বুয়েটে ছাত্ররাজনীতি ও তাদের মৌলিক অধিকার প্রসঙ্গে
বুয়েটে ছাত্ররাজনীতি চলবে কিনা তা নিয়ে চলছে আন্দোলন, যার ফলশ্রুতিতে শিক্ষার্থীরা পরীক্ষা বর্জন করেছে। ক্ষমতাসীন দলের সমর্থনপুষ্ট ছাত্রলীগ চাইছে বুয়েটে আবারও পুরোদমে ছাত্ররাজনীতি চালু হোক, আর অন্যদিকে, সাধারণ শিক্ষার্থীদের বড় অংশ চাইছে বুয়েট ছাত্ররাজনীতির বাইরে থাকুক। সব মিলিয়ে ছাত্ররাজনীতি ইস্যুতে বুয়েটে চলছে অচলাবস্থা। সঙ্গতকারণেই, এই ইস্যুতে বুয়েটের ছাত্র-শিক্ষক-অভিভাবক সবাই উৎকণ্ঠিত, দ্বিধাগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন।
বুয়েটে আগে ছাত্ররাজনীতি ছিল না তা কিন্তু নয়। দেশের অন্য দশটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মতো বুয়েটেও ছাত্ররাজনীতি চালু ছিল। তিনদশক আগে আমি যখন বুয়েটে পড়েছি তখনো বুয়েটে ছাত্ররাজনীতি আমি দেখেছি। তারও বহু আগে, একাত্তরের স্বাধীনতা সংগ্রামেও বুয়েটের ছাত্র-শিক্ষক-কর্মচারীবৃন্দ সেই সময়ের রাজনীতিতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখেছিলেন।
যুদ্ধকালে শহীদও হয়েছেন কয়েকজন। তবে, সেই সময়ের রাজনীতি ছিল ভিন্ন ধারার। রাজনৈতিক মত-ভিন্নতা থাকলেও সিনিয়র-জুনিয়রের ভক্তি-ভালোবাসায় তা কখনো সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়নি বা কেউ কারও গায়ে হাত তোলেনি। তাহলে গৌরবোজ্জ্বল এই ছাত্ররাজনীতির ইতিহাস হঠাৎই হোঁচট খেলো কীভাবে?
আরও পড়ুন
৬ অক্টোবর ২০১৯ সালের এক মর্মান্তিক ঘটনা পাল্টে দিলো বুয়েটের ছাত্ররাজনীতির দৃশ্যপট। বিশ্ববিদ্যালয়ের শেরে বাংলা হলের একটি কক্ষ থেকে ১৭ ব্যাচের তড়িৎ প্রকৌশলের শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে ছাত্রলীগের কয়েকজন ডেকে নিয়ে গেলো সন্ধ্যায়। তারপর, রাত দুটো পর্যন্ত তার খোঁজ-খবর নেই। অবশেষে হলের সিঁড়িতে পাওয়া গেল আবরারের লাশ। ঘটে গেলো বুয়েটের ইতিহাসের নৃশংসতম হত্যাকাণ্ড। ছাত্রলীগের দাবি ছিল, আবরার শিবিরকর্মী।
আবরারের মৃত্যু সাধারণ এক বা দুটি গুলিতে হলে হয়তো এভাবে দেশ কাঁপাতো না। তাকে মারা হয়েছে আঘাতের পর আঘাত হেনে। কেবল বুয়েট নয়, এই নির্মম খুনে কেঁপে উঠেছিল সারাদেশ; দেশ বিদেশে ছড়িয়ে থাকা কোটি বাঙালিও সেইদিন কেঁদেছিলেন কিছু পাষণ্ডের হাতে এক মেধাবী তরুণের এমন বেদনাদায়ক মৃত্যু দেখে।
এই কারণে, বুয়েটের শিক্ষার্থীরা কেবল নয়, তাদের অভিভাবকবৃন্দও চরম আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েছিলেন বুয়েটের হলে বসবাসরত শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিয়ে। বুয়েট প্রশাসন ছিল একপ্রকার নির্বিকার। গণমাধ্যম থেকে ধারণা পাওয়া গিয়েছিল, সেই সময়ে প্রকারান্তরে ছাত্রলীগের অঙ্গুলি নির্দেশনায় চলতো হলের প্রশাসন।
