নতুন ড্যাপে ভবন নির্মাণ করতে হবে ব্লক আকারে
রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) নতুন খসড়া বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনা বা ডিটেইল এরিয়া প্ল্যানে (ড্যাপ) ছোট ছোট ব্লক আকারে ভবন নির্মাণ করার সুপারিশ করা হয়েছে। এতে করে তিন থেকে পাঁচ কাঠা বা এমন ছোট পরিসরে কোনো ভবন তৈরির জন্য অনুমতি না দেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে।
এছাড়া রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) নতুন বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনায় (ড্যাপ-২০১৬-২০৩৫) উন্নয়নের নানা প্রস্তাব করা হয়েছে। নতুন ড্যাপের মেয়াদ ধরা হয়েছে ২০ বছর। এটি বাস্তবায়িত হলে ঢাকা শহরের ওপর চাপ কমবে। আবার নাগরিক সেবার মানও বাড়বে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা। রাজউকের উদ্যোগে প্রণীত নতুন ড্যাপে থাকছে ভূমি পুনর্বিন্যাস, উন্নয়নস্বত্ব প্রতিস্থাপন পন্থা, ভূমি পুনঃউন্নয়ন, ট্রানজিটভিত্তিক উন্নয়ন, উন্নতিসাধন ফি, স্কুল জোনিং ও ডেনসিটি জোনিং।
নতুন ড্যাপ পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, রাজউকের অন্তর্ভুক্ত এক হাজার ৫২৮ বর্গকিলোমিটার এলাকাকে মোট ৪৬৮টি (ব্লক) ভাগ করা হয়েছে। পরে জরিপ করে প্রতিটি ব্লকের জনসংখ্যার ধারণক্ষমতা, সড়ক অবকাঠামো, নাগরিক সুবিধা ও সেখানে উন্নয়নের ধরনের ওপর ভিত্তি করে আবাসিক ভবনের উচ্চতা নির্ধারণ করা হয়েছে।
প্রস্তাবিত সংশোধিত ড্যাপে ঢাকাসহ আশপাশের এক হাজার ৫২৮ বর্গকিলোমিটার এলাকার দুই হাজার ১৯৮ কিলোমিটার জলাধার সিএস রেকর্ড অনুযায়ী উদ্ধার করে সচল করার সুপারিশ করা হয়েছে। একইসঙ্গে এসব এলাকাকে বিনোদন স্পটে পরিণত করারও সুযোগ সৃষ্টি করা হচ্ছে। ঢাকার চারপাশের ৫৬৬ কিলোমিটার নদীপথ সচল করা এবং এক হাজার ২৩৩ কিলোমিটার সড়ককে হাঁটার উপযোগী করার কথা বলা হয়েছে। শহরের বিদ্যমান কাঠামো ভেঙে স্কুলভিত্তিক উন্নয়নের সুপারিশ করা হয়েছে। এছাড়া ঢাকায় সমন্বিত যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে সড়ক, জল ও রেলপথকে গুরুত্ব দিয়ে একটি সমন্বিত যোগাযোগ মাধ্যমে হিসেবে গড়ে তুলতেও সুপারিশ করা হয়েছে।
সংশোধিত ড্যাপ নিয়ে প্রকল্প পরিচালক আশরাফুল ইসলাম বলেন, নতুন ড্যাপে ব্লকভিত্তিক নগরায়নের প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। সেখানে অল্প জায়গায় বা কাঠায় কোনো ভবন তৈরির অনুমতি না দিয়ে ছোট ছোট ব্লক আকারে ভবন নির্মাণ করাকে বেশি গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। এতে করে ব্লকের ভিতরে ছোট মাঠ সহ বিভিন্ন সেবা রাখা সম্ভব হবে। সেক্ষেত্রে কোনো জমি প্লট আকারে ভাগ না করে একসঙ্গে ‘ব্লক’ তৈরি করে ভবন নির্মাণ করলে অতিরিক্ত সুবিধা পাওয়া যাবে। তাই এমনটা চিন্তা করা হয়েছে।
ড্যাপে বলা হয়েছে, দুই একর পর্যন্ত (শূন্য দশমিক ৬৬ থেকে দুই একর) ব্লকের (জমি) ক্ষেত্রে ৪০ শতাংশ জায়গা ছেড়ে দিলে অর্থাৎ পার্ক, খেলার মাঠ, উন্মুক্ত স্থানের জন্য তাহলে ১০ তলা উঁচু আবাসিক ভবন নির্মাণ করা যাবে। দুই থেকে পাঁচ একর ব্লকের ৫০ শতাংশ উন্মুক্ত স্থান হিসেবে ছেড়ে দিলে ১৫ তলা ও পাঁচ একরের বেশি ব্লকের ক্ষেত্রে ৬০ শতাংশ জায়গা উন্মুক্ত স্থান হিসেবে ছেড়ে দিলে যত খুশি তত উঁচু আবাসিক ভবন নির্মাণ করা যাবে। তবে সে ক্ষেত্রে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের উচ্চতা সীমার ছাড়পত্রের প্রয়োজন হবে।
এএসএস/ওএফ