্তকগুলো মূলত জাতীয়তাবাদী চিন্তা কাঠামোতে রচিত। এই চিন্তা ও রচনাপদ্ধতি সমস্যাজনক; এর উৎসে আছে বাংলাদেশের জাতীয়তাবাদী রাজনীতি ও রাষ্ট্রনীতি।
দেশের সংবিধানে বাঙালি জাতিকেই মহিমান্বিত করা হয়েছে। অন্য জাতির ভাষিক অস্তিত্ব ও অংশগ্রহণ সম্পর্কে সংবিধান নীরব। বাংলাদেশের সাহিত্যের ইতিহাস রচয়িতারা এই দৃষ্টিভঙ্গিকে প্রশ্নহীনভাবে গ্রহণ করেছেন। এদেশের সাহিত্যের পঞ্চাশ বছরের অর্জন সম্পর্কিত আলাপে তাই সংজ্ঞায়নের সীমাবদ্ধতার কথা মনে রাখা জরুরি।
সত্তর ও আশির দশককে বলা যায় বাংলাদেশের সাহিত্যের আত্মবিচারের কাল। ততদিনে রাজনীতির মঞ্চে হাজির হয়েছে রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড, সামরিকায়ন ও নব্য-সাম্প্রদায়িকতা।
এবার বাংলাদেশের সাহিত্যে বড় ধরনের কয়েকটি বাঁক ফেরার মুহূর্ত চিহ্নিত করা যাক। মুক্তিযুদ্ধের পরপর বাংলাদেশের সাহিত্য ও সংস্কৃতিতে দেশজ ভূমিকা বিশ্লেষণ ও প্রয়োগের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছিল। আহমদ ছফা, মোহাম্মদ রফিক, সেলিম আল দীন ইউরোপীয় আধুনিকতার মোকাবিলায় তৎপর হয়েছিলেন। এ ধরনের দৃষ্টিভঙ্গির সমধর্মী চিন্তা পাওয়া যাবে রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহর লেখায়। এমন নয় যে, তারা সম্মিলিতভাবে সাংগঠনিক তৎপরতা আরম্ভ করেছিলেন; কিংবা তাদের কাজকে সরাসরি বিউপনিবেশী (Decolonization) প্রক্রিয়া বলে চিহ্নিত করা যাবে। যেমনটা দেখা যায়, আফ্রিকার পটভূমিতে নগুগি ওয়াথিওঙ্গো (Ngũg wa Thiong'o)-এর কাজের মধ্যে।
সত্তর ও আশির দশককে বলা যায় বাংলাদেশের সাহিত্যের আত্মবিচারের কাল। ততদিনে রাজনীতির মঞ্চে হাজির হয়েছে রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড, সামরিকায়ন ও নব্য-সাম্প্রদায়িকতা। অসাম্প্রদায়িকতা ও গণতান্ত্রিক চেতনার অবলুপ্তি সত্তর ও আশির দশকের কবি লেখকদের উদ্দীপিত করেছে প্রতিরোধী চৈতন্য। এর সমান্তরালেই বাংলাদেশের চাকমা, ত্রিপুরা, মণিপুরি ভাষার কবিতায় যুক্ত হয়েছিল জাতীয় পরিচয়ের অনুভূতি।
যদিও সাহিত্যের কলাকৌশলগত অভিনবত্ব এ দশকে দৃষ্টিগ্রাহ্যভাবে কম। কিন্তু দেশ, অঞ্চল ও জনতাকে বোঝার সম্মিলিত প্রয়াস ছিল এ দশকের সৃষ্টিশীলতায়। কবিতার শ্লোগান মুখরতা নিঃসন্দেহে তারই অংশ।
বাংলাদেশের সাহিত্যে লৈঙ্গিক রাজনীতি এক গুরুত্বপূর্ণ প্রসঙ্গ। নব্বইয়ের দশকেই ঘটেছে এর ব্যাপক বিস্তার। রোকেয়া কিংবা সুফিয়া কামালের উদার মানবিকতাবাদী নারী চিন্তার বদলে এলো র্যাডিক্যাল নারীবাদ।
