জাওয়াদ নামটি দিল কারা, এরপর আসছে কোনটি
পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগর এবং তৎসংলগ্ন এলাকার গভীর নিম্নচাপটি ঘনীভূত হয়ে একই এলাকায় ঘূর্ণিঝড় ‘জাওয়াদ’ এ পরিণত হয়েছে। নামটি দেওয়া সৌদি আরবের। জাওয়াদ অর্থ উদার বা দয়ালু কিংবা দানশীল।
বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদফতর তাদের পাঁচ নম্বর বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে ঝড়ের কেন্দ্রের ৫৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ৮৮ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের কাছাকাছি সাগর উত্তাল রয়েছে।
ঝড়টি শনিবার নাগাদ ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশ-উড়িষ্যা উপকূলে আঘাত হানতে পারে। এর আঘাত বাংলাদেশে না এলেও এর প্রভাবে অন্তত দুদিন বৃষ্টিপাত কিংবা ঝড়ো হাওয়া বয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণ যেভাবে হয়
২০০৪ সালের আগে ঝড়গুলোকে বিভিন্ন নম্বর দিয়ে শনাক্ত করা হতো। কিন্তু সেসব নম্বর সাধারণ মানুষের কাছে দুর্বোধ্য হওয়ায় ফলে সেগুলোর পূর্বাভাস দেওয়া, মানুষ বা নৌযানগুলোকে সতর্ক করাও কঠিন মনে হতো। এ কারণেই বঙ্গোপসাগর ও আরব সাগরের উপকূলবর্তী অঞ্চলে ঝড়ের নামকরণ শুরু হয়। এর আগে যুক্তরাষ্ট্র বা অস্ট্রেলিয়া অঞ্চলে ঝড়ের নামকরণ হতো।
সাগরভেদে সৃষ্ট হওয়া ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণ করে থাকে রিজিওনাল স্পেশালাইজড মেটেওরোলজিক্যাল সেন্টার (আরএসএমসি) এবং ট্রপিক্যাল সাইক্লোন ওয়ার্নিং সেন্টার (টিসিডব্লিউসি)। ভারত মহাসাগরের উত্তর অংশ, বঙ্গোপসাগর এবং আরব সাগরে সৃষ্ট ঝড়গুলোর নামকরণে আদর্শ পদ্ধতি অবলম্বন করে নয়া দিল্লিতে অবস্থিত আরএসএমসি।
ক্রান্তীয় ঝড়ের বিষয়ে গঠিত ওয়ার্ল্ড মেটেরোলজিক্যাল অর্গানাইজেশন/ইউনাইটেড নেশনস ইকোনমিক অ্যান্ড সোশ্যাল কমিশন ফর এশিয়া অ্যান্ড প্যাসিফিক প্যানেলের আটটি সদস্য দেশ ২০০৪ সালে ৬৪ নাম প্রস্তাব করে। সেখান থেকে নামকরণ শুরু হয়।
২০১৮ সালে ৪৫তম সেশনে আরও পাঁচটি দেশ যুক্ত হয়। বর্তমানে প্যানেলে ১৩টি দেশ রয়েছে। দেশগুলো হচ্ছে, বাংলাদেশ, ভারত, মালদ্বীপ, মিয়ানমার, ওমান, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, থাইল্যান্ড, ইরান, কাতার, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও ইয়েমেন। গত বছর আম্ফানের মধ্য দিয়ে আগের প্রস্তাবিত নামগুলো শেষ হয়। সদস্য দেশগুলো নতুন করে আরও কতগুলো নামের তালিকা জমা দিয়েছে। সেখান থেকেই গুলাব নামটি নেওয়া হয়েছে। পরবর্তী দুটি ঘূর্ণিঝড়ের নাম হচ্ছে- আসানি (শ্রীলঙ্কা) ও সিতরাং (থাইল্যান্ড)।
ভারত মহাসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড়কে সাইক্লোন বলা হলেও আটলান্টিক মহাসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড়কে বলা হয় হারিকেন। অন্যদিকে প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড়কে বলা হয় টাইফুন।
আরএইচ