ইতালিতে ৭ কথিত বাংলাদেশির মৃত্যু নিয়ে দূতাবাসের সক্রিয় অবস্থান
মধ্যপ্রাচ্যের দেশ লিবিয়া থেকে ইতালির ভূমধ্যসাগরীয় দ্বীপ ল্যাম্পেদুসা যাওয়ার পথে হাইপোথার্মিয়ায় (শরীরের তাপমাত্রা কমে যাওয়া) কথিত সাত বাংলাদেশির মৃত্যুর ঘটনায় নিজেদের করণীয় ও সক্রিয় অবস্থানের ব্যাখ্যা দিয়েছে ইতালির বাংলাদেশ দূতাবাস।
দূতাবাস বলছে, কথিত সাত বাংলাদেশির মরদেহ সিসিলি প্রদেশের এগ্রিজেন্তো এলাকার একটি মর্গে রাখা আছে। মরদেহ বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনা চলছে।
শুক্রবার (২৮ জানুয়ারি) ইতালির বাংলাদেশ দূতাবাস থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, মঙ্গলবার (২৫ জানুয়ারি) সংঘটিত মর্মান্তিক ঘটনায় দীর্ঘক্ষণ তীব্র ঠাণ্ডায় থাকার ফলে হাইপোথার্মিয়াজনিত কারণে সাত বাংলাদেশি নাগরিকের নিহত হওয়ার বিষয়ে অবহিত হওয়ার পর থেকেই ইতালিতে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে নিবিড় যোগাযোগ রক্ষা করে চলছে।
ইতালির কাতানিয়া ও পালেরমোতে নিযুক্ত বাংলাদেশের অনারারি কনসালগণের মাধ্যমেও বাংলাদেশ দূতাবাস প্রকৃত তথ্য অনুসন্ধান এবং যথোপযুক্ত করণীয় নির্ধারণের মাধ্যমে সক্রিয়ভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
দূতাবাসের কাউন্সেলর (শ্রম কল্যাণ) মো. এরফানুল হকের নেতৃত্বে ও দূতাবাসের একজন ইতালীভাষী কর্মচারীসহ দুই সদস্য বিশিষ্ট একটি দল দুর্ঘটনার পরদিন বুধবার (২৬ জানুয়ারি) লাম্পেদুসা দ্বীপে পৌঁছায়। এই মর্মান্তিক ঘটনায় দীর্ঘক্ষণ তীব্র ঠাণ্ডায় থাকার কারণে হাইপোথার্মিয়ায় আক্রান্ত হয়ে সাত অভিবাসন প্রত্যাশীর মৃত্যু হয় যারা বাংলাদেশের নাগরিক বলে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ জানায়।
দূতাবাস জানায়, কাউন্সেলর বৃহস্পতিবার (২৭ জানুয়ারি) লাম্পেদুসার ডেপুটি মেয়র প্রেস্টিপিনো সালভাতোরের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন (মেয়র শহরের বাইরে থাকায় তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করা সম্ভব হয়নি)। সাক্ষাতকালে তারা দুর্ঘটনার বিষয়ে ও ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা প্রতিকারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ/ করণীয় কৌশল নির্ধারণের বিষয়ে বিস্তারিত আলাপ করেন এবং ইতালীয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে দূতাবাসের নিবিড় সমন্বয়ের বিষয়ে মতবিনিময় করেন।
শুক্রবার বেলা ১১টায় কোস্টগার্ডের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের সঙ্গে দূতাবাসের প্রতিনিধিদল সাক্ষাৎ করে। সিসিলি প্রদেশের এগ্রিজেন্তো এলাকায় অবস্থিত মর্গে সাতটি লাশ ফেরত পাঠানো/ দাফন সম্পাদনের পূর্ব পর্যন্ত রাখা হবে বলে জানা গেছে। মরদেহ বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর বিষয়ে সংশ্লিষ্ট প্রক্রিয়াগত বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা চলমান রয়েছে।
লাশ পরিদর্শনের জন্য আদালতের অনুমতির বাধ্যবাধকতা থাকায় এখনো সরেজমিনে লাশগুলো দেখা সম্ভব হয়নি, তবে প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। দুর্ঘটনাস্থল থেকে জীবিত উদ্ধারকৃতদের বিভিন্ন স্থানে স্থানান্তর করা হয়েছে এবং দূতাবাসের প্রতিনিধিদল তাদের সঙ্গে কথা বলেছে।
দূতাবাসের বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, ইতালীয় সূত্রের প্রাথমিক তথ্যমতে অভিবাসন প্রত্যাশী ২৮৭ জনের মধ্যে ২৭৩ জন ছিলেন বাংলাদেশি, যাদের মধ্যে সাত জন মারা গিয়েছেন এবং অন্যরা মিশরীয় নাগরিক।
সংশ্লিষ্ট সকলকে অসাধু মানবপাচারকারী চক্র থেকে সাবধান থাকার আহ্বান জানানোর সঙ্গে সঙ্গে দূতাবাস দুর্ঘটনায় নিহতদের পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা প্রকাশ করছে।
এ বিষয়ে পরবর্তী প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণের জন্য দূতাবাস ইতালির সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করে চলছে।
এনআই/এইচকে