সর্বজনীন পেনশন স্কিম : কল্যাণ রাষ্ট্রের পথে বাংলাদেশ
১৭ আগস্ট ২০২৩, বাংলাদেশের ইতিহাসে এক যুগান্তকারী ঘটনা ঘটে গেল। এইদিন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সর্বজনীন পেনশন স্কিমের শুভ উদ্বোধন করেন। যে পেনশন সুবিধা এতদিন শুধু সরকারি বা স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীরা পেতেন, তা এখন সর্বস্তরের জনগোষ্ঠীর মধ্যে সম্প্রসারিত হলো।
সর্বজনীন পেনশন স্কিম প্রবর্তন তাই সময়ের সবচেয়ে আলোচিত ঘটনা যা সরকারের অন্যতম নির্বাচনী অঙ্গীকার–‘টেকসই ও অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন—সমৃদ্ধ বাংলাদেশ’ পূরণে একটি বিশিষ্ট উদ্যোগ হিসেবে দেখা যেতে পারে।
বাংলাদেশ সর্বজনীন পেনশন স্কিম প্রবর্তনের মধ্য দিয়ে একটি কল্যাণ রাষ্ট্রে পরিণত হওয়ার পথে বড় ধাপ অতিক্রম করল। সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা প্রণয়ন বাংলাদেশ সরকারের সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা পূরণের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের দ্বিতীয় ভাগ রাষ্ট্রপরিচালনার মূলনীতির ১৫ নম্বর অনুচ্ছেদে রাষ্ট্রের অন্যতম মৌলিক দায়িত্ব হিসেবে পরিকল্পিত অর্থনৈতিক বিকাশের মাধ্যমে উৎপাদনশক্তির ক্রমবৃদ্ধিসাধন এবং জনগণের জীবনযাত্রার বস্তুগত ও সংস্কৃতিগত মানের দৃঢ় উন্নতিসাধন করার বিষয়টি উল্লিখিত আছে।
সংবিধানের এই অনুচ্ছেদেই জনগণের অধিকার হিসেবে সামাজিক নিরাপত্তার অধিকার, অর্থাৎ বেকারত্ব, ব্যাধি বা পঙ্গুত্বজনিত কিংবা বৈধব্য, মাতাপিতৃহীনতা বা বার্ধক্যজনিত কিংবা অনুরূপ অন্যান্য পরিস্থিতিজনিত কারণে অভাবগ্রস্ততার ক্ষেত্রে সরকারি সাহায্য লাভের অধিকার হিসেবে স্বীকৃত হয়েছে। জনগণের সামাজিক নিরাপত্তা লাভ শুধু সাংবিধানিক অধিকারই নয় জাতিসংঘ কর্তৃক তা মৌলিক মানবাধিকার হিসেবেও স্বীকৃত।
আরও পড়ুন >>> সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা ও কিছু প্রাসঙ্গিক ভাবনা
আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) সমাজের প্রত্যেক সদস্যদের আয়ের নিরাপত্তা প্রদান ও চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করাকে সামাজিক নিরাপত্তা প্রদানের মূল উদ্দেশ্য বলে উল্লেখ করেছে। বাংলাদেশের সংবিধানে বিবৃত জনগণের সামাজিক নিরাপত্তা প্রদান সরকার বিভিন্ন সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচি বাস্তবায়নের মাধ্যমে প্রতিপালন করে আসছে।
এই লক্ষ্যে শিক্ষা উপবৃত্তি, বয়স্ক ভাতা, মাতৃত্বকালীন ভাতা, বিধবা ও স্বামী পরিত্যক্তাদের ভাতা, একটি বাড়ি একটি খামার, আশ্রয়ণ প্রকল্প, কাজের বিনিময়ে খাদ্য কর্মসূচি, অতি দরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থানসহ উল্লেখযোগ্যসংখ্যক সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচি বাস্তবায়িত হচ্ছে।
সামাজিক সুরক্ষার কর্মসূচি কার্যক্রমের উল্লেখযোগ্য প্রভাব পড়েছে দারিদ্র্য হার ক্রমান্বয়ে হ্রাসের মাধ্যমে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো কর্তৃক পরিচালিত খানা আয়-ব্যয় জরিপ অনুযায়ী ২০২২ সালে বাংলাদেশে অতি দরিদ্রের হার মাত্র ৫.৬ শতাংশে নেমে এসেছে যা ২০১০ সালেও ছিল ১৭.৬ শতাংশ ছিল।
