জেল থেকে বেরিয়ে বারবার ছিনতাইয়ে জড়ান ইলিয়াস
চট্টগ্রাম নগরীর বায়েজিদ বোস্তামী থানার শেরশাহ মিটার মোড় থেকে ২২ মামলার আসামি মো. ইউসুফ প্রকাশ ইলিয়াছসহ (৩২) দুইজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার ( ২৩) রাত সাড়ে ১১টার দিকে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
পুলিশ বলছে, ইলিয়াস কারাগার থেকে বের হয়ে প্রত্যেকবার ছিনতাই কাজে জড়িয়ে পড়ে। আসামিদের ব্যবহৃত সিএনজিচালিত অটোরিকশাটি দ্রুত চালানোর জন্য গ্যাসের পরিবর্তে পেট্রোল ব্যবহার করা হয়।
গ্রেফতার অপর দুইজন হলে ; মো. ইউসুফ প্রকাশ ইলিয়াছ (৩২) ও মো. সুমন মিয়া (২৭)। তাদের কাছ থেকে দুইটি কিরিচ উদ্ধার করা হয়েছে। এছাড়া নম্বর প্লেট স্কচটেপ দিয়ে মোড়ানো অবস্থায় একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা জব্দ করা হয়েছে।
শুক্রবার ( ২৪ ডিসেম্বর) চট্টগ্রাম বায়েজিদ বোস্তামী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. কামরুজ্জামান ঢাকা পোস্টকে বলেন, মো. ইউসুফ প্রকাশ ইলিয়াস পেশাদার ছিনতাইকারী। ২০০৫ সাল থেকে চট্টগ্রাম নগরীতে ছিনতাই করে আসছিলেন। ২০১৪ সাল জেলে ছিনতাইকারী হামকা নুর আলম গ্রুপের সদস্যদের সঙ্গে ইলিয়াসের পরিচয় হয় । ইলিয়াছ জেলখানায়ই টানা পার্টির সদস্যদের সঙ্গে যুক্ত হয়। ২০১৪ সালের পর জেল থেকে মুক্ত হয় ইলিয়াস। এরপর পার্টির সদস্যদের নিয়ে চট্টগ্রাম নগরীতে রিকশার যাত্রী ও পথচারীদের ব্যাগ টেনে নিয়ে ছিনতাই শুরু করে।
তিনি বলেন, ইলিয়াসসহ তার সঙ্গীরা সিএনজিচালিত অটোরিকশা নিয়ে চট্টগ্রাম নগরীর বিভিন্ন সড়ক ঘুরে। সুযোগ বুঝে মানুষের কাছে থাকা ব্যাগ বা মোবাইল ছিনিয়ে নিয়ে অটোরিকশাযোগে পালিয়ে যায় তারা। ছিনতাই করার সময় ছিনতাইকারী চক্রটির লক্ষ্য থাকে রিকশায় থাকা ব্যাগসহ নারী যাত্রীরা। বিশেষ করে ভোরে বা সন্ধ্যা ৭-৮ টার পর রাস্তাঘাটে যানবাহন চলাচল কম থাকার সময় তারা ছিনতাই করে। এই ছিনতাই চক্রটি টানা পার্টি হিসেবে পরিচিত।
তিনি আরও বলেন, ২০১৮ সালে খুলশী থানার জাকির হোসেন রোডে এশিয়ান ওমেন্স ইউনিভার্সিটির শিক্ষক ব্রিটিশ নাগরিক জুলিয়া ডেভিসের ব্যাগ ছিনতাই করে পুলিশের হাতে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় গ্রেফতার হয়েছিলেন ইউসুফ প্রকাশ ইলিয়াস। এরপর জেল থেকে জামিনে মুক্তি পাওয়ার পর পুনরায় ছিনতাইয়ের কাজে জড়িয়ে পড়েন। ইলিয়াস প্রতিবারই জেলখানা থেকে বের হওয়ার পর নতুন সদস্যদের নিয়ে ছিনতাই শুরু করেন। ২০১৬ সালে বায়েজিদ বোস্তামী থানা পুলিশ অস্ত্রসহ তাকে গ্রেফতার করেছিল।
পুলিশ কর্মকর্তা মো. কামরুজ্জামান আসামিদের গ্রেফতারের বর্ণনা দিয়ে বলেন, বৃহস্পতিবার রাতে বিআরএসএম মোড়ে এক ব্যক্তির ব্যাগ ছিনতাইকারীরা অটোরিকশাযোগে এসে টান দিয়ে নিয়ে চলে যায়। এ সময় ওই ব্যক্তি ছিনতাইকারী বলে চিৎকার শুরু করেন। তখন বায়েজিদ থানা পুলিশের একটি দল মোটরসাইকেল নিয়ে টহল দিচ্ছিল। চিৎকার শুনে টহল দল সিএনজি অটোরিকশাটিকে ধাওয়া করে শেরশাহ মিটার মোড় থেকে স্থানীয়দের সহায়তায় আটক করেন।
তিনি বলেন, আসামিদের ব্যবহৃত সিএনজি অটোরিকশাটি দ্রুত চলানোর জন্য গ্যাসের পরিবর্তে পেট্রোলে চলে। পুলিশ বা অন্য কেউ তাদের ধাওয়া করলে দ্রুত গাড়ি নিয়ে পালাতে পারে এ জন্য তারা গ্যাসের পরিবর্তে পেট্রোল ব্যবহার করে। তাদের বিরুদ্ধে আজ শুক্রবার বায়েজিদ বোস্তামী থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
কেএম/এসকেডি