বইমেলায় ক্রেতার চেয়ে দর্শনার্থীর সংখ্যাই বেশি
অমর একুশে বইমেলার নবম দিন গড়াচ্ছে আজ। দিন যত যাচ্ছে মেলায় ততই ভিড় বাড়ছে বইপ্রেমী, পাঠক, লেখক ও দর্শনার্থীর। যদিও বিক্রেতারা বলছেন, এখনও মেলায় বই বিক্রি ভালোভাবে শুরু হয়নি। বই ক্রেতার চেয়ে ঘুরতে আসা মানুষের সংখ্যা এখনও বেশি। তবে আগামীতে বই বিক্রি অনেক বাড়বে বলে আশাবাদী তারা।
বুধবার মেলা ঘুরে দেখা গেছে, অনেকেই এসেছেন দল বেঁধে, কেউ কেউ বন্ধু-বান্ধবদের নিয়ে, কেউবা পরিবার পরিজন কিংবা প্রিয় মানুষকে সঙ্গে নিয়ে এসেছেন মেলায় । ছিল শিশু, কিশোর-কিশোরীর সরব উপস্থিতিও। মেলায় আগতরা ঘুরে ঘুরে দেখছেন নিজের প্রিয় লেখকসহ অন্য লেখকদের নতুন বইগুলো। এক স্টল থেকে অন্য স্টলে ঘোরাঘুরিতে কাটিয়ে দিচ্ছেন সময়। মাঝেমধ্যে কিনছেন বইও।
করোনা সংক্রমণের কারণে গত বছর লেখক, দর্শনার্থী ও বইপ্রেমীদের উপস্থিতি ছিল তুলনামূলক কম। তবে এবার দিন যত যাচ্ছে বইমেলায় আগতদের সংখ্যা বাড়ছে। তাই বিক্রিও বাড়বে বলে আশাবাদী বিক্রেতারা।
অফিস শেষে বইমেলায় এসেছেন বেসরকারি চাকরিজীবী আফসানা হোসেন। তিনি বলেন, বইমেলায় আসতে খুব ভালো লাগে, তাই অফিস শেষ করে প্রায়ই মেলায় আসি। স্টল ঘুরে দুই একটা বই কিনে নিয়ে যাই। যদিও এখনও বইমেলা তেমনভাবে জমে উঠেনি, অনেক বই এখনও আসেনি। তবুও অনেক আগের অভ্যাস বইমেলায় নিয়মিত আসার। সেই অভ্যাসের কারণেই মেলায় আসা।
স্ত্রী ও দুই সন্তানকে নিয়ে বইমেলায় এসেছেন ধানমন্ডির বাসিন্দা তুর্জ আহমেদ। তিনি বলেন, স্কুল পড়ুয়া দুই সন্তান আগেই থেকেই বায়না ধরে রেখেছে বইমেলায় গিয়ে তারা সায়েন্স ফিকশন বই কিনবে। তাদের বায়নার কারণেই বই কিনে দিচ্ছি। আমাদের সন্তানরা বইয়ের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠছে এটা ভালো খবর।
তিনি আরও বলেন, সায়েন্স ফিকশন বইগুলো মূলত বিজ্ঞানমনস্ক সৃষ্টিশীল চিন্তার জগতকে দারুণভাবে প্রভাবিত করে কিশোর-তরুণদের। তাই এসব বইয়ের প্রতি তাদের একটু বেশিই আগ্রহ।
অন্যদিকে বিক্রেতারা বলছেন, এখনও সেভাবে বই বিক্রি জমে উঠেনি। প্রিয় প্রকাশ নামে একটি স্টলের ম্যানেজার সিদ্দিকুর রহমান বলেন, বইমেলায় প্রতিদিন প্রচুর দর্শনার্থী আসছেন। তবে ক্রেতার সংখ্যা বা বই বিক্রির সংখ্যা সেভাবে বাড়েনি। আরও কিছুদিন সময় লাগবে। দর্শনার্থী আসছেন এটা ঠিক, করোনার সময় মনে করে যেমন ভয় পেয়েছিলাম কিন্তু সেই তুলনায় দর্শনার্থীদের উপস্থিতি বাড়ছে। এটা আমাদের জন্য ভালো খবর।
তাম্রলিপি প্রকাশনীর বিক্রয়কর্মী সাজ্জাদ হোসেন বলেন, ক্রেতারা আসছেন ঘুরে ঘুরে বই দেখছেন, কিন্তু বিক্রি সংখ্যা দর্শনার্থীর তুলনায় কম। অবশ্য দিন যত যাবে বই বিক্রির সংখ্যা ততই বাড়তে থাকবে। গত ২১ ফেব্রুয়ারি বইমেলায় সবচেয়ে বেশি দর্শনার্থী ছিল এবং বিক্রিও হয়েছে ভালো। এখন সায়েন্স ফিকশন বই কিনতে অভিভাবকসহ শিশু কিশোররা বেশ ভিড় করছে।
সেই স্টলের সামনে বাবা-মাসহ কয়কটি বই হাতে নিয়ে দাঁড়িয়েছিলেন আজিমপুর গার্লস স্কুলের ৯ম শ্রেণির শিক্ষার্থী তানজিলা সবনম। তিনি বলেন, সায়েন্স ফিকশন বই পড়তে বেশি ভালো লাগে। আজ জাফর ইকবাল স্যারের সাইক্লোন, যারা বায়োবট, জলজ, কেপলার টুটুবি বইগুলো কিনেছি। আমার স্কুলের বান্ধবীরাও সবাই সায়েন্স ফিকশন বই পড়তে বেশি পছন্দ করে।
এদিকে বাংলা একাডেমি থেকে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আজ মোট ১২২টি নতুন বইমেলায় এসেছে। এছাড়া গত ৯ দিনে বইমেলায় ৮৮৭ টি নতুন বই এসেছে।
এএসএস/এসকেডি