তবে বাংলাদেশে দারিদ্র্যের হার কমলেও বয়স্ক মানুষের সংখ্যা ক্রমাগত বাড়ছে। এমনিতেই বিশ্বে জনসংখ্যায় বয়স্ক মানুষের হার বৃদ্ধি পাচ্ছে। বাংলাদেশ এই মূহুর্তে জনসংখ্যাগত লভ্যাংশ (demographic dividend) ভোগ করলেও বয়স্ক জনসংখ্যা দেশে ক্রমবর্ধমান। শিশু ও মাতৃমৃত্যুর হার হ্রাস, অর্থনৈতিক উন্নতি ও চিকিৎসা সেবা সম্প্রসারণের ফলে দেশে প্রত্যাশিত গড় আয়ুষ্কাল বেড়ে গেছে। এর ফলে দেশে বয়স্ক জনসংখ্যার সংখ্যা বাড়ছে।
দেশে ২০২০ সালে ৬০ বছরের বেশি বয়সী মানুষ ছিল ১ কোটি ২০ লাখ যা ২০৪১ সালে ৩ কোটি ১০ লাখ হবে। জনসংখ্যাগত রূপান্তর তত্ত্ব (demographic transition theory) অনুযায়ী বিষয়টি স্বাভাবিক এবং প্রত্যেকটি দেশকেই এই প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হবে। অনেক জনসংখ্যা বিশেষজ্ঞের মতে বাংলাদেশ আর দুই যুগ পরে বয়স্ক মানুষের সমাজে রূপান্তরিত হবে যা বর্তমানে অধিকাংশ উন্নত দেশই পরিণত হয়েছে।
কর্মক্ষমতা হ্রাস পেলে বা নিয়োজিত কর্মের অবসান হলে দেশে পেনশনভোগী সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের কর্মচারী ব্যতীত ৬০ বছরের অধিক বয়স্ক মানুষ খাদ্য, স্বাস্থ্য, বাসস্থান ইত্যাদি মৌলিক চাহিদা পূরণের জন্য সন্তানদের মুখাপেক্ষী হয় অথবা সঞ্চয়ের ওপর নির্ভর করে।
দক্ষিণ এশিয়ার সামাজিক পরিমণ্ডলে সাধারণত সন্তানরা তাদের বয়স্ক পিতা-মাতার ভরণ-পোষণ বহন করে। তবে সন্তান যদি এই ক্ষেত্রে অনিচ্ছুক হয় বা সন্তানের বয়স্ক পিতা-মাতার ভরণ-পোষণ করার সামর্থ্য না থাকে, তবে তা বয়স্কদের জীবনযাত্রা পরিচালনা করা কষ্টকর করে দেয়। বিশেষত স্বকর্মে নিয়োজিতদের ক্ষেত্রে এই সমস্যা অতি প্রকট।
আরও পড়ুন >>> সন্নিকটে সংকট, শঙ্কিত কি অর্থনীতি!
বয়স্কদের ক্ষেত্রে সন্তানদের ভরণ-পোষণ করার প্রবণতা কমার ফলে বয়স্কদের সামাজিক নিরাপত্তা প্রদানের বিষয়টি বারবার উচ্চারিত হচ্ছিল। সাধারণত সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচিতে বয়স্ক ভাতা বা বিধবা ও স্বামী পরিত্যক্তাদের ভাতা প্রদানের মাধ্যমে সরকার বয়স্কদের সামাজিক নিরাপত্তা দিয়ে থাকে। তবে এটি শুধু দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য প্রযোজ্য হওয়ায় সব বয়স্ক জনগোষ্ঠী সামাজিক নিরাপত্তা বলয়ের অন্তর্ভুক্ত ছিল না।
তাই সব বয়স্ক জনগোষ্ঠীদের সামাজিক নিরাপত্তা বলয়ে এনে টেকসই ও অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সরকার সর্বজনীন পেনশন স্কিম ঘোষণা করে। সরকার সর্বস্তরের জনগণের বিশেষ করে গড় আয়ু বৃদ্ধির ফলে ক্রমবর্ধমান বয়স্ক জনগোষ্ঠীদের টেকসই ও সুসংগঠিত সামাজিক নিরাপত্তা বলয়ের অন্তর্ভুক্ত করার প্রয়োজনে এবং ভবিষ্যতে কর্মক্ষম জনসংখ্যা হ্রাসের কারণে নির্ভরশীলতা বৃদ্ধি পাবে এই উদ্দেশ্যে ‘সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনা আইন, ২০২৩’ প্রণয়ন করে।
এই আইনে সরকারকে ‘জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষ’ প্রতিষ্ঠা করার ক্ষমতা দেওয়া হয় এবং ‘জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষ তহবিল’ নামে একটি তহবিল গঠন করার অনুমোদন দেওয়া হয়। এই আইনের বলে সরকার ২ এপ্রিল ২০২৩ তারিখে ‘জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষ’ প্রতিষ্ঠা করে। পরবর্তীতে সরকার কর্তৃক ১৩ আগস্ট ২০২৩ তারিখে ‘সর্বজনীন পেনশন স্কিম বিধিমালা, ২০২৩’ জারি করা হয়।
