‘আমাদের বাঁচান, নইলে আত্মহত্যা করতে বাধ্য হবো’
‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী আমাদের বাঁচান, নইলে আমরা আত্মহত্যা করতে বাধ্য হবো। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সামনে গিয়ে সবাই আত্মহত্যা করব।’
বৃহস্পতিবার (৪ নভেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে চাকরি সরকারির দাবিতে এক মানববন্ধনে এসব কথা বলছিলেন সরকারি কলেজের বেসরকারি কর্মচারী ইউনিয়নের নেতাকর্মীরা।
মানববন্ধনে দুটি দাবি তুলে ধরা হয়- সরকারি কলেজে কর্মরতদের চাকরি নিয়মিত ও রাজস্ব খাতে স্থানান্তর করতে হবে এবং চাকরি নিয়মিত করার পূর্ব পর্যন্ত সরকারি স্কেল অনুযায়ী বেতন-ভাতা দিতে হবে।
মানববন্ধনে ইউনিয়নের ঢাকা মহানগরের সাধারণ সম্পাদক সিদ্দিকুর রমিজ বলেন, ‘দীর্ঘদিন সরকারি কলেজে কাজ করেও সরকারি বেতন পাই না। মাত্র তিন থেকে ৭ হাজার টাকায় আমরা কাজ করি। এভাবে সংসার চলে না। তাই ধুঁকে ধুঁকে মরার চেয়ে আত্মহত্যা করা অনেক ভালো।’
ইউনিয়নের সভাপতি দুলাল সরদার বলেন, ‘দেশের প্রায় ৪০০ সরকারি কলেজ ও তিনটি সরকারি মাদরাসার বেসরকারি কর্মচারীরা গত পাঁচ থেকে ১৫ বছর বা তারও বেশি সময় ধরে তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণি কর্মচারী হিসেবে কর্মরত। সরকারি কলেজ ও মাদরাসা পরিচালনাকারী উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদফতর কর্তৃপক্ষ ২০১৩ সালে জনবল নিয়োগ দেয়, কিন্তু বেসরকারি কর্মচারীদের কোনো অগ্রাধিকার দেয়নি। ’
তিনি বলেন, ‘২০২০ সালে জনবল নিয়োগের প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিতে সুপ্রিম কোর্টের একটি রিটের নির্দেশনা অনুযায়ী আমাদের অগ্রাধিকার দেওয়ার কথা থাকলেও কর্তৃপক্ষ ওই নির্দেশনা মানেনি। সরকারি কলেজগুলোতে মাত্র ৫ শতাংশ জনবল সরকারিভাবে কর্মরত আছে। বাকি ৯৫ শতাংশ লোক বেসরকারি কর্মচারী হিসেবে কর্মরত।’
মানববন্ধনে সংগঠনের নেতারা জানান, করোনা মহামারির মধ্যেও কলেজ ও মাদরাসায় যেতে হয়েছে। প্রতিষ্ঠান দেখভালের দায়িত্ব পালন করতে হয়েছে। অথচ করোনা মহামারির জন্য অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কর্মচারীদের মাসিক বেতন অর্ধেক করা হয়েছে।
নেতারা বলেন, এর আগে প্রধানমন্ত্রী, শিক্ষামন্ত্রী, শিক্ষাসচিব ও মহাপরিচালককে আমরা স্মারকলিপি দিয়েছি। করোনা পরিস্থিতি বিবেচনা করে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদফতরের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে তিন মাসের জন্য আমাদের কর্মসূচি স্থগিত করি। প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমাদের আবেদন, তিনি যেন অগ্রাধিকার ভিত্তিতে নিয়োগ দিয়ে সাধারণ কর্মচারীদের বেঁচে থাকার পথ সুগম করেন।
এর আগেও চাকরি স্থায়ী করার দাবিতে প্রেসক্লাবের সামনে ২০২০ সালের ৮ নভেম্বর থেকে ২৮ নভেম্বর পর্যন্ত সরকারি কলেজ ও তিনটি সরকারি মাদরাসায় কর্মরত বেসরকারি কর্মচারীরা অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছিলেন।
আরএম/ওএফ