ঢাকা কেন অনিরাপদ এবং সব দুর্যোগের মূল কেন্দ্র?
ঢাকা এখন সবচেয়ে জনবহুল শহরের মধ্যে একটি। শহরটি বাংলাদেশের অর্থনৈতিক, সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক কেন্দ্র হিসেবে বিবেচিত হলেও ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যা, দ্রুত নগরায়ণ, অপরিকল্পিত উন্নয়ন এবং জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব এই শহরকে দুর্যোগের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত করেছে।
দ্য ইকোনমিস্ট ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের ‘সেইফ ইনডেক্স বাই সিটি ২০২৩ (Safety Index by City 2023)’-এর তথ্যমতে, বিশ্বের বসবাস অযোগ্য শহরের তালিকায় ঢাকার অবস্থান দ্বিতীয়। ঢাকা একদিক থেকে যেমন ধীরে ধীরে বসবাসের অনুপযোগী হয়ে পড়ছে, তেমনি হয়ে উঠছে প্রায় সব দুর্যোগের কেন্দ্রস্থল।
ঢাকায় প্রতি বর্গকিলোমিটারে ৪৫ হাজার মানুষের বাস। ম্যাক্রোট্রেন্ডসের মেট্রো এরিয়া র্যাঙ্কিং-২০২৩ অনুযায়ী, ঢাকা পৃথিবীর চতুর্থ ঘনবসতিপূর্ণ শহর। এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)-এর রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০১০ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে বাংলাদেশে অভ্যন্তরীণ বাস্তুচ্যুতির শিকার হয়েছে ১ কোটি ১৪ লাখেরও বেশি মানুষ।
আরও পড়ুন
উপকূলীয় দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্তরা জীবিকার তাগিদে ঢাকায় পাড়ি জমাচ্ছে। আবার বন্যা ও অন্যান্য প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে উপকূলীয় এলাকায় সুপেয় পানি ও জ্বালানি দুষ্প্রাপ্যতার ফলেও এসব এলাকার মানুষ শহরমুখী হয়ে পড়ছে। এত মানুষের চাহিদা নিশ্চিত করতে গিয়ে শহরের দ্রুত এবং অপরিকল্পিত নগরায়ণ হচ্ছে। নাগরিক সুবিধার জন্য পরিকল্পনা ছাড়াই অবকাঠামো নির্মাণ করা হচ্ছে। কানাডার গবেষণা সংস্থা কর্পোরেট নাইটের টেকসই শহরের সূচকে ঢাকার অবস্থান ৭০টি শহরের মধ্যে ৬৩তম।
জনসংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে ঢাকা শহরে গড়ে উঠেছে বস্তি, যার সংখ্যা কমপক্ষে পাঁচ হাজার। সরকারি-বেসরকারি জরিপ থেকে জানা যায়, বস্তিবাসীর সংখ্যা প্রায় ৪০ লাখ। এদের সবাই নিম্ন আয়ের মানুষ, যাদের মধ্যে রয়েছে রিকশাচালক, ভ্যানচালক, ফুটপাতের হকার, ভ্রাম্যমাণ হকার, দিনমজুর ও বিভিন্ন নিম্ন আয়ের শ্রমিক।
ঢাকা একটি ভূমিকম্পপ্রবণ অঞ্চলে অবস্থিত। ভূমিকম্পের সময় ঢাকার এই অপরিকল্পিত ভবনগুলো ধসে পড়ার সম্ভাবনা বেশি এবং এতে প্রাণহানি ও সম্পদের ক্ষয়ক্ষতি হতে পারে।
এদের অধিকাংশই সপরিবারে বস্তির একটি ঘরে থাকেন। সেইখানে সুপেয় পানি, স্যানিটেশনের ব্যবস্থা নেই, বাতাস চলাচলের সুযোগও নেই। তবে অনেক বস্তিতেই বিদ্যুতের ব্যবস্থা আছে। যারা ক্ষমতার জোরে বস্তি স্থাপন করে ঘর ভাড়া দেয়, তারাই বিদ্যুতের অবৈধ সংযোগের ব্যবস্থা করে। এভাবেই প্রায় ৪০ লাখ মানুষ মানবেতর জীবনযাপন করে ঢাকার বস্তিগুলোয়। অস্বাস্থ্যকর বস্তিগুলো পরিবেশ দূষণের অন্যতম কারণ।