আশির দশকের সৃষ্টিশীল ও তাত্ত্বিক তৎপরতা পরবর্তীকালে অন্য একটি বাঁকের দিকে এগিয়ে গেছে। সেটি হলো উত্তর আধুনিক ও উত্তর ঔপনিবেশিক চিন্তা অবলম্বনে গড়ে ওঠা ছোটকাগজ কেন্দ্রিক আন্দোলন।
নব্বই দশকের সাহিত্যে সবচেয়ে সরব হয়ে উঠেছিল এই আন্দোলন। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রকাশিত ছোটকাগজগুলোতে লেখকরা নানা ধরনের ইশতেহার প্রকাশ করে নন্দনতত্ত্বের দৈশিকতা ও বৈশ্বিকতাকে বুঝতে চাইলেন। ছোটকাগজের ইতিহাসে একসারি উজ্জ্বল নাম—একবিংশ, গাণ্ডীব, অনিন্দ্য, নিসর্গ, দ্রষ্টব্য, লিরিক, নিরন্তর, উচক্রা, শব্দপাঠ, শব্দশৈলী, সহজিয়া ইত্যাদি।
আরও পড়ুন : রূপসী বাংলার ক্ষত ও জীবনানন্দ দাশ
পুঁজিবাদ, পণ্যায়ন ও প্রতিষ্ঠানের বিরোধিতা সূত্রে ছোটকাগজ আন্দোলন তরুণ লেখকদের মনে স্থায়ী একটি প্রভাব ফেলতে সক্ষম হয়েছিল। আর কে না জানে, সাহিত্যের আধার ও আধেয় কেন্দ্রিক নিরীক্ষায় ছোটকাগজ বরাবরই অপ্রথাগত। এর দৃষ্টান্ত মিলবে নব্বই দশকের কবিতা, কথাসাহিত্য ও নাটকে। শহীদুল জহিরের ছোটগল্প ও উপন্যাসকে ফেলতে হবে এই সারিতেই। তিনি প্রধানত ছোটকাগজের লেখক। বাস্তব ও অবাস্তবের কুহক মিশিয়ে গল্প বলার জাদুতে পাঠককে মগ্ন রেখে নিয়ে গিয়েছেন বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে।
বাংলাদেশের সাহিত্যে লৈঙ্গিক রাজনীতি এক গুরুত্বপূর্ণ প্রসঙ্গ। নব্বইয়ের দশকেই ঘটেছে এর ব্যাপক বিস্তার। রোকেয়া কিংবা সুফিয়া কামালের উদার মানবিকতাবাদী নারী চিন্তার বদলে এলো র্যাডিক্যাল নারীবাদ।
ফরহাদ মজহার, হুমায়ুন আজাদ, ফরিদা আখতার, তসলিমা নাসরিন, নাসরীন জাহান, আকিমুন রহমান, শাহনাজ মুন্নীর লেখায় নারীবাদ, নারী-পুরুষের অসমতা ও পুরুষাধিপত্য চমৎকার তাৎপর্যে পরিবেশিত হয়েছে। কারো কারো লেখায় প্রোপাগান্ডা বা প্রচারণা প্রাধান্য পেলেও সামগ্রিকভাবে অভিনব চিন্তা জুগিয়েছে।
নিম্নবর্গের রাজনীতি ও সংস্কৃতির উপস্থাপনা বিশেষ একটি প্রবণতা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ সারিতে প্রথমেই উচ্চারিত হতে পারে আখতারুজ্জামান ইলিয়াসের নাম। সমান্তরালভাবে আলোচনা যোগ্য শওকত আলী, কায়েস আহমদ, সেলিনা হোসেন, মঞ্জু সরকারের প্রসঙ্গ।
বাংলাদেশের পঞ্চাশ বছরের সাহিত্যে হুমায়ূন এক বিরাট বিস্ময়। গল্প বলার অসাধারণ ক্ষমতা তার ছিল। রম্য, রহস্য, কল্পবিজ্ঞান, ইতিহাস, সমকাল তার রচনার বিষয়।
