‘ডিবি পাঠাইতেছি তোরে বাইন্দা নিয়ে আসবে’ বলে ফাঁসলেন ডা. মুরাদ
সম্প্রতি ভাইরাল হওয়া একটি ফোনকলে শোনা যায়, চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহিকে রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে যেতে বলছেন মঙ্গলবার পদত্যাগপত্র জমা দেওয়া তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান। যদি মাহি নিজ ইচ্ছায় সেখানে না যান তাহলে তাকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ব্যবহার করে তুলে আনার হুমকি দেন তিনি।
ফোনকলে তিনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর যেসব সংস্থাকে ব্যবহার করার কথা বলেছিলেন তার মধ্যে অন্যতম ছিল ডিবি পুলিশ। ডিবির নাম উল্লেখ করায় জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি হতে পারেন তিনি।
মঙ্গলবার (৭ ডিসেম্বর) দুপুরে ডিবি কার্যালয়ের বাইরে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ডিবির যুগ্ম-কমিশনার হারুন অর রশিদ এ কথা জানান।
তিনি বলেন, ‘আমি অন্য কোনো বাহিনীর কথা বলব না। যেহেতু তিনি (ডা. মুরাদ হাসান) ডিবির কথা উল্লেখ করেছেন। প্রয়োজনে তাকে আমরা জিজ্ঞাসাবাদ করব।’
অডিও কলের রেকর্ডটি কীভাবে ফেসবুকে ছড়িয়েছে জানতে চাইলে হারুন বলেন, ‘আনুষ্ঠানিকভাবে কেউ যদি অভিযোগ দায়ের করে এবং আমাদের ডিবি সাইবার ক্রাইম ইউনিটে অভিযোগ আসে তাহলে আমরা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেব। কোনোকিছু ভাইরাল হলে আমাদের ডিবির সাইবার ইউনিট দেখভাল করে এবং তদন্ত করে।’
একজন সাংবাদিক হারুনকে প্রশ্ন করেন, সেদিন মাহি ও মুরাদের ফোনালাপের পর ধর্ষণ সংঘটিত হয়েছিল কি না? এই প্রশ্নের জবাবে হারুন বলেন, ‘এ ধরনের অভিযোগ আমাদের কাছে এখনো আসেনি। আমরা প্রয়োজনে সবার সঙ্গেই কথা বলব।’
বেশ কয়েকদিন ধরেই বিতর্কিত মন্তব্যের জেরে আলোচনা-সমালোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ডা. মুরাদ হাসান। বিশেষ করে রাষ্ট্রধর্ম, রাজনীতি, খালেদা জিয়ার নাতনি এবং সবশেষ ফোনালাপ ফাঁস নিয়ে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েন তিনি। তার উল্টাপাল্টা মন্তব্য এবং অস্বাভাবিক আচরণের কারণে দলীয় সহকর্মীদেরও বিব্রত হতে হয়েছে।
এসবের জেরে সোমবার রাতে ডা. মুরাদ হাসানকে মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগের নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশের পর আজ মঙ্গলবার (৭ ডিসেম্বর) দুপুরে ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করেন তিনি।
এদিকে মুরাদ হাসানকে আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কারের বিষয়ে আগামী কার্যনির্বাহী সভায় সিদ্ধান্ত হবে বলে জানিয়েছেন দলটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ। সংশ্লিষ্টদের মতে, দল থেকে বহিষ্কার হলে তাকে সংসদ সদস্যপদও হারাতে হতে পারে।
মুরাদ হাসান পেশায় চিকিৎসক। তিনি আওয়ামী লীগপন্থি চিকিৎসকদের সংগঠন স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (স্বাচিপ) ও একাত্তরের ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটির কেন্দ্রীয় সদস্য।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জামালপুর-৪ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন ডা. মো. মুরাদ হাসান। ২০০৮ সালেও তিনি একই আসনে থেকে নির্বাচিত হয়েছিলেন। ২০১৯ সালে সরকার গঠনের সময় মুরাদ হাসানকে স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হয়। পরে ৫ মাসের মাথায় ওই বছরের ১৯ মে তার দফতর পরিবর্তন করে তথ্য প্রতিমন্ত্রী করা হয়।
এআর/এইচকে/জেএস