ঢাকা একটি ভূমিকম্পপ্রবণ অঞ্চলে অবস্থিত। ভূমিকম্পের সময় ঢাকার এই অপরিকল্পিত ভবনগুলো ধসে পড়ার সম্ভাবনা বেশি এবং এতে প্রাণহানি ও সম্পদের ক্ষয়ক্ষতি হতে পারে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব বিভাগের ভূমিকম্প পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের রিপোর্ট অনুযায়ী, বিগত ৪৮৫ বছরে বাংলাদেশে ৫২টি মৃদু, মাঝারি ও তীব্র মাত্রায় ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল ছিল যার মধ্যে ৬টির কেন্দ্রস্থল ছিল ঢাকা।
তবে এখন ঢাকায় প্রায়শই ভূমিকম্প অনুভূত হচ্ছে। দেশের ভূমিকম্প বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রাজধানীর ১০০ থেকে ২০০ কিলোমিটার দূরে ৭ থেকে ৮ মাত্রার ভূমিকম্প হলে ঢাকায় তীব্র কম্পন অনুভূত হতে পারে, যা এই শহরের দুর্বল ভবনগুলো ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে।
জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ঢাকায় বন্যা ও জলাবদ্ধতার সমস্যা ক্রমাগত বাড়ছে। বৃষ্টির পানি নিষ্কাশনের জন্য পর্যাপ্ত ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় সামান্য বৃষ্টিতেই রাস্তাঘাট প্লাবিত হয়। বিশেষ করে বর্ষাকালে ঢাকার নিচু এলাকাগুলো জলাবদ্ধতায় ভোগে। ঢাকার চারপাশে বুড়িগঙ্গা, শীতলক্ষ্যা, তুরাগ ও বালু নদী এই চারটি নদী থাকার পরও বেপরোয়া নদী দখল, অপ-পরিকল্পনা ও অব্যবস্থাপনার ফলে এমন অসম্ভব দুর্যোগের কবলে নিপতিত আমাদের রাজধানী।
জলবায়ু পরিবর্তনের আরেকটি প্রভাব হলো ঢাকার তাপমাত্রা বৃদ্ধি। গ্রীষ্মকালে তাপপ্রবাহের কারণে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। বিশেষ করে যেসব এলাকায় সবুজ গাছপালা কম, সেইখানে তাপমাত্রা আরও বেশি থাকে। ঢাকার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ১৯৬০ সালের ৩০ এপ্রিল, ৪২.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং পরবর্তীতে ২০১৪ এবং ২০২৩ সালের এপ্রিল মাসে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ৪০.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
আরও পড়ুন
২০২৪ সালেও তার ব্যতিক্রম দেখা যায়নি। পুরো এপ্রিল মাস জুড়েই দেখা মেলেনি বৃষ্টির তার ওপর তাপমাত্রা ছিল ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি, যার প্রভাবে পশুপাখিসহ মানব জীবন হয়ে উঠেছে দুর্বিষহ। বায়ুমণ্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্র (ক্যাপস)-এর গবেষণা থেকে দেখা যায় যে, ২০২৪ সালের সর্বোচ্চ গড় তাপমাত্রা ৪৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয় উত্তরা সেক্টর-১৩ এলাকায় এবং সর্বনিম্ন গড় তাপমাত্রা ৩৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয় নয়াপল্টনে।
তাপমাত্রা বৃদ্ধির জন্য জলবায়ু পরিবর্তন যতটা দায়ী তার চেয়ে অনেক বেশি দায়ী অপরিকল্পিত নগরায়ণ, নগরে বিভিন্ন সংস্থার মধ্যে সমন্বয়ের অভাব ও পরিবেশ ব্যবস্থাপনা। প্রধানত বৈশ্বিক, আঞ্চলিক ও স্থানীয় এই তিনটি কারণে ঢাকা শহরের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাচ্ছে। আবার তাপমাত্রা বৃদ্ধির ফলে শহরে অগ্নিকাণ্ডও বৃদ্ধি পাচ্ছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোয় অর্থাৎ ২০১০-২০২২ সালের মধ্যে যেসব ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে তাদের মধ্যে ২০১০ সালের পুরান ঢাকার নিমতলীর নবাব কাটরায় রাসায়নিক দাহ্য পদার্থের গুদামে থাকা কেমিক্যালের প্লাস্টিক ড্রাম গলে গিয়ে বিস্ফোরণ।