ইলিয়াসের দুই চরিত্র হাড্ডি খিজির ও তমিজ নিম্নবর্গের রাজনৈতিক সক্রিয়তার দারুণ নিদর্শন হয়ে আছে। বাংলা উপন্যাসের ইতিহাসে খোয়াবনামা (১৯৯৬) ক্লাসিক উপন্যাস হিসেবে জায়গা করে নিয়েছে বলেই ধরে নেওয়া যায়। বাঙালির জাতিগত ইতিহাস অনুসন্ধানের সুযোগ তৈরি করে দিয়েছে শওকত আলীর ‘প্রদোষে প্রাকৃতজন (১৯৮৪)’। নিম্নবর্গের ভাব, চিন্তা ও সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য ধরতে চেয়েছেন শাহাদুজ্জামান, প্রশান্ত মৃধা, অদিতি ফাল্গুনী।
বাংলাদেশের সাহিত্যে ভাষা বিতর্ক খুব কমই হয়েছে। তবে চোখে পড়ার মতো আলাপ-আলোচনা দেখা দিয়েছে নব্বইয়ের শেষ প্রান্তে। তর্কটি আদর্শ নির্ধারণের নয়; বরং আদর্শ ভাঙার। বাংলাদেশের সাহিত্য ও সংস্কৃতিতে প্রমিত কেন্দ্রিক আভিজাত্য গড়ে উঠেছিল। কিন্তু প্রমিত কখনোই মানুষের আবেগ ও অনুভূতির মৌলিক ভাষা নয়। আর তাই সাহিত্যের ভাষা হিসেবে প্রমিত বাংলা ও আঞ্চলিক বাংলা বিষয়ক বিতর্ক তৈরি হয়েছিল।
আরও পড়ুন : রবীন্দ্র ভাবনায় তারুণ্য
টেলিভিশন নাটকে আঞ্চলিক বাংলার প্রয়োগ চলবে কি চলবে না, তা নিয়েও জমে উঠেছিল তর্কের পাহাড়। আখতারুজ্জামান ইলিয়াস, শহীদুল জহিরের লেখায় স্ল্যাঙের প্রয়োগ দেখে অনেকে তুমুল বিরক্তি প্রকাশ করেছেন। মান ভাষার সীমানা ভেঙে কবিতায় ঢুকে পড়েছেন ব্রাত্য রাইসু, মুজিব ইরম, শামীম রেজা এবং প্রত্যেকেই স্বাতন্ত্র্যসূচক অবস্থান তৈরি করতে সক্ষম হয়েছেন।
একুশ শতকের দুটো দশক জুড়ে বাংলাদেশ ব্যাপকভাবে রূপান্তরিত হয়েছে। প্রযুক্তি ও সংস্কৃতির বিশ্বায়ন সাহিত্যকেও প্রভাবিত করেছে। সবচেয়ে লক্ষ্যযোগ্য দিক হলো, ছোটকাগজের মৃত্যু। স্বপ্ন ও সম্ভাবনা নিয়ে ছোটকাগজের যে উত্থান দেখা গিয়েছিল তা শায়িত হয়েছে কফিন শয্যায়।
ব্লগের রাজত্বে ছোটকাগজ হারিয়ে গিয়ে প্রযুক্তি বাজারে এসেছে ওয়েবজিন; ছোটকাগজের এখানে কোনো ইশতেহার নেই। লেখাও যেন ক্রমশ ছোট হতে চলেছে। কয়েক পঙ্ক্তির কবিতা, অণুগল্প রচনার দিকে লেখক ও পাঠকের মনোযোগ বেড়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম হয়ে উঠেছে মানুষের দৈনন্দিন সৃষ্টিশীলতা প্রকাশের প্রধান উপায়।
বাংলাদেশে জনপ্রিয়তাকে খানিকটা আড়চোখে দেখা হলেও জনপ্রিয় সাহিত্যকে উপেক্ষা করার সুযোগ নেই। হুমায়ূন আহমেদ জনপ্রিয়তার যে সুউচ্চ সৌধ গড়ে গেছেন সেটি খুব সহজেই ভেঙে পড়বে বলে মনে হয় না।
বাংলাদেশের পঞ্চাশ বছরের সাহিত্যে হুমায়ূন এক বিরাট বিস্ময়। গল্প বলার অসাধারণ ক্ষমতা তার ছিল। রম্য, রহস্য, কল্পবিজ্ঞান, ইতিহাস, সমকাল তার রচনার বিষয়। বিচিত্র কৌশল ও বিষয়ের সমাবেশ এক লেখকের ভেতর পাওয়া দুর্লভ ঘটনা। তাই তার জনপ্রিয়তার মিথ ও বাস্তবতাকে কেউ কেউ নতুন করে খুঁড়ে দেখতে উদ্যোগী হয়েছেন।
