নালায় পড়ে নিখোঁজ শিশু, যা বললেন চসিক মেয়র
চট্টগ্রাম নগরীর চশমা খাল সংলগ্ন নালা থেকে খেলনা তুলতে গিয়ে নিখোঁজ হয়েছে কামাল (১০) নামের এক শিশু। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সেই খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী।
এ সময় তিনি বলেন, এখানে জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের কাজ চলছে। এখানে কিন্তু কামাল পড়ে যায়নি। তারা নালায় একটি খেলনা ও বোতল দেখছিল। তারা সেগুলো তোলার জন্য সেখানে নামে। নামার পড়ে ওরা কয়েকটা বোতলও তোলে। কামালের সঙ্গে যে ছিল সে সাঁতরে উঠে আসে। কিন্তু কামাল নিচের দিকে ডুবে যায়। এখানে কামাল পড়ে যায়নি। খেলনা কুড়াতে গিয়ে দুর্ঘটনা ঘটেছে।
চট্টগ্রাম নগরীর অনেক নালার উপর স্ল্যাব নেই এই প্রশ্ন করা হলে মেয়র বলেন, এখানে জলাবদ্ধতার কাজ চলছে। কাজ চলার মধ্যে স্ল্যাব কিভাবে দিব।
রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, আমাদের যে সমস্ত নালায় কাজ চলছে না, সেখানে অলরেডি আমরা স্ল্যাব বসাচ্ছি। স্ল্যাব বসাতে, স্ল্যাব তৈরি করে কিউরিং করতে ১৫ দিন সময় লাগে। নালার উপর স্ল্যাব আগে যেভাবে ভাঙ্গা ছিল, উঠানো ছিল এখন কিন্তু তেমন নেই। প্রায় ফুটপাতে আমরা অলরেডি স্ল্যাব দিয়ে দিয়েছি। আমরা একটা টার্গেট নিয়েছি জানুয়ারির মধ্যে সমগ্র চট্টগ্রামে নালার স্ল্যাব বসানো হবে। তবে যেগুলোতে জলাবদ্ধতা প্রকল্পের কাজ চলছে সেগুলোতে পরে দেওয়া হবে।
তিনি বলেন, অনেক নালা আছে স্ল্যাব দেওয়ার উপযুক্ত না। স্ল্যাব দেওয়া সম্ভবও না। এখানে (ঘটনাস্থলে) কাজ শেষ হলে ব্যারিয়ার দেওয়া যাবে। অথবা ফেন্সিং করে দেওয়া যাবে। অনেক নালা আছে যেখানে ফেন্সিংও করা যায় না। কারণ নালার পিছনে দোকান ও বাড়ি থাকে। সেখানে দোকানদাররা স্ল্যাব দেয়, সেগুলোতে আবার ফাঁক থেকে যায়।
জলাবদ্ধতা প্রকল্পের কারণে তো কিছু জায়গা ভাগাভাগি হয়ে গেছে, এটা রক্ষণাবেক্ষণর দায়িত্ব কার এমন প্রশ্নের জবাবে মেয়র বলেন, এটা জলাবদ্ধতা নিরসনে যে মেগাপ্রকল্পের কাজ চলছে অন্য একটি সংস্থার অধীনে। এখানে এখনও কাজ চলমান রয়েছে।
খালে ময়লা আবর্জনার পরিমাণ বেশি হওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, ময়লা আবর্জনা বেশি হওয়ার কারণ আছে। চশমা খাল থেকে পানি এসব নালা দিয়ে নামে। দোকানদারেরা ককশিট নালায় ফেলে। স্রোত এসে সব ময়লা এখানে জমছে। এখানে একদিন নালা পরিষ্কার করে গেলে, পরদিন এসে দেখা যায়, ময়লা ফেলে আবার নালা ভরে ফেলেছে। জনগণকে তাই সচেতন হওয়ার জন্য আহ্বান জানাই। তারা যেন নালায় ময়লা না ফেলে। ময়লা ফেলার জন্য আমরা বিন দিয়েছি। আমাদের লোকজন নিদিষ্ট জায়গা থেকে ময়লা নিয়ে আসছে। চট্টগ্রামে পলিথিন বন্ধ করার উদ্যোগ নিয়েছি। তিনটি বাজার পলিথিনমুক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। পলিথিন ব্যবহার বন্ধ করব।
নালা দেখিয়ে তিনি বলেন, দেখছেন নালায় থাকা বেশিরভাগই হচ্ছে পলিথিন। এখানে পলিথিন আর ককশিট ছাড়া অন্য কিছু নাই।
কোনো প্রকল্প চললে ঠিকাদারের দায়িত্ব থাকে জননিরাপত্তা নিশ্চিত করা এখানে কি কারো কোন ব্যর্থতা বা সম্বন্বয়হীনতা ছিল এমন প্রশ্নের জবাবে মেয়র বলেন, স্বাভাবিক ভাবে নালা-নর্দমাসহ যে কোনো কাজ করার সময় একটি বেড়া দিয়ে দিতে হয়। যেন কোনো দুর্ঘটনা না হয়। কাজ চলমান অবস্থায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।
আজকের দুর্ঘটনার জন্য কাকে দায়ী করবেন এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এই দুর্ঘটনার জন্য কাউকে দায়ী করব না। কারণ নিখোঁজ ছেলে ময়লা কুড়াতে নেমে নিখোঁজ হয়েছেন।
তিনি বলেন, সবধরনের কাজে অবশ্যই সমন্বয় আছে। আমরা আলাপ আলোচনা করেই সব ধরনেই কাজ করছি। মেগা প্রকল্পের কাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত সিটি করপোরেশন এখানে কিছু করতে পারছে না। আমরা কাজ করার আগে সবাইকে নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিতে বলেছি।
কেএম/আইএসএইচ