ইউল্যাবের সেই ছাত্রীর তিন বন্ধু গ্রেপ্তার, ধর্ষণ মামলা
রাজধানীর ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশের (ইউল্যাব) শিক্ষার্থীকে ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় পাঁচ জনকে আসামি করে মামলা করেছেন নিহত তরুণীর বাবা। মামলার এজাহারে ওই তরুণীকে মদ্যপান করিয়ে ধর্ষণ ও হত্যার কথা বলা হয়েছে। এতে সহযোগী হিসেবে ৪ জনের কথা বলা হয়েছে। এ ঘটনায় গ্রেপ্তার রয়েছেন ৩ জন।
রোববার (৩১ জানুয়ারি) মোহাম্মদপুর থানায় মামলা দায়ের করা হয়। ৫ আসামির মধ্যে ওই তরুণীর বন্ধু মর্তুজা রায়হান চৌধুরীকে (২১) ধর্ষণকারী হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। অন্য ৪ আসামির মধ্যে ৩ জন হচ্ছেন- নুহাত আলম তাফসির (২১), আরাফাত (২৮) ও নেহা (২৫)। আরেকজনের নাম জানা যায়নি। মামলায় অজ্ঞাত হিসেবে তাকে উল্লেখ করা হয়েছে।
মোহাম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আব্দুল লতিফ ঢাকা পোস্টকে মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, তদন্ত চলছে।
এ দিকে ঘটনার বর্ণনা দিয়ে মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, গত ২৮ জানুয়ারি বিকেল ৪টায় মর্তুজা রায়হান ওই তরুণীকে নিয়ে মিরপুর থেকে আসামি আরাফাতের বাসায় যান। আরাফাতের বাসায় স্কুটার রেখে আরাফাত, ওই তরুণী ও রায়হান একসঙ্গে উবারে করে উত্তরা ৩ নম্বর সেক্টরের ব্যাম্বুসুট রেস্টুরেন্টে যান। সেখানে আগে থেকেই আরেক আসামি নেহা এবং একজন সহপাঠী (তরুণ) উপস্থিত ছিলেন। সেখানে আসামিরা ওই তরুণীকে জোর করে ‘অধিক মাত্রায়’ মদপান করান।
এজাহারে বলা হয়েছে, মদ্যপানের একপর্যায়ে ভুক্তভোগী তরুণী অসুস্থ বোধ করলে রায়হান তাকে মোহাম্মদপুরে তার এক বান্ধবীর বাসায় পৌঁছে দেওয়ার কথা বলে নুহাতের বাসায় নিয়ে যান। সেখানে তরুণীকে একটি রুমে নিয়ে ধর্ষণ করেন রায়হান। এ সময় রায়হানের বন্ধুরাও রুমে ছিল। তাদের চোখের সামনেই ধর্ষণ করা হয়।
ধর্ষণের পর রাতে ওই তরুণী অসুস্থ হয়ে বমি করলে রায়হান তার আরেক বন্ধু অসিম খান কোকোকে ফোন দেন। সেই বন্ধু পরদিন এসে ওই তরুণীকে প্রথমে ইবনে সিনা ও পরে আনোয়ার খান মডার্ন মেডিকেল কলেজে হাসপাতালে ভর্তি করেন। দুই দিন লাইফ সাপোর্টে থাকার পর রোববার তরুণী মারা যান।
এজাহারে ধর্ষক হিসেবে মর্তুজা রায়হান চৌধুরীর নাম উল্লেখ করা হয়েছে। অন্যদের ভূমিকা ‘জোর করে মদ পান করিয়ে ধর্ষণের সহযোগিতা’ উল্লেখ করা হয়েছে।
ঘটনার বিষয়ে ওসি ঢাকা পোস্টকে বলেন, তরুণীর মৃত্যুর কারণ এখনও নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে বিস্তারিত বলা যাবে। ময়নাতদন্তের জন্য নিহতের মরদেহ শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে রাখা আছে।
এদিকে, গত ৭ জানুয়ারি রাজধানীর কলাবাগানে একই ধরনের একটি ঘটনায় আনুশকা নূর আমিন নামের মাস্টারমাইন্ড স্কুলের ‘ও’ লেভেলের শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়। সেদিন বান্ধবীর বাসায় জন্মদিন পালন করতে যান আনুশকা। সেখানেই শারীরিক নির্যাতনের পর তাকে হত্যা করা হয় বলে পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়। ওই ঘটনায় কলাবাগান থানায় মামলা করেন আনুশকার বাবা। আসামি ইফতেখার ফারদিন দিহান বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন।
এআর/এইচকে