বুয়েট সংশ্লিষ্ট নানা মহল থেকে বিভিন্নমুখী তথ্য ছড়িয়ে পড়েছিল মিডিয়ায়। সেইভাবেই আমরা জানতে পারি, অনেকটা নিয়মিতভাবেই নিরপরাধ শিক্ষার্থীদের ওপর ক্ষমতাসীন ছাত্র সংগঠনের অত্যাচার-অনাচার ঘটতো বুয়েটের হলগুলোয়। বিশেষ এক ছাত্রনেতাকে তাৎক্ষণিক চিনতে না পারার মতো তুচ্ছ ঘটনায়ও রডের আঘাতে ক্ষতবিক্ষত হতে হয়েছে সাধারণ শিক্ষার্থীকে।
র্যাগিংয়ের নামে চলেছে বর্বর নির্যাতন। ক্ষমতাসীন দলের রাজনীতিতে না জড়ালে সাজা দেওয়া হতো হলের টর্চার সেলের আদলে সজ্জিত বিশেষ বিশেষ কক্ষে ডেকে নিয়ে, রাতের আঁধারে বা প্রকাশ্য দিবালোকে। দূর থেকে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীদের গোঙানির শব্দ বা কান্নার আওয়াজ শোনা যেত। হল প্রশাসন বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তা শুনেও না শোনার ভান করতে এমন অভিযোগ ভুক্তভোগীদের।
মোটকথা, নৈরাজ্য সব সীমা পরিসীমা ছাড়িয়েছিল বুয়েটে। এসব ঘটনার তদন্ত ও সময়মতো বিচার হলে আবরার ফাহাদকে সেইদিন এমন নির্মমভাবে প্রাণ দিতে হতো না বলে বুয়েট সংশ্লিষ্টরা মনে করেন। দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য, বুয়েটের সেই সময়কার প্রশাসন, বিশেষত ছাত্র কল্যাণ পরিচালকের পরিবর্তন আজও হয়নি, যে দাবি বুয়েটের সাধারণ শিক্ষার্থীদের মুখে মুখে।
শিক্ষার্থীদের ব্যাপক আন্দোলনের মুখে পরবর্তীতে এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডে সংশ্লিষ্ট কয়েক শিক্ষার্থীর বিচার হলেও মূল আসামিদের অনেকেই আজও পলাতক বা অধরা রয়ে গেছে। এছাড়া সাজাপ্রাপ্তদের কেউ কেউ পুনরায় ছাত্রত্ব ফিরে পাওয়ার তোড়জোড়ও চালিয়ে যাচ্ছে বলে জনশ্রুতি আছে।
আবরার হত্যাকাণ্ডের পর এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে বুয়েটের সাধারণ শিক্ষার্থীরা বুয়েট ক্যাম্পাসকে রাজনীতিমুক্ত করার দাবি তুলেছিলেন এবং তাতে একাত্মতা প্রকাশ করেছিলেন শিক্ষকবৃন্দও। সেই থেকে প্রতিষ্ঠানটিতে ছাত্ররাজনীতি কার্যত বন্ধ হয়ে যায়, হাঁফ ছেড়ে বাঁচেন বুয়েটের শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকবৃন্দ।
আরও পড়ুন
ছাত্ররাজনীতি বন্ধ হওয়ার প্রায় সাড়ে চার বছর পর ৩১ মার্চ ২০২৪ হঠাৎই বহিরাগতদের নিয়ে ছাত্রলীগের একটি মিছিল বুয়েটে ঢুকে পড়ে, যা বুয়েট অর্ডিন্যান্সের ১৬তম ধারার সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। এই ধারা অনুযায়ী বুয়েট প্রাঙ্গণে কোনো ধরনের জনসমাবেশ করার আগে ছাত্র কল্যাণ পরিচালকের (ডিএসডব্লিউ) মহোদয়ের পুর্বানুমোদন নেওয়া বাধ্যতামূলক।