‘সর্বজনীন পেনশন স্কিম বিধিমালা, ২০২৩’-এর ৪ নম্বর বিধিতে সর্বজনীন পেনশন প্রবর্তনের জন্য চার ধরনের স্কিম ঘোষণা করা হয়। এর প্রথমটি ‘প্রবাস স্কিম’ যা প্রবাসী বাংলাদেশি নাগরিকদের জন্য প্রযোজ্য। দ্বিতীয়টি ‘প্রগতি স্কিম’ যা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীদের জন্য প্রযোজ্য। তৃতীয়টি ‘সুরক্ষা স্কিম’ যা স্বকর্মে নিয়োজিত নাগরিকগণের জন্য প্রযোজ্য।
সর্বশেষ ‘সমতা স্কিম’ যা স্বকর্মে নিয়োজিত স্বল্প আয়ের নাগরিকগণের জন্য অংশ প্রদায়ক স্কিম। এর মধ্যে প্রবাস স্কিমে প্রবাসী বাংলাদেশি নাগরিক বিদেশ অবস্থানকালীন সময়ে বৈদেশিক মুদ্রায় তার চাঁদা পরিশোধপূর্বক অংশগ্রহণ করতে পারবেন। প্রগতি স্কিমে কোনো বেসরকারি প্রতিষ্ঠান অংশগ্রহণ করলে সেই প্রতিষ্ঠান তার কর্মচারীদের চাঁদার পঞ্চাশ শতাংশ পরিশোধ করবে অন্যথায় কোনো বেসরকারি কর্মচারী তার পুরো চাঁদা পরিশোধপূর্বক অংশগ্রহণ করতে পারবেন।
সুরক্ষা স্কিমে স্বকর্মে নিয়োজিত নাগরিকরা নিজেদের চাঁদা নিজেরা পরিশোধ করবেন। তবে সমতা স্কিমে স্বকর্মে নিয়োজিত দারিদ্র্য সীমার নিচে বসবাসকারী এবং বার্ষিক ষাট হাজার টাকার নিচে আয়কারী নাগরিকরা বিধিমালার তফসিলে উল্লিখিত চাঁদা পরিশোধ করবেন এবং সমপরিমাণ চাঁদা জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষ পরিশোধ করবে।
আরও পড়ুন >>> আইএমএফের ঋণ : ইতিহাস যা বলে
সর্বজনীন পেনশন স্কিমে ১৮ হতে ৫০ বছরের যেকোনো ব্যক্তি অংশগ্রহণ করতে পারবেন। পেনশনধারী নাগরিক ৬০ বছর পূর্ণ হওয়ার পর আজীবন মাসিক পেনশন পাওয়া শুরু করবেন। পঞ্চাশোর্ধ্ব নাগরিকরাও এই পেনশন স্কিমের আওতায় আসবেন। তবে তাদের নিরবছিন্নভাবে পেনশন স্কিমে ১০ বছর চাঁদা দেওয়ার পরে তারা পেনশন পাবেন।
অংশগ্রহণকারীরা পেনশন স্কিমের ধরন বা চাঁদার পরিমাণ জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষের অনুমোদনক্রমে যেকোনো সময় পরিবর্তন করতে পারবেন এবং ৭৫ বছর বয়সের পূর্বে তার মৃত্যুতে তার নমিনি/নমিনিগণ তার বয়স ৭৫ পূর্ণ হওয়া পর্যন্ত পেনশন পাবেন। বর্তমানে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় থাকা নাগরিকরাও পেনশন স্কিমের আওতায় আসতে পারবেন, তবে তাদের পেনশন স্কিমে আসার পূর্বে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির সুবিধা সমর্পণ করতে হবে।
সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা কল্যাণ রাষ্ট্রগুলোয় প্রচলিত আছে। সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থার মূল উদ্দেশ্য হলো কোনো ব্যক্তির ৬০ বছর বয়স পর্যন্ত সঞ্চয়ের সুবিধা আজীবন উপভোগ করা যা তাকে আজীবন স্থিতিশীল আয় প্রদান করবে, জীবনযাত্রা মসৃণ করবে এবং বার্ধক্যের দারিদ্র্য হ্রাস করবে। গবেষণায় দেখা যায়, সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা উৎপাদনশীল কর্মক্ষেত্র সৃষ্টির মাধ্যমে জীবনযাত্রার মান উন্নত করে একটি দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও উন্নয়নে অবদান রাখতে পারে।