২০১২ সালে ঢাকা মহানগরীর উপকণ্ঠে আশুলিয়ার নিশ্চিন্তপুর এলাকায় অবস্থিত তৈরি পোশাক প্রতিষ্ঠান তাজরীন ফ্যাশনের অগ্নিকাণ্ড, ২০১৭ সালের ৩ জানুয়ারি ভোরবেলা গুলশানের ডিএনসিসি মার্কেটে এবং ১৫ মার্চ দিবাগত রাতে মহাখালীর কড়াইল বস্তিতে লাগা অগ্নিকাণ্ড, ২০১৯ সালে রাজধানীর চকবাজারের চুড়িহাট্টায় ওয়াহেদ ম্যানশনে এবং বনানীর এফআর টাওয়ারে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড, ২০২১ সালে মগবাজারের ওয়্যারলেস গেটের বিস্ফোরণ, ২০২৩ সালের ৭ মার্চ সিদ্দিকবাজারে এবং ৪ এপ্রিল বঙ্গবাজারের ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড এবং ২০২৪ সালের ২৯ ফেব্রুয়ারি বেইলি রোডের গ্রিন কোজি কটেজ ভবনে আগুন লাগার ঘটনা উল্লেখযোগ্য।
ঢাকায় তাপমাত্রার সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে বায়ুদূষণ। ‘ওয়ার্ল্ড এয়ার কোয়ালিটি রিপোর্ট-২০২৩ (2023 World Air Quality Report)’ প্রতিবেদনে দেখা গেছে, বায়ুদূষণে ২০২৩ সালে শীর্ষে ছিল বাংলাদেশ আর নগর হিসেবে বিশ্বে বায়ুদূষণে দ্বিতীয় স্থানে ছিল ঢাকা। বায়ু দূষণের কারণগুলোর মধ্যে প্রাকৃতিক ও আবহাওয়াজনিত কারণ, নগর পরিকল্পনায় ঘাটতি, আইনের দুর্বলতা, আইন প্রয়োগের সীমাবদ্ধতা, ভৌগলিক কারণ এবং জনসংখ্যার ঘনত্ব অন্যতম।
আরও পড়ুন
ক্যাপস (Center for Atmospheric Pollution Studies - CAPS)-এর গবেষণা থেকে পাওয়া যায় যে, রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি ও নির্মাণ কাজ থেকে ৩০ শতাংশ, ইটভাটা ও শিল্প কারখানা থেকে ২৯ শতাংশ, যানবাহন থেকে ১৫ শতাংশ, আন্তঃদেশীয় বায়ু দূষণ থেকে ৯.৫ শতাংশ, গৃহস্থালি ও বা রান্নার চুলার কাজের থেকে ৮.৫ শতাংশ এবং বর্জ্য পোড়ানো থেকে ৮ শতাংশ বায়ু দূষণ ঘটে।
ঢাকার রাস্তায় যানজট সাধারণ মানুষের জীবনের নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ব্যুরো অফ ইকোনমিক রিসার্চের গবেষণা প্রতিবেদন বলছে, বিশ্বের সবচেয়ে ধীরগতির শহর এখন ঢাকা। শহরটির ধীরগতির কারণ হিসেবে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঢাকায় চলাচলে যে সময় লাগে, দ্রুতগতির শহরে একই দূরত্বে চলাচলে সময় লাগে এর তিন ভাগের এক ভাগ।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি)-এর সাম্প্রতিক এক জরিপ প্রতিবেদনের তথ্যমতে, ঢাকাবাসীর প্রতি দুই ঘণ্টার যাত্রাপথে ৪৬ মিনিটই কাটে যানজটে। এতে অতিরিক্ত সময় নষ্ট হচ্ছে এবং কাজে ব্যাঘাত ঘটছে। সার্বিয়াভিত্তিক বৈশ্বিক তথ্যশালা নামবিউর ওয়েবসাইটের তথ্যানুযায়ী, যানজটের সূচকে চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে বিশ্বে ঢাকার অবস্থান ছিল পঞ্চম স্থানে। ঢাকা শহরের রাস্তার এই যানজট একদিকে যেমন বায়ুদূষণের মাত্রা বাড়াচ্ছে, অপরদিকে মাত্রাতিরিক্ত শব্দ দূষণের সৃষ্টি করছে।
তাপমাত্রা বৃদ্ধির জন্য জলবায়ু পরিবর্তন যতটা দায়ী তার চেয়ে অনেক বেশি দায়ী অপরিকল্পিত নগরায়ণ, নগরে বিভিন্ন সংস্থার মধ্যে সমন্বয়ের অভাব ও পরিবেশ ব্যবস্থাপনা। প্রধানত বৈশ্বিক, আঞ্চলিক ও স্থানীয় এই তিনটি কারণে ঢাকা শহরের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
