মুক্তিযোদ্ধাদের সুযোগ-সুবিধা বাড়াতে কাজ করছেন প্রধানমন্ত্রী
মহান স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদ্যাপনের অংশ হিসেবে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আয়োজনে ‘পথে পথে বিজয়’ শিরোনামে আঞ্চলিক বীর মুক্তিযোদ্ধা সমাবেশ আজ সোমবার (৬ ডিসেম্বর) যশোরে অনুষ্ঠিত হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী বলেন, মহান স্বাধীনতা বাঙালি জাতির ইতিহাসে সর্বশ্রেষ্ঠ অর্জন। বীর মুক্তিযোদ্ধারা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বীর মুক্তিযোদ্ধাদের যথাযথ মর্যাদা প্রদর্শন এবং সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধির জন্য নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। অসচ্ছল বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য ৩০ হাজার বীরনিবাস নির্মাণকাজ চলছে। এছাড়া মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানী ভাতা মাসিক ২০ হাজার টাকায় উন্নীত করা হয়েছে।
তিনি বলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধাদের বিনামূল্যে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। ইতোমধ্যে বিভিন্ন বিশেষায়িত হাসপাতাল এবং জেলা-উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া সারাদেশে বধ্যভূমি সংরক্ষণ এবং সকল বীর মুক্তিযোদ্ধার কবর একই ডিজাইনে নির্মাণের কাজও চলমান রয়েছে।
এ সময় মন্ত্রী নতুন প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে নিজেদের যোগ্য করে তুলতে আহ্বান জানান।
বিজয়ের গল্পগুলো রোমন্থন করার উদ্দেশ্যে অনুষ্ঠানের এক অংশে আগত বীর মুক্তিযোদ্ধারা তাদের সংগ্রামের দিনগুলোর স্মৃতিচারণা করেন। পাশাপাশি মহাসমাবেশে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শিত হয়। ‘পথে পথে বিজয়’ শিরোনামে একটি দেশাত্মবোধক মৌলিক গান পরিবেশিত হয়। এরপর সুধীজন সম্মাননা, সংবর্ধনা, পুরস্কার বিতরণ করা হয়। সবশেষে সাংস্কৃতিক আয়োজনের মাধ্যমে, যশোরে আয়োজিত ‘পথে পথে বিজয়’ শিরোনামের আঞ্চলিক সমাবেশ শেষ হয়।
মন্ত্রী যশোরে প্রায় ২ কোটি ৫০ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত সদর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স এবং শহীদ কর্নেল নাজমুল হুদার (বীর বিক্রম) নামে নির্মিত সড়ক উদ্বোধন করেন।
যশোর জেলা প্রশাসক মো. তমিজুল ইসলাম খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্য, সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য নাহিদ ইজহার খান, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব খাজা মিয়া, যশোর পুলিশ সুপার প্রলয় কুমার জোয়ার্দারসহ স্থানীয় বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং আওয়ামী লীগের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
প্রসঙ্গত, মহান স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী যথাযোগ্য মর্যাদায় উদযাপনের জন্য গঠিত মন্ত্রিসভা কমিটি ৫০টি জাতীয় কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। এর মধ্যে একটি কর্মসূচি হলো ‘পথে পথে বিজয়’ শিরোনামে দেশের বিভিন্ন স্থানে শত্রুমুক্ত হবার দিনে আঞ্চলিক মুক্তিযোদ্ধা সমাবেশ। গত শুক্রবার দিনাজপুরে উপ-আঞ্চলিক সমাবেশের মধ্য দিয়ে এই আয়োজন শুরু হয়। সর্বমোট ৭টি আঞ্চলিক ও ১৪টি উপ-আঞ্চলিক এই মহাসমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে।
৭ ডিসেম্বর গোপালগঞ্জে, কুমিল্লায় ৮ ডিসেম্বর, জামালপুরে ১০ ডিসেম্বর, কক্সবাজারে ১২ ডিসেম্বর এবং সিলেটে ১৫ ডিসেম্বর আঞ্চলিক মহাসমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। প্রতিটি অঞ্চলেই সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে। দিনব্যাপী আয়োজিত অনুষ্ঠানে পার্শ্ববর্তী অঞ্চলের বীর মুক্তিযোদ্ধাসহ অন্যান্য শ্রেণিপেশার মানুষ অংশ নেবেন।
পিএসডি/এইচকে