৬০ বিশিষ্ট ব্যক্তির সঙ্গে বসবে সার্চ কমিটি
নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠনে নাম সুপারিশ করার জন্য রাষ্ট্রপতি কর্তৃক গঠিত সার্চ কমিটি বিভিন্ন পেশার ৬০ বিশিষ্ট ব্যক্তির সঙ্গে একাধিক বৈঠকে বসবে। আগামী শনি ও রোববার এসব বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।
মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টের জাজেস লাউঞ্জে সার্চ কমিটির বৈঠক শেষে এ তথ্য জানিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম।
গত শনিবার সার্চ কমিটি গঠন সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। এরপর আজ ছিল এ কমিটির দ্বিতীয় বৈঠক। এর আগে ৬ ফেব্রুয়ারি সার্চ কমিটির প্রথম বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে বৈঠকের বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, শনি ও রোববার মোট তিনটি বৈঠক হবে। এরমধ্যে শনিবার হবে দুটি বৈঠক আর রোববার একটি। শনিবার বেলা ১১টা থেকে সাড়ে ১২টা পর্যন্ত প্রথম বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। আর পৌনে ১টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হবে দ্বিতীয় বৈঠক। রোববার বিকেল ৪টায় অনুষ্ঠিত হবে আরেকটি বৈঠক।
সচিব বলেন, বৈঠকের বিষয়ে বুধবারের মধ্যে বিশিষ্টজনদের চিঠি দেওয়া হবে। তাদের কাছে নির্বাচন কমিশন গঠনের বিষয়ে মতামত চাওয়া হবে। তারা চাইলে কোনো ব্যক্তির নাম প্রস্তাব করতে পারবেন।
রাজনৈতিক দলগুলোর কাছ থেকে কমিটির কাছে এ পর্যন্ত ৩০ জনের নাম এসেছে জানিয়ে তিনি বলেন, যেসব দল এখনো নাম দেয়নি তারা শুক্রবার বিকেলের মধ্যে ১০ জনের তালিকা দিতে পারবে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে। এর জন্য শুক্রবার বিশেষ ব্যবস্থাপনায় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ খোলা থাকবে।
সার্চ কমিটির প্রধান হলেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারপতি ওবায়দুল হাসান। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি এস এম কুদ্দুস জামান, বাংলাদেশের মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক মোহাম্মদ মুসলিম চৌধুরী, সরকারি কর্ম কমিশন চেয়ারম্যান মো. সোহরাব হোসাইন, সাবেক নির্বাচন কমিশনার ছহুল হোসাইন এবং কথাসাহিত্যিক অধ্যাপক আনোয়ারা সৈয়দ হক।
এই সার্চ কমিটির অধিকাংশ সদস্যই আওয়ামী লীগের সঙ্গে সম্পর্কিত বলে অভিযোগ করছে বিএনপি। এটিকে নতুন বোতলে পুরাতন মদ আখ্যায়িত করে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর গতকাল এক অনুষ্ঠানে বলেছেন, ‘গতবারও যেভাবে করেছে, ঠিক একইভাবে এবারও, শুধু খোলস লাগিয়ে মানুষের সঙ্গে প্রতারণার করার জন্য, যে দেখো আমরা সুন্দরভাবে করছি, সবার কাছ থেকে মতামত নিচ্ছি। তারপর শেষ পর্যন্ত দেখা যাবে যে হুদার (সাবেক নির্বাচন কমিশনার নুরুল হুদা) ইসি নিয়োগ করেছে। এ সার্চ কমিটির মধ্যেও বেশিরভাগ লোকই আওয়ামী লীগের সঙ্গে সম্পর্কিত। একজন তো আওয়ামী লীগের মনোনয়নও চেয়েছিল।’
তবে মঙ্গলবার মন্ত্রিপরিষদ সচিব দাবি করেন, সার্চ কমিটি শতভাগ নিরপেক্ষ।
ফখরুলের বক্তব্যকে ‘লাগাতার মিথ্যাচার-অপপ্রচার ও বিভ্রান্তিকর’ বলে দাবি করেছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরও।
বাংলাদেশে এর আগেও সার্চ কমিটির মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়েছে। তবে এবারই প্রথম আইনের মাধ্যমে সার্চ কমিটি কাজ করছে। ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ আইন, ২০২২’ গত মাসে পাস হয়েছে জাতীয় সংসদে।
বর্তমান নির্বাচন কমিশনের মেয়াদ শেষ হচ্ছে ১৪ ফেব্রুয়ারি। নিয়ম অনুযায়ী তার আগেই নতুন কমিশন গঠন করতে হবে রাষ্ট্রপতিকে। সেই কমিশনের অধীনেই হবে আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন।
নির্বাচন কমিশন গঠনের লক্ষ্যে দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্প্রতি সংলাপ করেন রাষ্ট্রপতি। সংলাপে অংশ নিয়ে দলগুলো তাদের মতামত ও প্রস্তাব উপস্থাপন করে। তবে বিএনপি এই সংলাপে অংশ নেয়নি।
এমএইচডি/ওএফ/এনএফ