মিছিলকারীদের দাবি, বুয়েটে আবারও ছাত্ররাজনীতি চালু করতে হবে অচিরেই। তাদের যুক্তি, ছাত্ররাজনীতি তাদের মৌলিক অধিকার। তারা এও দাবি করে, ছাত্ররাজনীতি বন্ধ করার নামে বুয়েটকে অপরাজনীতি ও জঙ্গিবাদের কারখানায় পরিণত করার চেষ্টা চলছে।
সরকারের প্রভাবশালী কয়েক মন্ত্রীও ছাত্রলীগ নেতাদের সাথে সুর মিলিয়ে বুয়েটে ছাত্ররাজনীতি শুরুর পক্ষে বক্তব্য দেন। এই পরিস্থিতিতে বুয়েটের মাননীয় উপাচার্য ঘোষণা দেন, 'ছাত্র-শিক্ষকবৃন্দ চাইলে বুয়েটে ছাত্ররাজনীতি পুনরায় চালু হবে।' এরপর ছাত্রলীগের এক নেতার রিট আবেদনের প্রেক্ষিতে মহামান্য হাইকোর্ট থেকেও নির্দেশনা আসে বুয়েটে ছাত্ররাজনীতি বন্ধের পূর্বের সিদ্ধান্ত স্থগিতের।
উপাচার্য মহোদয়ের ঘোষণার ভিন্ন অর্থ দাঁড়ায়, শিক্ষক-ছাত্রবৃন্দ না চাইলে বুয়েটে ছাত্ররাজনীতি চলবে না। অর্থাৎ, সংখ্যাগরিষ্ঠ ছাত্র-শিক্ষক ছাত্ররাজনীতি বিষয়ে যে সিদ্ধান্ত দেবেন তাই হবে বুয়েটের সিদ্ধান্ত। এই পরিস্থিতিতে প্রশ্ন জাগে, বুয়েট প্রশাসন ছাত্র-শিক্ষকবৃন্দের জনমত যাচাইয়ের জন্য কোনো ব্যবস্থা আদৌ গ্রহণ করেছেন কি?
বুয়েটের শিক্ষার্থীসংখ্যা যেহেতু হাতেগোনা, মাত্র কয়েক হাজার, তাই অনলাইন ব্যবস্থাপনায় তাদের মতামত গ্রহণে বেশি সময় লাগার কথা নয়। আমার জানামতে, বুয়েট আজও তেমন উদ্যোগ নেয়নি। তবে, বুয়েট প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের একটি বৃহৎ ফেসবুক গ্ৰুপ, 'বুয়েটে আড়িপেতে শোনা,' প্ল্যাটফর্মে ফয়সাল মুস্তফা নামের এক প্রাক্তন বুয়েটি শিক্ষার্থী এই বিষয়ে উন্মুক্ত জরিপ চালিয়েছেন, যেখানে প্রায় পাঁচ হাজার বুয়েট প্রাক্তন শিক্ষার্থী ছাত্র-শিক্ষক তাদের মতামত ব্যক্ত করেন। ভোটদাতাদের নিরানব্বই শতাংশই বুয়েটে ছাত্ররাজনীতি চালুর বিপক্ষে মত দিয়েছেন।
উপরে বর্ণিত জরিপের ফলাফলকে বাস্তব গণ্য করলে সঙ্গতকারণেই জনমত বুয়েটে পুনরায় ছাত্ররাজনীতি শুরু করার পক্ষে যায় না। বরং, এর বিপক্ষেই ছাত্র-শিক্ষকবৃন্দের জোরালো অবস্থান এই জরিপে ফুটে উঠেছে। যার অর্থ দাঁড়ায়, বুয়েটে আবারও ছাত্ররাজনীতি শুরু হলে তা সাধারণ শিক্ষার্থীরা মেনে নেবে না এবং ফলে নতুন নতুন সংঘর্ষের উর্বর ক্ষেত্রে পরিণত হতে পারে দেশের শীর্ষ মেধাবীদের এই বিদ্যাপীঠ। এছাড়া, লক্ষণীয় যে, মাননীয় হাইকোর্টের নির্দেশনার পরও সাধারণ শিক্ষার্থীরা ছাত্ররাজনীতি বন্ধের দাবিতে অনড় রয়েছে।
আরও পড়ুন