বায়ুদূষণের পাশাপাশি শব্দদূষণ বিপর্যয়ে ভুগছে ঢাকা। সাম্প্রতিক প্রকাশিত জাতিসংঘের পরিবেশ কর্মসূচির (ইউএনএপি) 'ফ্রন্টিয়ারস ২০২২: নয়েজ, ব্লেজেস অ্যান্ড মিসম্যাচেস (Frontiers 2022: Noise, Blazes and Mismatches)' শীর্ষক সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুযায়ী শব্দ দূষণে বিশ্বের শীর্ষ শহর গুলোর তালিকায় রয়েছে আমাদের প্রাণের শহর ঢাকা। কয়েক বছর ধরে ঢাকা শহরের প্রায় সব ব্যস্ত এলাকাতেই শব্দ গ্রহণযোগ্য মাত্রার চেয়ে অনেক বেশি।
বায়ুমণ্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্র (ক্যাপস) এর ২০২২ সালের গবেষণা অনুযায়ী, ঢাকার সচিবালয় এলাকায় শব্দ দূষণ (নিয়ন্ত্রণ) বিধিমালা ২০০৬ অনুযায়ী দিনের বেলার জন্য শব্দের জাতীয় আদর্শ মানের থেকে প্রায় দুইগুণ বেশি শব্দ পাওয়া গিয়েছে, অথচ এসব স্থানে শব্দের মানমাত্রা অন্যান্য এলাকার তুলনায় সবচেয়ে কম থাকার কথা। ক্যাপস-এর গবেষণা থেকে পাওয়া তথ্যে দেখা যায় যে, শব্দদূষণে ১১.৮ শতাংশে ট্রাফিক পুলিশের শ্রবণ শক্তি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অপরদিকে শতকরা ৩৩.৯ ভাগ ট্রাফিক পুলিশের সাথে উচ্চস্বরে কথা না বললে তাদের কথা শুনতে কষ্ট হয়।
ঢাকার জনসংখ্যার ঘনত্ব এবং স্বাস্থ্যসেবার সীমাবদ্ধতার কারণে বিভিন্ন সংক্রামক রোগ এবং মহামারির ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়া এবং সাম্প্রতিক কোভিড-১৯ মহামারি ঢাকায় ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে। হাসপাতাল এবং স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রগুলোর অপর্যাপ্ততা এই সংকট আরও তীব্র করে তুলেছে।
ঢাকায় ধনী ও দরিদ্রের মধ্যে বৈষম্য অত্যন্ত প্রকট। দারিদ্র্য ও অর্থনৈতিক বৈষম্যের কারণে অনেক মানুষ বস্তিতে বসবাস করে। এসব এলাকার মানুষ দুর্যোগের সময় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। নিম্ন আয়ের মানুষের মধ্যে পুষ্টির অভাব একটি সাধারণ সমস্যা। পর্যাপ্ত পুষ্টির অভাবে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাওয়ায় তারা বিভিন্ন রোগের শিকার হচ্ছে।
আরও পড়ুন
ঢাকার স্বাস্থ্যসেবা খাতের অবকাঠামো দুর্বল। জরুরি অবস্থায় দ্রুত ও কার্যকর সেবা না পাওয়ায় মানুষ আরও বেশি নিরাপত্তাহীনতায় ভোগে। সার্বিয়া ভিত্তিক বৈশ্বিক তথ্যশালা নামবিউর ২০২৩ সালের তথ্য অনুসারে, জীবনমান সূচকে ঢাকার অবস্থান শেষ দিক থেকে চতুর্থ এবং স্বাস্থ্যসেবার মানের সূচকে বিশ্বের ২১৫টি শহরের মধ্যে ঢাকার অবস্থান ২১৪।
নানা সমস্যায় জর্জরিত আমাদের ঢাকা নগরী এখন দুর্যোগ কেন্দ্রস্থলে পরিণত হয়েছে। সময়ের সাথে সাথে এই শহরের সমস্যা বেড়েই চলেছে। তবে এসব সমস্যা সমাধানের নানাবিধ পরিকল্পনা থাকলেও তার বাস্তবায়ন দৃষ্টিগোচর হয় না। বৈশ্বিক নেতিবাচক সূচকগুলো আমাদের বোঝাচ্ছে, ঢাকার যে উন্নয়ন হচ্ছে, তা কসমেটিক উন্নয়ন।
তাই এখন সঠিক পরিকল্পনা অনুযায়ী আমাদের কাজ করে যেতে হবে। আমরা যদি সবাই একযোগে সমন্বিতভাবে কাজ করি তাহলে আমাদের এই প্রাণের ঢাকাকে আমরা আবার পূর্বের সেই সবুজ, পরিবেশ দূষণ ও প্রাকৃতিক দুর্যোগমুক্ত ঢাকায় রূপান্তরিত করতে পারবো।
অধ্যাপক ড. আহমদ কামরুজ্জমান মজুমদার ।। ডিন, বিজ্ঞান অনুষদ, স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ; যুগ্ম সম্পাদক, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) এবং পরিচালক, বায়ুমণ্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্র (ক্যাপস)