নারী ও শিশু নির্যাতন বন্ধের আহ্বান
করোনার সময়ে নারীর প্রতি সহিংসতা উদ্বেগজনক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে উল্লেখ করে নারী ও শিশু নির্যাতন বন্ধের আহ্বান জানিয়েছে জাতীয় নারী নির্যাতন প্রতিরোধ ফোরাম (জেএনএনপিএফ)।
সোমবার (২৯ নভেম্বর) ‘নারীর প্রতি সহিংসতার চিত্র বিশ্লেষণ এবং জাতীয় নারী নির্যাতন প্রতিরোধ ফোরামের পদক্ষেপ’ শীর্ষক এক ওয়েবিনারে আলোচকরা এ আহ্বান জানান।
বক্তারা বলেন, দেশে নারী ও শিশু নির্যাতন, নিপীড়ন ও ধর্ষণের মতো ঘটনা বেড়েই চলেছে। করোনাকালীন মানুষের আয় হ্রাস, কর্মসংস্থানের অভাব, সীমিত বিচারিক কার্যক্রম, মামলার বিষয়ে অনাগ্রহ, পুরুষের অতিরিক্ত ঘরে অবস্থান ইত্যাদি কারণে নারীর প্রতি সহিংসতা উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধ ও প্রতিকার এবং নারীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ইউনিয়ন পর্যায় থেকে শুরু করে সব পর্যায়ে নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধ কমিটি গঠন করার দাবি জানাচ্ছি আমরা।
ওয়েবিনারে জেএনএনপিএফ (২৬টি মানবাধিকার সংগঠনের প্ল্যাটফর্ম) দেশের ২০টি জেলা থেকে পাওয়া তথ্য অনুয়ায়ী দাবি করে চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে অক্টোবর পর্যন্ত দেশের ২০টি জেলায় ৬০৯টি পারিবারিক নির্যাতন, ৪২টি ধর্ষণ, ২৩৯টি যৌতুকের জন্য নির্যাতন এবং ১১২টি বাল্যবিবাহের মতো ঘটনার অভিযোগ তাদের কাছ এসেছে। এছাড়া এই সময়ে ৭২টি বহু বিবাহ, ৭৩টি তালাক, ১টি হত্যা ও ৫টি আত্মহত্যা, ১৩২টি দাম্পত্য কলহ এবং অন্যান্য ৯৪টি ঘটনাসহ সর্বমোট ১৩৭৯টি অভিযোগ নথিভুক্ত হয়েছে। তবে ১৩৭৯টি কেসের মধ্যে ৮৬৩টি নিষ্পত্তি হয়েছে এবং ৪২২টি কেস চলমান রয়েছে।
অ্যাকশনএইড বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ্ কবির বলেন, অ্যাকশনএইড বাংলাদেশ এ বিষয়ে ২০০৬ সাল থেকে প্রতিরোধ ফোরামের মাধ্যমে তৃণমূল পর্যায়ে কাজ করে আসছে। করোনা মহামারিতেও আমরা একত্রে চ্যালেঞ্জ নিয়ে কাজ করেছি। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টাই পারে নারী নির্যাতনসহ সব ধরনের সহিংসতার প্রতিরোধ করতে।
অ্যাকশনএইড বাংলাদেশে ম্যানেজার (উইম্যান রাইটস অ্যান্ড জেন্ডার ইক্যুইটি) মরিয়ম নেসার সঞ্চালনায় ওয়েবিনারে আলোচনায় অংশ নেন জেএনএনপিএফ এর সভাপতি মমতাজ আরা বেগম, সাধারণ সম্পাদক মাহমুদা বেগম, ফরিদপুরে অবস্থিত রাসিনের নির্বাহী পরিচালক আছমা আক্তার মুক্তা, নেত্রকোসায় অবস্থিত সাবলম্বী উন্নয়ন সংস্থার ম্যানেজার কুহিনুর বেগম, মেহেরপুর মানব উন্নয়ন কেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালক আছাদুজ্জামান সেলিম।
এএসএস/জেডএস