উপাচার্য মহোদয় বুয়েটে ছাত্ররাজনীতি পুনরায় শুরু হবে কিনা তা নিয়ে ছাত্র-শিক্ষকবৃন্দের মতামত যাচাইয়ের যে ঘোষণা দিয়েছিলেন সে বিষয়টি মাননীয় হাইকোর্টের বিবেচনায় ছিল কিনা সেই প্রশ্ন সাধারণের মনে জাগতেই পারে। হাইকোর্টের স্থগিতাদেশের বিস্তারিত না জানা গেলেও রিট আবেদনকারী ছাত্রলীগের উক্ত নেতার পক্ষ থেকে শিক্ষার্থীদের মৌলিক অধিকার ক্ষুণ্ন হয়েছে মর্মে অভিযোগ উত্থাপিত হয়েছিল বলে জানা যায়। ছাত্রলীগ নেতাদের দাবি, বুয়েট ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের রাজনীতি চর্চার সুযোগ শিক্ষার্থীদের মৌলিক অধিকার।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, বুয়েটের বাইরেও ইউরোপ ও উত্তর আমেরিকার দুটি নামীদামি বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নের সুযোগ আমার হয়েছে। সেইখানেও শিক্ষার্থীদের ইউনিয়ন বা অ্যাসোসিয়েশন আছে; তবে, রাজনৈতিক দলের মনোনয়নপ্রাপ্ত বা প্রতিনিধিত্ব করে তেমন কোনো লেজুড়বৃত্তিক ছাত্রসংগঠন আমার চোখে পড়েনি।
সত্য হলো, পৃথিবীর উন্নত দেশগুলোর কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলাদেশের মতো রাজনৈতিক দলের সমর্থনপুষ্ট ছাত্রসংগঠনের অস্তিত্ব নেই। সেখানে যে ছাত্রসংগঠন, ইউনিয়ন বা অ্যাসোসিয়েশনগুলো আছে তারা কখনোই কোনো রাজনৈতিক দলের এজেন্ডা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাস্তবায়ন করে না।
বরং, তারা শিক্ষার্থীদের কল্যাণমূলক বিভিন্ন অনুষ্ঠান, লেকচার, শিক্ষার্থীদের জন্য সরকারের ফান্ডিং, আবাসন সমস্যা, নিজেদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে বহির্বিশ্বে তুলে ধরা, স্থানীয় ও জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে তাদের অবস্থান জানানো, ইত্যাদি শিক্ষার্থীবান্ধব কর্মকাণ্ডে মনোনিবেশ করে থাকে।
অপরদিকে, বাংলাদেশে ছাত্ররাজনীতির নামে কী ধরনের কর্মকাণ্ড পরিচালিত হয় তা কমবেশি সবারই জানা। অধিকন্তু, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই বছরের পর বছর একাডেমিক পরীক্ষায় অকৃতকার্য, লেখাপড়ায় অমনোযোগী শিক্ষার্থীরাই থাকে নেতৃত্বের পুরোভাগে। উন্নত দেশের পাশাপাশি আমাদের বন্ধুরাষ্ট্র ভারতেও (ছাত্ররাজনীতির নামে) শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দেশের মূলধারার রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিনিধিত্ব চলমান কিনা সেই বিষয়টি খতিয়ে দেখি।
