শাবির ঘটনায় শিক্ষামন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি ডা. জাফরুল্লাহর
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) ভিসির নির্দেশে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদেরকে পুলিশ পিটিয়েছে বলে দাবি করেছেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। আর এজন্য শাবি উপাচার্যের ক্ষমা চাওয়া ও পদত্যাগের পাশাপাশি শিক্ষামন্ত্রীরও পদত্যাগ দাবি জানান তিনি।
শনিবার (২২ জানুয়ারি) ধানমন্ডির গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালের এক আলোচনা সভায় এ দাবি জানান তিনি। মাওলানা ভাসানীর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভার আয়োজন করে ভাসানী অনুসারী পরিষদ।
ড. জাফরুল্লাহ বলেন, এটাই যথেষ্ট, আজকেই পদত্যাগ করে ভুল স্বীকার করে ক্ষমা চাওয়া উচিত উপাচার্যের।
পুলিশ দিয়ে কেন শিক্ষার্থীদের পেটানো হবে প্রশ্ন রেখে ডা. জাফরুল্লাহ বলেন, ভিসির অপরাধ কী সেটা দেখতে চাই না, শুধু পুলিশ দিয়ে পেটানোর জন্য ছাত্রদের কাছে ক্ষমা চাওয়া উচিত। আমি মনে করি শিক্ষামন্ত্রীর পদত্যাগ করা উচিত। কারণ শিক্ষামন্ত্রী তাদেরকে ডেকে পাঠাচ্ছেন। শিক্ষামন্ত্রীর উচিত তাদের কাছে গিয়ে মিমাংসা করে দেওয়া।
আজ মাওলানা ভাসানী বেঁচে থাকলে এ ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হতে হতো না উল্লেখ করে ডা. জাফরুল্লাহ বলেন, এসব ব্যাপারে আমরা কথা বলতে পারছি না, সব জায়গায় বাধা। সরকারের জবাবদিহিতা নেই। জনগণের মুখের কথা একমাত্র মওলানা ভাসানী আমাদের শিখিয়ে গেছেন। কিন্তু তাকে আমরা ভুলে গেছি। আজ সরকারিভাবে ভাসানী জন্ম ও মৃত্যু দিবস পালন হয় না। পত্র-পত্রিকায়ও সেভাবে উল্লেখ নেই। মজলুমের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হলে একটা সঠিক নির্বাচন দরকার।
প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, এই সরকার আমাদেরকে বাঁদর খেলা দেখাচ্ছে। তারা মনে করে আমরা সবাই বোকা। আমলা দিয়ে দেশ কখনো সুশাসন হয় না। আসলে সরকার জনগণ থেকে পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন।
তিনি আরও বলেন, কাক যেমন চোখ বন্ধ করে মরিচ লুকায় এটা মনে করার কারণ নেই। সারা পৃথিবী আমাদের গণতন্ত্র হরণ, খুন, গুম, অধিকার, দুর্নীতি সবকিছুই জানে। এখন এই বিষয়গুলোর ইস্যুতে আমাদেরকে মিলিতভাবে সংগ্রাম গড়ে তোলা ছাড়া মুক্তির জায়গা আসবে না।
আগামী নির্বাচন পূর্ববর্তী দুই নির্বাচনকেও ছাড়িয়ে যাবে বলে শঙ্কা প্রকাশ করে জাফরুল্লাহ বলেন, একটা পরিকল্পনা হলো নির্বাচনে প্রধান শিক্ষকদের ব্যবহার করা হবে। জেলা প্রশাসকেরা তো অনুগত আছেই। এসব ব্যাপারে সতর্ক হতে হবে।
গণসংহতি পরিষদের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেন, দেশের ভবিষ্যৎ ছাত্রসমাজ আমাদের নতুন পথের দিশা দেখাচ্ছেন। বর্তমান সরকার মওলানা ভাসানীকে প্রান্তিক জায়গায় ঠেলে দেওয়া হচ্ছে। এই রাষ্ট্র তাকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় তাকে স্মরণ করা হয় না। কারণ রাষ্ট্রে প্রান্তিক জনগণের অংশীদারিত্ব না।
সাকি আরও বলেন, এ সরকারের উন্নয়ন হচ্ছে কয়েকটি মেগা প্রজেক্ট উন্নয়ন। আর এসব প্রকল্প থেকে ভয়াবহ লুটপাট করে বিদেশে বেগমপাড়া তৈরি করছে।
রাষ্ট্রীয়ভাবে মাওলানা ভাসানীর জন্ম ও মৃত্যুবার্ষিকী পালনের আহ্বায়ক জানিয়ে গণ-অধিকার পরিষদের সদস্য সচিব ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর বলেন, দেশের বিদ্যমান সংকট উত্তরণে তত্ত্বাবধায়ক বা জাতীয় সরকার যে নামেই হোক ২/১ বছরের জন্য একটা নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার গঠন করতে হবে। আর জাতীয় সরকার হলে দেশও বাঁচবে, আওয়ামী লীগও নিরাপদ।
ভাসানী অনুসারী পরিষদের প্রেসিডিয়াম সদস্য মুক্তিযোদ্ধা নঈম জাহাঙ্গীরের সভাপতিত্বে ও ঢাকা মহানগর ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক হাবীবুর রহমান রিজুর পরিচালনায় আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন রাষ্ট্রসংস্কার আন্দোলনের নেতা অ্যাডভোকেট হাসনাত কাইয়ুম প্রমুখ।
এএইচআর/ওএফ