বাংলাদেশে সর্বজনীন পেনশন স্কিম বাস্তবায়নের প্রধানতম চ্যালেঞ্জ হবে ‘জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষ তহবিল’-এর সঠিক ব্যবস্থাপনা। এই তহবিল ব্যবহারের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার ওপর মহৎ এই প্রকল্পের সফলতা নিহিত। পেনশন স্কিমে অংশগ্রহণকারীরা স্বাভাবিকভাবেই জানতে চাইবেন তাদের সঞ্চয়ের অর্থ দিয়ে গড়া তহবিলের অর্থ কোথায় ও কীভাবে বিনিয়োগ হচ্ছে।
সরকারের কাঙ্ক্ষিত ১০ কোটি জনগণ সর্বজনীন পেনশন স্কিমে অংশ নিলে তহবিলের পরিমাণ দিন দিন বাড়বে। বর্তমান কাঠামো অনুযায়ী আগামী ১০ বছর পর থেকে সর্বজনীন পেনশন স্কিমে অংশগ্রহণকারীদের পেনশন প্রদান শুরু হবে। যেহেতু এই সামগ্রিক কর্মকাণ্ডের অপারেশনাল ব্যয় তহবিল হতেই মেটানো হবে, তাই একটি শক্তিশালী আইনি কাঠামোর মধ্যে তহবিলের ব্যবস্থাপনা জরুরি। এই বিষয়ে যেসব দেশ সর্বজনীন পেনশন স্কিম সফলভাবে বাস্তবায়ন করেছে তাদের তহবিল ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে সম্যক জ্ঞান আহরণ করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা যেতে পারে।
আরও পড়ুন >>> অর্থনৈতিক মন্দার শিকড় কোথায়?
এছাড়া নারীদের বিশেষত শুধু গৃহকর্মে নিযুক্ত নারী যাদের নিজস্ব কোনো আয় নেই তাদের এই পেনশন স্কিমে অন্তর্ভুক্ত করাও চ্যালেঞ্জের বিষয়। তাই শুধু নারীদের জন্য আলাদা পেনশন স্কিম করা যেতে পারে। আবার বর্তমানে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির অন্তর্ভুক্ত ব্যক্তিরা তাদের সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির সুবিধা সমর্পণ করে কতটা এই সর্বজনীন পেনশন স্কিমে আসবে তাও দেখার বিষয় হবে। কারণ তারা বর্তমানে নগণ্য হলেও একটি আর্থিক সুবিধা পাচ্ছে যা পেনশন স্কিমে আসলে বন্ধ হয়ে যাবে।
আবার, তারা পেনশন স্কিমে আসলে সরকার সমপরিমাণ চাঁদা দিলেও তাদের একটি নির্দিষ্ট অর্থ প্রতি মাসে দিতে হবে এবং পেনশন প্রাপ্তির জন্য কমপক্ষে দশ বছর অপেক্ষা করতে হবে। এছাড়া সব বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে এই পেনশন স্কিমে আনাটাও চ্যালেঞ্জের বিষয় হবে। বর্তমানে এটি স্বেচ্ছাধীন আছে, ভবিষ্যতে যা বাধ্যতামূলক হলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। এর বাইরে ইন্টারনেটের ব্যবহার না করা নাগরিকদের রেজিস্ট্রেশন করা এবং নিয়মিত চাঁদা পরিশোধ করানোও একটি চ্যালেঞ্জিং ব্যাপার হবে।
বাংলাদেশে সর্বজনীন পেনশন স্কিমের মাত্র যাত্রা শুরু হলো। শুরুতেই সম্পূর্ণ রেজিস্ট্রেশন অনলাইনে হওয়ায় এবং অনলাইন বা মোবাইল ব্যাংকিং বা ডেবিট/ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে চাঁদা প্রদানের সুবিধা থাকায় বিষয়টি প্রযুক্তি জ্ঞান সম্পন্ন ব্যক্তিদের নিকট সহজতর হয়েছে এবং তাতে ব্যাপক সাড়া পড়েছে।
ধীরে ধীরে প্রান্তিক পর্যন্ত রেজিস্ট্রেশন শুরু হলে বর্তমানে শুরু করা পদ্ধতির সুবিধা-অসুবিধা জানা যাবে এবং তা থেকে শিক্ষা গ্রহণ করে সামগ্রিক ব্যবস্থাপনা আরও উন্নত ও সেবামুখী করার সুযোগ থাকবে। সর্বজনীন পেনশন স্কিমের হাত ধরে বাংলাদেশের বয়স্ক সমাজে আর্থিক সচ্ছলতা আসুক এই কামনা করি।
সোমা ভট্টাচার্য ।। সহযোগী অধ্যাপক, অর্থনীতি বিভাগ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়