পরীর পাহাড়ের সব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর
চট্টগ্রামের পরীর পাহাড়ের সব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব কে এম আলী আজম।
বৃহস্পতিবার (৬ জানুয়ারি) চট্টগ্রাম নগরীর চান্দগাঁও থানার কালুরঘাট এলাকায় সমন্বিত দফতর এলাকা পরিদর্শন শেষে পরীর পাহাড় প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সচিব এ কথা বলেন। তিনি বলেন, শুধু পরীর পাহাড় নয়, দেশের সব জায়গার অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হবে। আমরা সে লক্ষ্যেই কাজ করছি।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব কে এম আলী আজম বলেন, পরীর পাহাড় একটি ঐতিহ্যবাহী পাহাড়। এ পাহাড় বহুকালের ঐতিহ্য বহন করছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলে দিয়েছেন পরীর পাহাড়ের সমস্ত অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের জন্য।
তিনি আরও বলেন, প্রায় ৭৫ একর জমি নিয়ে আমরা সমন্বিত অফিস কমপ্লেক্স ভবন নির্মাণের চিন্তা ভাবনা করছি। ইতোমধ্যে প্রধানমন্ত্রী বিষয়টি অবহিত হয়েছেন। আমরা পরবর্তী পদ্ধতিগত দিকগুলো অনুসরণ করে এ বিষয়ে যা করণীয় সেটি করব।
সচিব বলেন, দেশ উন্নত হচ্ছে। উন্নত দেশের সরকারি কাজ বা অফিসের কাজের পরিবেশ ভালো করা একান্ত প্রয়োজন। সুন্দর অফিসে বসে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কাজ করবেন। সেখান থেকে আমরা ভালো কাজ, গুণগত কাজ উপহার পাব। এটি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর একটি নির্দেশনা।
তিনি আরও বলেন, এখন থেকে আমরা যেসব অফিস করছি তার পরিবেশ, চারপাশের প্রতিবেশ, ভেতরের অবয়বে অনেক পরিবর্তন আসছে। এসব কিছুর চিন্তা করেই এই সমন্বিত দফতর। এখানে আবাসনের ব্যবস্থা থাকবে, চিকিৎসা সেবা, ক্লাব ঘরের ব্যবস্থা থাকবে। যারা সেবা গ্রহীতা তারা আসবেন, কি কি সুবিধা প্রয়োজন, তাদের সেবা দেওয়ার জন্য যা যা প্রয়োজন তার সবকিছুই এখানে থাকবে। সুবিধাভোগীদের সমস্ত বিষয় মাথায় রেখেই আমরা এ কার্যক্রম শুরু করব। আমরা আপাতত ৭৫ একর নিয়ে এগুচ্ছি। পরে প্রয়োজন অনুসারে এটি বৃদ্ধি করা হবে। অন্য জমি অধিগ্রহণ করব। সরকারের সকল বিভাগই প্রয়োজনীয়। কোনো একটি গুরুত্বপূর্ণ আবার কোনো একটি বিভাগ গুরুত্বহীন- এমনটি নয়। সবার সমন্বিত প্রয়াসেই দেশ এগিয়ে যাচ্ছে।
কর্ণফুলী নদীর তীরে হওয়ায় কোনো প্রভাব পড়বে কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এ রকম প্রকল্পগুলো করার আগে আমরা পরিবেশ অধিদফতরের একটা ইমপ্যাক্ট এনালাইসিস করে নেব। যদি পজিটিভ আসে তখন পরিবেশ অধিদফতরের সঙ্গে যোগাযোগ করে পদ্ধতিগতভাবে তাদের অনুমোদন নিয়ে নেব।
এদিকে, বৃহস্পতিবার দুপুরের দিকে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে কে এম আলী আজম বলেন, দুর্নীতি ও হয়রানিমুক্ত সরকারি সেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার আন্তরিকভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। সরকারের প্রত্যেক কর্মকর্তা-কর্মচারীকে দক্ষতা ও ভালো আচরণের মাধ্যমে মানুষের কাঙ্ক্ষিত সেবা নিশ্চিত করতে যুগোপযোগী প্রশিক্ষণের আওতায় আনা হচ্ছে। যিনি সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত দিতে পারবেন তিনিই দক্ষ কর্মকর্তা।
এ সময় বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার মো. কামরুল হাসান ও জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমান। মাল্টিমিডিয়ার মাধ্যমে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের নতুন নতুন উদ্যোগ ও উদ্ভাবনগুলো তুলে ধরেন উপ-পরিচালক (স্থানীয় সরকার) মো. বদিউল আলম। অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (উন্নয়ন) মোহাম্মদ মিজানুর রহমান ও অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (সার্বিক) ড. প্রকাশ কান্তি চৌধুরী, বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ের উপ-পরিচালক (স্থানীয় সরকার) মো. দেলোয়ার হোসেন, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোছা. সুমনী আক্তার, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো. নাজমুল আহসান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মু. মাহমুদ উল্ল্যাহ মারুফ, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মো. আবু রায়হান দোলনসহ বিভাগীয় ও জেলা প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
কেএম/ওএফ