পাপুলের সাজা দেশের জন্য লজ্জাজনক : পররাষ্ট্রমন্ত্রী
মানব ও অর্থপাচারের দায়ে কুয়েতে বাংলাদেশের সংসদ সদস্য কাজী শহিদ ইসলাম পাপুলের চার বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের ঘটনা দেশের জন্য লজ্জা ও দুঃখজনক বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।
শনিবার (৩০ জানুয়ারি) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন মেঘনায় প্রথম বঙ্গবন্ধু ডিপ্লোম্যাটিক টেনিস টুর্নামেন্টের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে পাপুল প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি। পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘উনার বিচার হয়েছে সেখানে। যেটা আমরা পত্রপত্রিকার মারফতে শুনেছি। কুয়েত সরকার ওনার সম্পর্কে আমাদেরকে কিছু বলেনি। এটা খুবই দুঃখজনক। অবশ্যই এটা দুঃখজনক এবং লজ্জাজনক।’
গত বৃহস্পতিবার কুয়েতের ফৌজদারি আদালত বাংলাদেশের সংসদ সদস্য পাপুলের বিরুদ্ধে চার বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেন। একইসঙ্গে লক্ষ্মীপুর–২ আসনের স্বতন্ত্র এই এমপিকে ১৯ লাখ কুয়েতি দিনার জরিমানা করা হয়েছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, ‘রায়ের বিষয়ে কুয়েত সরকার এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানায়নি। তিনি আটক হওয়ার আমরা জানতে চেয়েছিলাম, তারা কিছুই জানায়নি। আমরা পত্রপত্রিকার মাধ্যমে পাপুলের সাজার কথা জানতে পেরে আমাদের রাষ্ট্রদূতকে জানানোর জন্য বলেছি।’
কুয়েত সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে জানালে সাজাপ্রাপ্ত এই সংসদ সদস্যের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হবে কি না- জানতে চাইলে মোমেন বলেন, ‘বিষয়টা তারা আমাদের সরকারিভাবে জানালে পরে আমরা সংসদকে জানাব। তখন বিধি মোতাবেক উনার সম্পর্কে কী করা হবে দেখা যাবে।’
মানব ও অর্থপাচারের অভিযোগে কুয়েতের ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্টের (সিআইডি) কর্মকর্তারা গত ৬ জুন শহিদ ইসলামকে তার বাসা থেকে আটক করে।
সাধারণ শ্রমিক হিসাবে কুয়েত গিয়ে বিশাল সাম্রাজ্য গড়া পাপুল ২০১৮ সালে লক্ষ্মীপুর-২ (রায়পুর) আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। পাপুলের মালিকানাধীন মারাফি কুয়েতিয়া গ্রুপে প্রায় ১৫ থেকে ২০ হাজার প্রবাসী বাংলাদেশি কাজ করেন বলে কুয়েতে বাংলাদেশ কমিউনিটির ধারণা।
কোম্পানির ওয়েবসাইট থেকে জানা যায়, সেবা খাত, নিরাপত্তা, নির্মাণ, আবাসন, পরিবহন, তেল শোধন প্রভৃতি খাতে কার্যক্রম রয়েছে মারাফি কুয়েতিয়া গ্রুপের। কুয়েতের বাইরে মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকটি দেশে ব্যবসায় রয়েছে তাদের।
পাপুলের বিরুদ্ধে ওঠা মানবপাচারের অভিযোগ তদন্ত হওয়ার বিষয়ে গত ফেব্রুয়ারিতে দেশ-বিদেশের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়েছিল। সেসময় কুয়েত সিআইডির বরাত দিয়ে বাংলাদেশ থেকে মানবপাচার নিয়ে বেশ কয়েকটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে কুয়েতি পত্রিকা আল কাবাস ও আরব টাইমস।
এনআই/এইচকে