৪৬ কোটি টাকা ব্যয় কমাতে একনেকে উঠছে সাসেক প্রকল্প
জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় অনুমোদনের পর গত প্রায় ১০ বছরে চারবার সংশোধনীর মাধ্যমে প্রকল্পের ব্যয় বেড়েছে ৩ হাজার ৪২৬ কোটি টাকা। আজ (মঙ্গলবার) তৃতীয়বার সংশোধনীতে ৪৫ কোটি ৯৫ লাখ টাকা ব্যয় কমাতে একনেকে উঠছে সাসেক সংযোগ সড়ক প্রকল্প (জয়দেবপুর-চন্দ্রা-টাঙ্গাইল-এলেঙ্গা সড়ক ফোরলেন মহাসড়কে উন্নীতকরণ)। প্রকল্পটি একনেকে অনুমোদন পেলে বাস্তবায়নের মেয়াদও ছয়মাস বৃদ্ধি পাবে। একনেকে কার্যপত্র থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
পরিকল্পনা কমিশনের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, প্রকল্পটি ২ হাজার ৭৮৮ কোটি ৪৫ লাখ টাকা ব্যয়ে এপ্রিল ২০১৩ সাল থেকে মার্চ ২০১৮ সালে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে একনেকে অনুমোদন দেওয়া হয়। এরপর প্রথম সংশোধনী ও পরে বিশেষ সংশোধন করে প্রকল্পটির ব্যয় ৩ হাজার ৩৬৫ কোটি টাকা নির্ধারণ করা হয়। এরপর দ্বিতীয় সংশোধনের মাধ্যমে প্রকল্পের ব্যয় ৫ হাজার ৫৯৩ কোটি টাকা করার পাশাপাশি বাস্তবায়ন মেয়াদ জুন ২০২০ সাল পর্যন্ত করা হয়। কিন্তু এই সময়েও প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করতে না পারায় দ্বিতীয় বিশেষ সংশোধনীর মাধ্যমে প্রকল্পের ব্যয় দাঁড়ায় ৬ হাজার ২১৪ কোটি টাকা। ব্যয় ঠিক রেখে এরপর মেয়াদ জুন ২০২২ সাল পর্যন্ত করা হয়। কিন্তু এই সময়েও প্রকল্পটি বাস্তবায়ন শেষ হবে না বিধায় প্রকল্পের ব্যয় ৪৫ কোটি ৯৫ লাখ টাকা কমিয়ে আরও ছয় মাস মেয়াদ বাড়াতে তৃতীয় সংশোধনীর প্রস্তাব করা হয়েছে। তৃতীয় সংশোধনীতে প্রকল্পের ব্যয় দাঁড়াচ্ছে ৬ হাজার ১৬৮ কোটি টাকা।
কর্মকর্তারা জানান, এই প্রকল্পটি সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ থেকে হাতে নেওয়া হয়েছিল। আর প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে সরকারের কোষাগার থেকে ২ হাজার ৯৬৩ কোটি টাকা এবং এডিবি, ওএফআইডি এবং এডিএফডি থেকে ৩ হাজার ২০৫ কোটি টাকা ঋণ পাওয়া গেছে। গাজীপুর জেলার জয়দেবপুর, কালিয়াকৈর, টাঙ্গাইলের মির্জাপুর, দেলদুয়ার, বাসাইল, টাঙ্গাইল সদর, কালিহাতি উপজেলা এবং ঢাকা জেলার তেজগাঁও থানা এলাকায় প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।
সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর প্রকল্পটি সংশোধনের কারণ হিসেবে বলেছে, স্পেশাল ড্রইং রাইটসের (এসডিআর) বিপরীতে ডলারের মূল্যমান পরিবর্তন হওয়ায় এবং চুক্তি অনুযায়ী নির্মাণকাজের জন্য প্রতিশ্রুত পরিমাণ বৈদেশিক ঋণ না পাওয়ায় ফাইন্যান্সিং গ্যাপ পূরণের জন্য জিওবি খাত থেকে প্রায় ১৭০ কোটি টাকার সমন্বয় করা হয়েছে। এছাড়া প্রকল্প বাস্তবায়নে পরামর্শক সেবার পরিমাণ ও ব্যয় বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রাইস এডজাস্টমেন্ট, ভ্যাট, আইটি, সিডি খাতে ব্যয় বৃদ্ধির পাশাপাশি বৈদ্যুতিক লাইন স্থাপন অঙ্গ নতুনভাবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এর বাইরেও সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয়ের নির্মাণ, ভূমি অধিগ্রহণ, পুনর্বাসন, আরএইচডি ইকুইপমেন্ট, ইউটিলিটি শিফটিং, ফিজিক্যাল কনটিনজেন্সি, বৈদেশিক প্রশিক্ষণ ও রাজস্ব খাতের বিভিন্ন অঙ্গে ব্যয় কমেছে এবং প্রকল্পের মেয়াদ ছয়মাস বৃদ্ধির প্রয়োজন বিধায় সংশোধন প্রয়োজন।
পরিকল্পনা কমিশনের ভৌত অবকাঠামো বিভাগের সদস্য মামুন-আল-রশিদ বলেন, কয়েকটি কারণে প্রকল্পটির সংশোধন প্রয়োজন। কিছু কিছু খাতে ব্যয় কমেছে। তাছাড়া আগামী জুনের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন শেষ হবে না। এজন্য ছয়মাস মেয়াদ বাড়াতে হবে। তাই প্রকল্পটি তৃতীয় বা শেষবারের মতো সংশোধনের জন্য একনেক সভায় তোলা হচ্ছে। একনেকে অনুমোদন পেলে চলতি বছরের ডিসেম্বরে প্রকল্পটির বাস্তবায়ন শেষ করা সম্ভব হবে বলে জানিয়েছে বাস্তবায়নকারী সংস্থা।
এসআর/এইচকে