জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি জনজীবনে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করবে
কেরোসিন এবং ডিজেলের দাম বৃদ্ধি ভোক্তা পর্যায়ে ‘মারাত্মক বিরূপ প্রভাব’ ফেলবে বলে মনে করছেন কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি এসএম নাজের হোসাইন।
বৃহস্পতিবার (৪ নভেম্বর) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি এ মন্তব্য করেন।
বিবৃতিতে তিনি বলেন, জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির কারণে পণ্য পরিবহন, যাতায়াত খাতে ব্যয় বৃদ্ধি থেকে শুরু করে প্রতিটি পণ্য ও সেবার দাম ব্যবসায়ীরা বাড়িয়ে দেবেন। যা জনজীবনে মারাত্মক দুর্ভোগ সৃষ্টি করবে। নিত্যপণ্যের অস্বাভাবিক যন্ত্রণা থেকে সাধারণ মানুষকে রেহাই দিতে সরকারের এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করার আহ্বান জানান তিনি।
বিবৃতিতে এস এম নাজের হোসাইন আরও বলেন, কেরোসিন এবং ডিজেলের দাম বৃদ্ধির কারণে ভোক্তা পর্যায়ে মারাত্মক বিরূপ পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে। কেরোসিন এবং ডিজেলের সঙ্গে সম্পর্ক যুক্ত সব পণ্যের বাজারে আগুন ধরবে। পণ্য পরিবহন ও গণপরিবহনের ব্যয় বেড়ে যাবে। খাদ্যপণ্যের দাম বেড়ে যাবে। জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির অজুহাতকে নতুন করে কাজে লাগিয়ে ব্যবসায়ীরা তাদের প্রতিটি পণ্যের আরেক দফা দাম বাড়িয়ে দেবেন।
বিবৃতিতে তিনি বলেন, আর্ন্তজাতিক বাজারে দাম বৃদ্ধির অজুহাতে বাংলাদেশে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ার ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে বাজারে নিত্যপণ্যের বাজারে আগুন লেগে যাবে। হু হু করে সব খাদ্য-পণ্য ও সেবা সার্ভিসের মূল্য বেড়ে জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে যাবে। সরকার জ্বালানি খাতে ভুর্তকি হ্রাসের কথা বললেও প্রকৃতপক্ষে এর প্রতিক্রিয়ায় সাধারণ মানুষের জীবন জীবিকা দুর্বিষহ হয়ে উঠবে, যা খুবই ভয়াবহ হতে পারে।
গত বেশ কিছুদিন ধরে আর্ন্তজাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দাম কমলেও বাংলাদেশের বাজারে তার প্রতিফলন ঘটেনি। এ অবস্থায় এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের গণশুনানি ছাড়াই সরকারের নির্বাহী আদেশে জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধির ঘোষণা হতাশাজনক। অবিলম্বে এ ধরনের হটকারী সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসার জন্য সরকারের প্রতি দাবি জানিয়েছে ক্যাব।
বিবৃতিতে তিনি আরও বলেন, দীর্ঘদিন ধরে আন্তর্জাতিক বাজারে কেরোসিন এবং ডিজেল তেলের দাম কমতির দিকে ছিল। আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বাড়ার কারণে এখন দাম বাড়িয়ে দিল। দাম যখন কম ছিল তখন সরকার বাংলাদেশে দাম সমন্বয় করেনি। দাম সমন্বয় না হওয়াতে এখন বাজারে বিরূপ প্রভাব দেখা দেবে। সরকার আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে যদি নিয়মিত সমন্বয় করত তাহলে একটা অবস্থা তৈরি হত। এখন হঠাৎ করে দাম বৃদ্ধির সুযোগ নেবেন ব্যবসায়ীরা।
বিবৃতিতে ক্ষোভ প্রকাশ করে নাজের বলেন, সরকার সাধারণ মানুষের জীবন জীবিকার সঙ্গে যুক্ত ডিজেল ও কেরোসিন তেলের দাম বাড়ালেও অকটেন ও পেট্রোলের দাম বাড়ায়নি। ফলশ্রুতিতে জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিভাগ দেশের বৃহত্তর জনগোষ্ঠী সাধারণ ভোক্তাদের সঙ্গে ন্যায্য বিচার করতে সক্ষম হয়নি।
আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের মূল্য ক্রমবর্ধমান অজুহাতে বুধবার নির্বাহী আদেশে জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিভাগ ভোক্তা পর্যায়ে ডিজেল ও কেরোসিনের মূল্য প্রতি লিটার ৬৫ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৮০ টাকা করেছে । তবে অকটেনের দাম ৮৯ টাকা ও পেট্রোলের দাম আগের মতোই প্রতি লিটার ৮৬ টাকা থাকছে।
কেএম/জেডএস