শেষ হলো সুবর্ণজয়ন্তী হ্যাকাথন
বাংলাদেশ ওপেন সোর্স নেটওয়ার্ক এবং বাংলাদেশ ফ্লাইং ল্যাবসের যৌথ আয়োজনে জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি জাদুঘরের মিলনায়তনে আয়োজিত হলো দুই দিন ব্যাপী সুবর্ণজয়ন্তী হ্যাকাথন-২০২১।
গতকাল (শনিবার) বিকেল ৪টায় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ইয়াফেস ওসমান হ্যাকাথনের বিজয়ী ঘোষণার মাধ্যমে ৩৬ ঘণ্টার হ্যাকাথনের সমাপ্তি টানেন।
হ্যাকাথনের চ্যাম্পিয়ন দল টিম ওয়ান জিরোর সদস্য- নূর-এ-জান্নাত, অর্পন চন্দ্র, মাজেদুল ইসলাম নাইম ও নিহাম দাস অঙ্কুশ। প্রথম রানার আপ টিম প্রোডিজির সদস্য তৌসিফ সামিন, ফারহান করিম, ফাইয়াজ আজমাইন ও মো. আবির হোসাইন এবং দ্বিতীয় রানার আপ হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন সাইবারট্রন টিমের মো. রাসেল খান হামীম ও মো. তামীমুল এহসান।
সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রী ইয়াফেস ওসমান। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও লেখক অধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল এবং বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতির প্রেসিডেন্ট শহিদ-উল-মুনির। অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি জাদুঘরের মহাপরিচালক মোহাম্মদ মুনির চৌধুরী এবং আয়োজনে স্বাগত বক্তব্য রাখেন কম্পিউটার সার্ভিসেস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মমলুক ছবির আহমেদ ।
স্বাগত বক্তব্যে কম্পিউটার সার্ভিসেস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মমলুক ছবির আহমেদ বলেন, আজ আমাদের জন্য অত্যন্ত আনন্দের দিন। কেননা যেই প্রয়োজন থেকে আমরা একটি মাইক্রোকন্ট্রোলার বোর্ড বানিয়েছি তার পরীক্ষামূলক পর্যবেক্ষণের পরে আজ আমরা এর ব্যবহারিক প্রয়োগ দেখতে পারছি। ইতোমধ্যে দেশের বিভিন্ন জায়গায় প্রায় ১৭০০০ ছেলেমেয়েকে প্রশিক্ষণ দিয়েছি যার ফলাফল অতি শিগগিরই আমরা দেখতে পারবো।
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নূর-এ-জান্নাত বলেন, প্রথমবারের মতো নিজের দেশের তৈরি মাইক্রোকন্ট্রোলার বোর্ড দিয়ে কাজ করতে পারাটা আমাদের জন্য অত্যন্ত গর্বের।
বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতির প্রেসিডেন্ট শহিদ-উল-মুনির বলেন, ৩৬ ঘণ্টা একটানা কাজ করেও অংশগ্রহণকারীদের মাঝে কোনো ক্লান্তি দেখা যায়নি এবং তাদের মাঝে যে শেখার আগ্রহ তা আমাকে অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে। এমন উদ্যমী ছেলেমেয়েদের হাত ধরেই প্রযুক্তির আন্তর্জাতিক বাজারে বাংলাদেশের তৈরি মাইক্রোকন্ট্রোলার বোর্ড জনপ্রিয়তা অর্জন করবে বলে আমার বিশ্বাস।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল বলেন, কোনো দেশকে এগিয়ে নিতে এর মূল অবকাঠামো হচ্ছে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ক্ষেত্রে উন্নতি। আমি খুব দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি যে বাংলাদেশ এই ক্ষেত্রে ধীরে ধীরে এগিয়ে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, আমাদের সময় বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে গিয়েও কোনো ডিভাইস ধরা যেত না, ব্যাবহারিক জ্ঞ্যান তো ভাবনার বাইরে। তবে এখনকার ছেলেমেয়েরা অনেকটা এগিয়ে। আমার খুব ভালো লেগেছে এই ভেবে যে শুধুমাত্র কম্পিউটার বা তড়িৎকৌশল নয় অন্যান্য বিভাগসহ এই প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছিল কলেজের শিক্ষার্থীরাও।
তিনি আরও বলেন, ইলেকট্রনিক্স নিয়ে কাজ করতে হলে খুব গুরুত্বপূর্ণ একটা জিনিস হচ্ছে সার্কিট বোর্ড; যা আগে আমাদের ভিনদেশ থেকে কিনে আনতে হতো। গর্বের বিষয় হচ্ছে এখন আর অন্যদেশের বোর্ড দিয়ে আমাদের কষ্ট করে কাজ করতে হবে না, নিজের ভাষায় নিজের দেশের তৈরি জিনিস দিয়েই আমরা এখন কাজ করতে পারবো।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী ইয়াফেস ওসমান বলেন, ছাত্র-ছাত্রীদের কাজের মাঝেই আমি দেশের ভবিষ্যৎ দেখি। সারা পৃথিবীর সাথে প্রতিযোগিতা করতে হলে চাই জ্ঞানের চর্চা আর আজকের আয়োজনটি শিক্ষার্থীদের এমন সুযোগ করে দিয়েছে যা আমাকে আনন্দিত করেছে।
এনএফ