চট্টগ্রাম বন্দরে আজও পণ্য আনা নেওয়া বন্ধ
জ্বালানি তেলের দাম বাড়ার প্রতিবাদে চট্টগ্রামে সব পণ্য আনা নেওয়া বন্ধ রেখেছেন পরিবহন মালিকরা। ধর্মঘটের কারণে দ্বিতীয় দিনের মতো চট্টগ্রাম বন্দরের বাইরে পণ্য আনা-নেওয়া বন্ধ রয়েছে।
শনিবার (৬ নভেম্বর) দুপুরে চট্টগ্রাম বন্দরের সচিব মো. ওমর ফারুক ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘আজও বন্দর থেকে কোনো পণ্য ও কনটেইনার ডেলিভারি হচ্ছে না। কোনো রফতানি শিপমেন্ট হচ্ছে না। তবে আমদানি করা কনটেইনার জাহাজ থেকে নামানো হচ্ছে। পরিবহন ধর্মঘটের কারণে এগুলো বন্দরের বাইরে নেওয়া যাচ্ছে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘শুক্রবার ব্যক্তিগত গাড়িতে করে ৩২০টি কনটেইনার ডেলিভারি হয়েছে। এমনিতে বন্দর থেকে সাধারণ সময়ে চার হাজারের বেশি কনটেইনার ডেলিভারি হয়। ধর্মঘটের কারণে আজ কোনো ধরনের কনটেইনার ডেলিভারি হচ্ছে না।’
বন্দরের এই কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘চট্টগ্রাম বন্দরে কনটেইনার ধারণক্ষমতা ৪৯ হাজার। বর্তমানে বন্দরে কনটেইনার আছে ৩৬ হাজারের মতো। ধর্মঘট যদি আরও দীর্ঘায়িত হয়ে তাহেল বন্দরকে সমস্যায় পড়তে হবে।’
চট্টগ্রাম চেম্বারের পরিচালক এস এম আবু তৈয়ব ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘যোগাযোগ ব্যবস্থা যদি ঠিক না থাকে তাহলে আমদানি রফতানি চলবে কী করে। হঠাৎ করে যে ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হলো করোনার পরে যে কর্মচাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছিল, তা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে এ ধর্মঘটের কারণে। বন্দর তো খুব সেনসেটিভ জায়গা। সেখান থেকে পণ্য পরিবহন দু'একদিন বন্ধ থাকলে জাহাজজট, কনটেইনার জটসহ বিভিন্ন জটিলতা সৃষ্টি হয়। এই অবস্থায় প্রতিটি ঘণ্টা আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।’
তিনি বলেন, ‘গতকাল থেকেই হঠাৎ করেই পণ্য পরিবহন বন্ধ হয়ে গেল। এই অবস্থা যদি চলতে থাকে তাহলে আমরা বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়ব। আমরা বিপর্যস্ত হয়ে যাব। এই ধর্মঘটের তাড়াতাড়ি সুরাহা হওয়া প্রয়োজন। আশা করি তা তাড়াতাড়ি সুরাহা হয়ে গাড়ি চলাচল স্বাভাবিক হবে। ’
এই ব্যবসায়ী নেতা আরও বলেন, ‘হঠাৎ করেই ধর্মঘটে যাওয়ার যে প্রবণতা এটা নিয়ে আমরা ব্যবসায়ীরা উদ্বিগ্ন। ধর্মঘট হঠাৎ করে হবে কেন। হঠাৎ করে ধর্মঘট ডাকলে সবাই বিপদে পড়ে। আলাপ আলোচনা করে সমস্যা সমাধান করা প্রয়োজন। আমাদের দেশে কোনো কথা বার্তা ছাড়াই ধর্মঘট ডাকা হচ্ছে। এটা উদ্বেকজনক বিষয়। আমরা মনে করি অর্থনীতির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট যে হাতগুলো আছে এগুলোকে কীভাবে পরিবহন ধর্মঘটের আওতার বাইরে রাখা যায়, তা ভাবা উচিত।’
উল্লেখ্য, গত বুধবার (৩ নভেম্বর) রাতে ডিজেলের দাম ৬৫ থেকে বাড়িয়ে ৮০ টাকা নির্ধারণ করে প্রজ্ঞাপন জারি করে সরকার। এরপরেই বৃহস্পতিবার (৪ নভেম্বর) পরিবহন ধর্মঘটের ডাক দেন বাস, ট্রাক, কাভার্ড ভ্যান মালিকরা।
আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত তেলের দাম বাড়তে থাকায় ‘লোকসান কমাতে’ দেশের বাজারেও জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানো হয়েছে বলে জানিয়েছে জ্বালানি মন্ত্রণালয়।
কেএম/জেডএস