আরও পড়ুন : মাসুদ রানা ও কাজী আনোয়ার হোসেন
প্রকৃতপক্ষে বাংলাদেশের সাহিত্য সমালোচনা প্রাপ্তবয়স্ক হয়ে উঠেছে। দীর্ঘ কাল সমালোচনার রীতি ছিল তালিকা প্রবণ। কোনো চিন্তা ও তত্ত্ব দৃষ্টির আলোকে সাহিত্য পাঠ করার ঐতিহ্য গড়ে ওঠেনি। কবি লেখকদের উদ্ধৃতি সংকলন ছিল সমালোচকদের প্রধান কাজ।
আবদুল মান্নান সৈয়দ, হুমায়ুন আজাদের সমালোচনায় এই ধরন চোখে পড়ে। কিন্তু হাল আমলে সলিমুল্লাহ খান, সুমন রহমান, মোহাম্মদ আজম, কুদরত-ই-হুদা, সোহেল হাসান গালিব, জগলুল আসাদ সাহিত্যের রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও সমাজতাত্ত্বিক পাঠ গড়ে তুলেছেন। এ পর্যন্ত যা কিছু বলা হলো, তা মুখ্যত বাংলা ভাষাকেন্দ্রিক। আর তাই গোড়ার প্রশ্নটিতে ফিরে যাচ্ছি আবার।
বাংলাদেশের সাহিত্যের পঞ্চাশ বছরের ইতিহাস ও অর্জন মানে কি কেবলই বাংলাদেশের বাংলা ভাষায় রচিত সাহিত্যের বৃত্তান্ত? মূলত তা নয়। কারণ সুহৃদ চাকমা লিখেছিলেন ‘বার্গী’র মতো কবিতার বই। কবিতা চাকমার হাতে রচিত হয়েছিল ‘জ্বলি উধিম কিত্তে’র (জ্বলে উঠব না কেন) মতো চিরায়ত উক্তি।
উর্দু কবিতায় আছেন আহমেদ ইলিয়াস, নওশাদ নূরী, ওয়ালিউল হামিদ আজিজ। বিষ্ণুপ্রিয়া মণিপুরি এবং বাংলা ভাষার কবি ও নাট্যকার শুভাশিস সিনহাকে বিশেষভাবে মনে রাখতে হবে। ইংরেজি ভাষায় লিখছেন কায়সার হক, শফিকুল ইসলাম ও সফিউল আজম।
আরও পড়ুন : শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় : অপরাজেয় কথাশিল্পী
বাংলাদেশের অপরাপর ভাষার সাহিত্যিক সক্রিয়তাকে বাদ দিয়ে রচিত হতে পারে না বাংলাদেশের সাহিত্যের ইতিহাস। বাংলাদেশের সাহিত্যকে নতুনভাবে শনাক্ত করতে হবে। মনে রাখা দরকার বাংলাদেশ একটি বহুভাষিক দেশ।
জাতিগত পরিচয়ের মানদণ্ডে বাংলাদেশ সব সময়ই বহুজাতিক। একভাষিকতার বাইরে গিয়ে প্রসারিত চোখে আমাদের তাকাতে হবে চাকমা, মারমা, গারো, সাঁওতাল, মণিপুরি, উর্দু ভাষার সাহিত্যে। একইসঙ্গে একই সঙ্গে আলোচনার পরিকাঠামোতে আনতে হবে ইংরেজি ভাষায় রচিত সাহিত্যকে। হয়তো তখনই রচিত হবে বাংলাদেশের সাহিত্যের সত্যিকার সমবায়ী ইতিহাস। পঞ্চাশ বছরের ইতিহাসের মহাবয়ানকে সাজাতে হবে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বয়ানের সমাবেশে।
সুমন সাজ্জাদ ।। অধ্যাপক, বাংলা বিভাগ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়