রুট পারমিটবিহীন বাস জব্দ করা হবে : মেয়র তাপস
আমরা এখন অত্যন্ত কঠোর, ঢাকা শহরের গণপরিবহনে শৃঙ্খলা আনবই উল্লেখ করে দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস বলেছেন, ঢাকা শহরে চলাচল করা রুট পারমিটবিহীন বাস জব্দ করা হবে।
রোববার (২৮ নভেম্বর) ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নগর ভবনের বুড়িগঙ্গা হলে বাস রুট রেশনালাইজেশন কমিটির ১৯তম সভা শেষে তিনি এ কথা বলেন।
মেয়র তাপস বলেন, ঢাকা শহরের গণপরিবহনে বিশৃঙ্খলা রয়েছে। সেজন্য আমরা আরো কঠোর হব। আমরা দেখেছি রুট পারমিট নেওয়া হয় একটি যাত্রাপথে, কিন্তু সেই যাত্রাপথে বাস না চালিয়ে অন্য যাত্রাপথে পরিচালনা করা হয়। এখন থেকে যৌথ অভিযানের আওতায় আমরা সেসব বাসের বিরুদ্ধে কার্যক্রম নেব এবং এক রুটের বাস অন্য রুটে পরিচালনা করা যাবে না। রুট পারমিট যে যাত্রাপথে নিয়েছে সে যাত্রাপথেই সেই বাস পরিচালনা করতে হবে। না হলে সেই বাস চলবে না। সুতরাং আমরা এখন অত্যন্ত কঠোর। আমরা ঢাকা শহরের গণপরিবহনে শৃঙ্খলা আনবই আনব।
তিনি আরও বলেন, যে ১৬৪৬টি রুট পারমিটবিহীন বাস চিহ্নিত করা হয়েছে, আগামী ১ ডিসেম্বর থেকে সেগুলোর বিরুদ্ধে আমরা অভিযান পরিচালনা করব। সেই অভিযান হবে কঠোর অভিযান। রুট পারমিটবিহীন যেসব বাস আমরা পাব, সেগুলো জব্দ করব। শুধু জরিমানা না, আমরা যেখানে রুট পারমিটবিহীন অবৈধ বাস পাব, সেগুলো জব্দ করব, অকেজো করব। যাতে করে এই গাড়িগুলো সড়কে আসতে না পারে।
বাস মালিকদের অসহযোগিতা ও নানা বাধা-বিপত্তি অতিক্রম করেই বাস রুট রেশনালাইজেশন কার্যক্রম বাস্তবায়নের অঙ্গীকার ব্যক্ত করে মেয়র বলেন, ১ ডিসেম্বর ঘাটারচর থেকে কাঁচপুর রুটে পাইলট প্রকল্পের অংশ হিসেবে বাস রুট রেশনালাইজেশনের মাধ্যমে বাস চালানোর ঘোষণা দিয়েছিলাম। ১ ডিসেম্বর থেকে এই রুটে বাস চালুর যে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল, তা ফলপ্রসূ করা যায়নি। গণপরিবহনে দীর্ঘদিনের পুঞ্জিভূত যে বিশৃঙ্খলা, এই বিশৃঙ্খলায় অনেক অংশীজন রয়েছে। সবাইকে শৃঙ্খলায় আনা অত্যন্ত দুরূহের কাজ। তারপরও আমরা অত্যন্ত দৃঢ়তার সঙ্গে এই কার্যক্রম হাতে নিয়েছে। আমরা সংকল্পবদ্ধ, এটাকে আমরা বাস্তবায়ন করবই।
মেয়র তাপস বলেন, ঢাকা শহরে গণপরিবহনের শৃঙ্খলা আনার জন্য এই কমিটি প্রতিষ্ঠা করা হয়। আমরা দুই মেয়র দায়িত্ব পাওয়ার পর গত বছরের অক্টোবর থেকে কার্যক্রম শুরু করি। এই করোনা মহামারির মধ্যেও আমরা সভা পরিচালনা করেছি এবং এই কার্যক্রমকে ফলপ্রসূ করার জন্য নিরলসভাবে পরিশ্রম করে চলেছি।
পরীক্ষামূলক এই কার্যক্রমে অংশগ্রহণ উন্মুক্ত করে দেওয়া হচ্ছে জানিয়ে ডিএসসিসি মেয়র বলেন, আমরা এখন বিজ্ঞপ্তি দেব। বিজ্ঞপ্তি দিয়ে ১২ ডিসেম্বরের মধ্যে উদ্যোক্তা, অন্যান্য বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে আবেদন নেব। সে আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিআরটিসির ৩০টিসহ আমরা নতুন ১০০টি বাস নির্ধারণ করব।
সভায় ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আতিকুল ইসলাম, বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ) চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদ মজুমদার, বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট করপোরেশনের চেয়ারম্যান মো. তাজুল ইসলাম, রাজউক চেয়ারম্যান এ বি এম আমিন উল্লাহ নুরী, ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষের নির্বাহী পরিচালক খন্দকার রাকিবুর রহমান, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান নিবার্হী কর্মকর্তা ফরিদ আহম্মদ, ঢাকা মেট্টোপলিটনের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) মো. মুনিবুর রহমান, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্লাহ, গণপরিবহন বিশেষজ্ঞ ড. এস এম সালেহ উদ্দিনসহ কমিটির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
এএসএস/জেডএস