আইআইটি (ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি) ভারতে বাংলাদেশের বুয়েটের মতোই নামীদামি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান যেখানে সহস্র মেধাবী মুখের ভিড় দেখা যায়। আইআইটি-বম্বে'র এক বিজ্ঞপ্তিতে ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে পরিচালক সুভাষ চৌধুরী এভাবে নির্দেশনা দিয়েছেন—‘...we can express our opinions, especially political ones, outside the campus as individuals without using IIT Bombay’s name.’ অর্থাৎ, ‘আমরা আমাদের রাজনৈতিক মতামত প্রকাশ করতে পারি কেবল আইআইটি-বম্বে ক্যাম্পাসের বাইরে এবং প্রতিষ্ঠানটির সাথে আমাদের নাম না জড়িয়ে।’
মজার ব্যাপার হলো, রাজনৈতিক মত প্রকাশের সীমানা নির্ধারক তার এই দৃঢ় নির্দেশনার স্থগিতাদেশ প্রার্থনা করে সেই প্রতিষ্ঠানের কোনো শিক্ষার্থীকে আমরা ভারতের উচ্চ আদালতের শরণাপন্ন হতে শুনিনি। তবে কি বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ গণতন্ত্রের দেশ ভারতে শিক্ষার্থীদের রাজনৈতিক মত প্রকাশের মৌলিক অধিকার খর্ব করা হচ্ছে? একই প্রশ্ন বিশ্বের উন্নত দেশগুলোর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর ক্ষেত্রেও উত্থাপন করা যায়। এর উত্তর বিজ্ঞ পাঠকই নিজ বিচার-বিবেচনায় খুঁজে নেবেন।
আরও পড়ুন
একইভাবে, জ্ঞানার্জনের ক্ষেত্র, কোন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে, দলীয় রাজনীতিতে আগ্রহী কেউ ছাত্রলীগ, ছাত্রদল, ছাত্রশিবির ইত্যাদি নামে রাজনৈতিক দলের লেজুড়বৃত্তিক অঙ্গসংগঠন খুলে সেইখানে রাজনৈতিক তৎপরতা চালাতে চাইলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কর্তাব্যক্তিবর্গ তাতে বাধা দিতেই পারেন। তবে কি বুয়েটের শিক্ষার্থীরা তাদের রাজনৈতিক মতামত চর্চার মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হবেন? অবশ্যই নয়। তারা তাদের এই মৌলিক অধিকার স্বচ্ছন্দে বুয়েট ক্যাম্পাসের বাইরে প্রয়োগ করতে পারেন, ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরে নয়।
পরিশেষে বলি, ছাত্ররাজনীতি বন্ধে বুয়েটের নিরানব্বই শতাংশ ছাত্র-শিক্ষকের আগ্রহ এবং একইসাথে, আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ডের নির্মম প্রেক্ষাপট তুলে ধরে সংক্ষুব্ধ পক্ষ হিসেবে বুয়েট কর্তৃপক্ষ, শিক্ষার্থী বা তাদের অভিভাবকদের যে কেউ ছাত্ররাজনীতি বন্ধের বিজ্ঞপ্তির স্থগিতাদেশ প্রত্যাহারের বিষয়টি পুনর্বিবেচনার জন্য মাননীয় হাইকোর্টের জরুরি দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পারেন। বুয়েটের অ্যালামনাইদের অন্যতম হিসেবে প্রাণপ্রিয় প্রতিষ্ঠান বুয়েটে শিক্ষার অনুকূল পরিবেশ দ্রুত ফিরে আসুক সেই কামনা করছি।
এম এল গনি ।। কানাডীয় ইমিগ্রেশন কনসালটেন্ট (আরসিআইসি)