টাকা পাচারের তথ্য জানতে কমিশন গঠনের দাবি
অর্থ পাচারকারীর সঠিক তথ্য জানতে কমিশন গঠনের দাবি জাতীয় সংসদে উত্থাপন করেছেন জাতীয় পার্টি ও বিএনপির সংসদ সদস্যরা।
শনিবার (২৭ নভেম্বর) জাতীয় সংসদে ‘ব্যাংকার বহিঃ সাক্ষ্য বিল-২০২১’ উত্থাপন করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। পরে জনমত যাচাই ও বাছাইয়ের প্রস্তাবের আলোচনায় অংশ নিয়ে এ দাবি জানান সংসদ সদস্যরা।
জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, এখন পর্যন্ত কানাডাসহ অনেক দেশে সরকারি, বেসরকারি কর্মকর্তা, রাজনীতিবিদসহ অনেকেই টাকা পাচার করছেন বলে অভিযোগ আছে। আন্তর্জাতিক অনেক প্রতিবেদনে এসেছে বাংলাদেশ থেকে অনেক টাকা পাচার হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে সংসদে বারবার আমরা অর্থমন্ত্রীকে অনুরোধ করেছি, তদন্ত করার জন্য।
তিনি বলেন, এই অভিযোগ সত্য না মিথ্যা, আমরা জানি না। কিন্তু বদনাম হয়। আমলাদের বদনাম হয়, রাজনীতিবিদদের বদনাম হয়। একটা পাইকারি হারে কথা হয়। একটা কমিশন করে তদন্ত করে একটা রিপোর্ট আসা উচিত। আসলেই টাকা পাচার হয় কি না? হলে কে করে? কারা করে? দেশের আমলা, রাজনীতিবিদ সবার স্বার্থে সমাধানে আসা উচিত।
বিএনপির সংসদ সদস্য রুমিন ফারহানা বলেন, আজকে সংসদে পররাষ্ট্রমন্ত্রী উপস্থিত আছেন, তিনি বলেছেন, তার কাছে লিস্ট আছে আমলারা বেশি টাকা পাচার করে। এখন কারা পাচার করে? কি পাচার করে? কত পাচার করে? এ বিষয়ে অর্থমন্ত্রী যদি একটা পরিষ্কার তথ্য দেন তাহলে এরকম ঢালাও মন্তব্য থেকে আমরা রাজনীতিবিদ আছেন তারাও মুক্ত থাকতে পারি। যেসব আমলা সৎভাবে কাজ করেন তারাও মুক্ত থাকতে পারেন।
তিনি বলেন, রাজনীতিবিদ, আমলা এই বদনাম সবার ঘাড়ে না নিয়ে; কারা, কত টাকা পাচার করছে গ্লোবাল ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টিগ্রিটির একটা হিসাব দিচ্ছে। তার সঙ্গে অর্থমন্ত্রী একমত কি না? যদি তা না হয়, ওনার মত কী তা জানালে খুবই ভালো হয়।
বিএনপির সংসদ সদস্য মোশারফ হোসেন বলেন, বড় বড় রাঘব-বোয়ালরা দেশের হাজার হাজার কোটি টাকা মেরে দিয়ে, পাচার করে। বড়লোকেরা চীন, জাপান, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, ফ্রান্স, ইতালিসহ বিভিন্ন দেশে সাম্রাজ্য গড়েছে। কিন্তু গরিব মানুষরা ঋণ পায় না। তারা ভোগান্তিতে পড়ে।
তিনি বলেন, দেশের গরিব কৃষকরা পণ্যের ন্যায্যমূল্য পায় না। ব্যাংক থেকে একটা নোটিশ পাঠালে ১০ বার পুলিশ যায়। কিন্তু যারা ব্যাংকের হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাট করছে। এখান থেকে হুন্ডি ব্যবসায়ীর মাধ্যমে টাকা পাচার করে বিদেশে নিয়ে গেছেন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। যদি নেওয়া হয়ও তা আক্ষরিক অর্থে। তদন্ত কমিটি করা হয়েছে কিন্তু সেটা আলোর মুখ দেখেনি।
ই-কমার্সের নামে দেশে লুটপাট হচ্ছে জানিয়ে বিএনপির সংসদ সদস্য হারুনুর রশিদ বলেন, হাইকোর্টে একটি প্রতিবেদন দাখিল হয়েছে। সেই তথ্যানুসারে ই-ভ্যালির ৩৬টি ব্যাংক হিসাবমতে ৩ হাজার ৮৯৮ কোটি টাকা বাংলাদেশ থেকে পাচার হয়ে গেছে। বাংলাদেশ থেকে ই-কমার্সের নামে কয়েকশ প্রতিষ্ঠান হাজার হাজার কোটি টাকা জনগণের কাছ থেকে হাতিয়ে নিয়েছে।
তিনি বলেন, অর্থমন্ত্রী বলছেন, তার দায় নেই। তাহলে কে দায় নেবে? ডিজিটাল আইন করবেন। কিন্তু তার মাধ্যমে যে টাকা পাচার হয়ে যায় তাহলে ভোক্তারা যাবে কোথায়?
এইউএ/জেডএস