‘বাংলাদেশের ধনী হওয়ার একমাত্র পথ রফতানি বাড়ানো’
পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম বলেছেন, ভিয়েতনামকে আমাদের গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করতে হবে। কেননা বাণিজ্য ক্ষেত্রে সে দেশের কাছ থেকে অনেক কিছুই শেখার আছে।
তিনি বলেন, যেহেতু খনিজ সম্পদ কম, তাই বাংলাদেশের ধনী হওয়ার একমাত্র পথ রফতানি বাড়ানো। আমাদের এফটিএ, পিটিএসহ নানা রকম বাণিজ্য চুক্তি করতে হবে। ইতোমধ্যে এগুলো নিয়ে কাজও শুরু হয়েছে। আমাদের আমদানি শুল্ক অনেক বেশি, এগুলো কমাতে হবে। সেই সঙ্গে বাণিজ্য অবকাঠামো সুবিধা আরও বাড়াতে হবে।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে ডেভেলপমেন্ট জার্নালিস্ট ফোরাম অব বাংলাদেশের (ডিজেএফবি) সেমিনার, প্রকাশনা ও বেস্ট রিপোর্টিং অ্যাওয়ার্ড বিতরণ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, এলডিসির চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় নেগোশিয়েশন (দরকষাকষি) সক্ষমতা বাড়াতে হবে। এছাড়া বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে মূল ভূমিকা নিতে হবে। কেননা এলডিসি থেকে উত্তরণ ঘটলে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রে অনেক বেশি কাজ করতে হবে।
ডিজেএফবি’র সভাপতি হুমায়ন কবীরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে আরও উপস্থিত ছিলেন পরিকল্পনা বিভাগের সচিব প্রদীপ রঞ্জন চক্রবর্তী। এতে ‘এলডিডিসি উত্তরণ : সম্ভাবনা ও চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মানীয় ফেলো ড. মোস্তাফিজুর রহমান।
আলোচনায় অংশ নেন পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর, পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য মামুন-আল-রশীদ, শরিফা বেগম ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) অতিরিক্ত সচিব আব্দুল বাকী।
ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, বৈষম্য কমাতে হবে। এটি করা না হলে টেকসই উত্তরণ সম্ভব নয়। এলডিসি থেকে উত্তরণের পর বাজার সুবিধা হারানো, স্বল্প সুদে ঋণ প্রাপ্তিসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সুযোগ হাতছাড়া হবে। এলডিসির চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় তিনটি বিষয়ে বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে। এগুলো হলো-বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও পরিবহন অবকাঠামোর উন্নয়ন।
তিনি বলেন, আমাদের আঞ্চলিক বাজারের দিকে নজর দিতে হবে। মধ্য আয়ের জার্নিতে সচেতন থাকতে হবে। প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়াতে হবে। শিক্ষা ক্ষেত্রে সংস্কার আনতে হবে। আমাদের বর্তমান বাজার সুবিধা-নির্ভর যে প্রতিযোগিতা আছে, তা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। এখন দক্ষতা ও উৎপাদনশীলতা-নির্ভর প্রতিযোগিতায় যেতে হবে। জিডিপি প্রবৃদ্ধির সঙ্গে শোভন কর্মসংস্থান বাড়ানোর ব্যবস্থা নিতে হবে। মাথাপিছু আয়ের সুষম বণ্টন করতে হবে।
প্রদীপ রঞ্জন চক্রবর্তী বলেন, আমরা তথ্য প্রযুক্তির ক্ষেত্রে অনেক পিছিয়ে আছি। চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় নিজেদের প্রস্তুতি ঠিক রাখতে হবে। ভয় পাওয়ার কিছু নেই।
ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, এলডিসি থেকে উত্তরণের পর অন্যতম ইস্যু হচ্ছে প্রতিযোগিতা। সেটি ঠিকই আছে। এজন্য অবশ্যই দরকষাকষির বা আলোচনার দক্ষতা বাড়াতে হবে। আমাদের সমস্যা হলো কিছু চাইতে হলে দিতে হবে। সেটি অনেক সময় আমরা বুঝতে পারি না। অর্থাৎ কোনো দেশ থেকে বাণিজ্য সুবিধা নিতে গেলে তাদেরও কিছু না কিছু সুবিধা দিতে হবে। বিভিন্ন ক্ষেত্রে আমাদেরও শুল্ক অনেক বেশি। সেগুলো কমানো দরকার।
এসআর/আরএইচ