দুর্নীতিবাজদের সাড়ে ৪০০ কোটি টাকার সম্পদ বাজেয়াপ্ত
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলায় গত আড়াই বছরে দুর্নীতিবাজদের প্রায় সাড়ে চারশ কোটি টাকার সম্পদ বাজেয়াপ্ত করেছেন আদালত। একই সময়ে আদালতের নির্দেশে ২ হাজার একশ কোটি টাকার সম্পদ ক্রোক এবং অবরুদ্ধ করা হয়েছে।
বুধবার (৩ নভেম্বর) দুদকের প্রধান কার্যালয়ে সংস্থাটির সচিব ড. মু. আনোয়ার হোসেন হওলাদার সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ তথ্য জানান।
দুদক সচিব বলেন, অবৈধপথে অর্জিত সম্পদ যাতে ব্যবহার করতে না পারে সে দিকে লক্ষ্য রাখা হচ্ছে। আড়াই বছরে দুর্নীতিবাজদের প্রায় সাড়ে চারশত কোটি টাকা দুদকের অনুরোধে আদালত কর্তৃক বাজেয়াপ্ত হয়েছে।
দুদকের বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, ২০১৯ সালে ৪৩৬ কোটি ৮৮ লাখ ৯৫ হাজার ৩৩৪ টাকার সম্পদ বাজেয়াপ্ত হয়। ২০২০ সালে ৩ কোটি ৩ লাখ ৬৯ হাজার টাকার সম্পত্তি এবং চলতি বছরের আগস্ট পর্যন্ত ২ কোটি ৩৬ লাখ ৯৫ হাজার ৩২ টাকার সম্পত্তি রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত হয়।
এর মধ্যে স্বাস্থ্য অধিদফতরের সাবেক হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা আফজাল হোসেন ও তার স্ত্রীর ২টি বাড়ি ও ১টি কমার্শিয়াল স্পেস, চট্টগ্রামের পটিয়া থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রেফায়েত উল্লাহ চৌধুরী ১টি ফ্ল্যাট এবং কক্সবাজারের টেকনাফ থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা প্রদীপ কুমার দাশের ১টি ৬তলা বাড়ি, ১টি সেমিপাকা ঘর, ২টি গাড়ি ও ১টি ফ্ল্যাট উল্লেখযোগ্য।
অন্যদিকে তিন বছরে ফ্রিজ ও ক্রোক হওয়া সম্পত্তির পরিসংখ্যান পর্যালোচনায় দেখা যায়, ২০১৯ সালে দেশে ১৪ দশমিক ৪৪ একর জমি, ১৭টি বাড়ি, ১৭টি ফ্ল্যাট, ৯টি প্লট, ৪টি কমার্শিয়াল স্পেস, ৯টি গাড়ি ও ৪টি স্থাপনা আদালতের আদেশে ক্রোক করা হয়। এছাড়া দুবাইয়ে দুটি কোম্পানির শেয়ারও ক্রোক করা হয়। একই বছর দেশে ২৮৮টি ব্যাংক হিসাব, ৬টি বিও হিসাব ও ৩৬টি সঞ্চয়পত্র/বন্ড, জামানত; পলিসি/ইন্সুরেন্স ফ্রিজ করা হয়েছে। এছাড়া মালয়েশিয়ার ৫টি ব্যাংক হিসাবও ফ্রিজ করা হয়েছে। ২০১৯ সালে মোট ১১৫ কোটি ৫৬ লাখ ৩০ হাজার ২১১ টাকার স্থাবর সম্পদ ক্রোক করা হয়েছে। আর একই বছর ১১৮ কোটি ৫৯ লাখ ৬৫ হাজার ৮৭৬ টাকার অস্থাবর সম্পদ ফ্রিজ করা হয়েছে।
অন্যদিকে ২০২০ সালে দেশে ২৫৬ দশমিক ৩৪৫ একর জমি, ৩৪টি বাড়ি/ভবন, ৩৫টি ফ্ল্যাট, ৭টি কমার্শিয়াল স্পেস, ১৭টি গাড়ি ক্রোক করা হয়েছে। এসব স্থাবর সম্পদের মূল্য ১৮০ কোটি ১১ লাখ ৯১ হাজার ৭৪৬ টাকা। একই বছর এক হাজার ১১৮টি ব্যাংক হিসাব ও এফডিআর ফ্রিজ করা হয়। এসব অস্থাবর সম্পদের মূল্য বা ওইসব অ্যাকাউন্টে ১৫২ কোটি ৪ লাখ ৩৬ হাজার ৪৯৬ টাকা।
আর চলতি বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দেশে ১২৭ দশমিক ৪৮৪ একর জমি, ৩০টি বাড়ি/ভবন, ১৪টি ফ্ল্যাট, ১টি প্লট ২৭টি গাড়ি ক্রোক করা হয়েছে। এসব স্থাবর সম্পদের মূল্য ৩২৪ কোটি ৫৯ লাখ ৮৬ হাজার ৫৯২ টাকা। একই সময়ে দেশে ৯১৬টি ব্যাংক হিসাব, ৫৬টি সঞ্চয়পত্র ও বন্ড/শেয়ার, ৩টি পিস্তল, ৭টি জাহাজ ফ্রিজ করা হয়েছে। এছাড়া দেশের বাইরে কানাডায় ১১টি, অস্ট্রেলিয়ায় ২৩টি, সিঙ্গাপুরে ৫টি ব্যাংক হিসাব ফ্রিজ করা হয়েছে। এসব অস্থাবর সম্পদের মূল্য ১ হাজার ১৬৭ কোটি ৭ লাখ ১৫ হাজার ৬০৮ টাকা।
আরএম/এসএম