আটকে থাকা ১২ লাখ ড্রাইভিং লাইসেন্স দ্রুত দেওয়ার ব্যবস্থা করুন
দীর্ঘদিন ধরে আটকে থাকা ১২ লাখ ড্রাইভিং লাইসেন্স দ্রুত চালকদের হাতে তুলে দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। এছাড়া সড়ক নির্মাণ ও রক্ষণাবেক্ষণে দুর্নীতির লাগাম টেনে ধরে সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি। বৃহস্পতিবার (২১ অক্টোবর) ‘নিরাপদ সড়ক দিবস-২০২১’ উপলক্ষে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ দাবি জানায় সংগঠনটি।
বিবৃতিতে সংগঠনের মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, নিরাপদ সড়কের জন্য সরকারের নির্বাচনী অঙ্গীকার বাস্তবায়ন করতে হবে। ধারাবাহিকভাবে তিনবার ক্ষমতায় আসা আওয়ামী লীগ সরকারের নির্বাচনী নানা প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন হলেও তৃতীয় মেয়াদের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতিতে নিরাপদ সড়কের অঙ্গীকার বাস্তবায়নে গাফিলতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, সরকারকে সড়ক নিরাপত্তামূলক কর্মসূচির বাজেট বাড়ানো, গবেষণা, সভা-সেমিনার, প্রচার-প্রচারণার মাধ্যমে গণসচেতনতা তৈরির পাশাপাশি সড়কে চাঁদাবাজি বন্ধ করার উদ্যোগ নিতে হবে। নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) ও ট্রাফিক বিভাগের অনিয়ম-দুর্নীতি বন্ধ কর করতে হবে।
বিবৃতিতে জানানো হয়, সরকারের স্বাস্থ্য অধিদফতরের হিসাব মতে, সারাদেশে প্রতিদিন গড়ে ৬৪ জন মানুষ সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারাচ্ছে। ১৫০ জনের বেশি মানুষ আহত হচ্ছে। বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির হিসাবে দেখা গেছে, গত ২০১৫ সালে ৬ হাজার ৫৮১টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৮ হাজার ৬৪২ জন নিহত, ২১ হাজার ৮৫৫ জন আহত হয়েছে। ২০১৬ সালে ৪ হাজার ৩১২টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৬ হাজার ০৫৫ জন নিহত, ১৫ হাজার ৯১৪ জন আহত হয়েছে। ২০১৭ সালে ৪ হাজার ৯৭৯টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৭ হাজার ৩৯৭ জন নিহত, ১৬ হাজার ১৯৩ জন আহত হয়েছে। ২০১৮ সালে ৫ হাজার ৫১৪টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৭ হাজার ২২১ জন নিহত, ১৫ হাজার ৪৬৬ জন আহত হয়েছে। ২০১৯ সালে ৫ হাজার ৫১৬টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৭ হাজার ৮৫৫ জন নিহত, ১৩ হাজার ৩৩০ জন আহত হয়েছে।
২০২০ সালে করোনা সংক্রমণে বছরব্যাপী লকডাউনে পরিবহন বন্ধ থাকা অবস্থায় ৪ হাজার ৮৯১টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৬ হাজার ৬৮৬ জন নিহত ও ৮ হাজার ৬০০ জন আহত হয়েছে। গত ৬ বছরে ৩১ হাজার ৭৯৩টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৪৩ হাজার ৮৫৬ জন নিহত, ৯১ হাজার ৩৫৮ জন আহত হয়েছে। অথচ জাতিসংঘ ২০১১ সাল থেকে ২০২১ সালকে সড়ক নিরাপত্তা দশক ঘোষণা করে সদস্য দেশগুলোর সড়ক দুর্ঘটনা অর্ধেকে নামিয়ে আনার অনুস্বাক্ষরকারী দেশ হিসেবে বাংলাদেশ এ অঙ্গীকার রক্ষায় ব্যর্থ হয়েছে।
এসআর/এসএসএইচ