পিএসসির প্রশ্নফাঁসে ৩ থেকে ১০ বছরের কারাদণ্ড
‘বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন আইন, ২০২১’ এর খসড়ার নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। খসড়া আইনে প্রশ্নফাঁসে জড়িতদের সর্বনিম্ন ৩ এবং সর্বোচ্চ ১০ বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত করার বিধান রাখা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৯ অক্টোবর) মন্ত্রিসভার বৈঠকে এ অনুমোদন দেওয়া হয়। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে গণভবন থেকে তিনি এবং সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীরা বৈঠকে যোগ দেন।
বৈঠক শেষে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, ‘এটা ১৯৭৭ সালের অর্ডিন্যান্স (অধ্যাদেশ) ছিল। হাইকোর্টের রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে নিয়ে আসা হয়েছে। এটা রুল বেইজড আইন। ম্যাক্সিমাম জিনিসগুলো রুল দিয়ে করে নেওয়া হবে। জেনারেল একটা প্রভিশন লে-ডাউন করে দেওয়া হয়েছে আইনটাতে।’
খসড়া আইনে ১৫টি ধারা রয়েছে বলেও জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব।
তিনি বলেন, ‘পরীক্ষা পদ্ধতি কীভাবে হবে সেটার একটা আউট লাইন খসড়া আইনে করে দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে রুল দিয়ে ব্যাখ্যা দেওয়া হবে। পাবলিক সার্ভিস কমিশনের পরীক্ষা সংক্রান্ত কিছু অপরাধের কথা বলা হয়েছে। কেউ যদি প্রশ্ন ফাঁসের সঙ্গে জড়িত থাকে খসড়া আইনে সর্বোচ্চ ১০ বছর কারাদণ্ডের কথা বলা হয়েছে।’
‘এক্ষেত্রে সর্বনিম্ন ৩ বছর কারাদণ্ড বা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হবেন। বেশ শক্ত একটা স্ট্যান্ড নেওয়া হয়েছে। জরিমানাটা সুনির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়নি।’
পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বন করেলে সর্বোচ্চ ২ বছর, সর্বনিম্ন এক বছরের কারাদণ্ড বা অর্থদণ্ড বা উভয়দণ্ড হতে পারে বলেও জানান তিনি।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘উত্তরপত্রের জালিয়াতির সঙ্গে যারা জড়িত থাকবেন তাদের সর্বোচ্চ ২ বছর ও সর্বনিম্ন এক বছরের কারাদণ্ড বা অর্থদণ্ড বা উভয়দণ্ড হতে পারে।’
‘কোন পরীক্ষার্থী যদি অসুদপায় অবলম্বন করেন বা অন্য কোন ব্যক্তিকে অসুদপায়ে সহযোগিতা করে তাহলে সেও সর্বোচ্চ ২ বছর ও সর্বনিম্ন এক বছরের কারাদণ্ড এবং অর্থদণ্ড বা উভয়দণ্ডে দণ্ডিত হবে। পরীক্ষা সংক্রান্ত দায়িত্ব পালনে বাধা দিলে সর্বোচ্চ এক বছরের কারাদণ্ড বা অর্থদণ্ড বা উভয়দণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে খসড়া আইনে।’
পরীক্ষা পরিচালনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তি যদি কোনো অপরাধ করে তাহলে ২ বছরের কারাদণ্ড বা অর্থদণ্ড বা উভয়দণ্ড হতে পারে বলেও জানান তিনি।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘মোবাইল কোর্টের মধ্যেও এটা অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। মোবাইল কোর্টের মাধ্যমেও পরীক্ষা সংক্রান্ত বিষয়ে যারা যুক্ত থাকবেন, তাদের বিচারের আওতায় এনে সঙ্গে সঙ্গে শাস্তি দেওয়া যেতে পারে।’
কিছুদিন থেকে তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির নিয়োগ পিএসসির মাধ্যমে নেওয়ার বিষয়ে আলোচনা হচ্ছে। এ বিষয়ে কোনো আলোচনা হয়েছে কিনা- জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘খসড়া আইনে আছে, সরকার প্রদত্ত যে কোনো দায়িত্ব পালন করবে পিএসসি। সেটা রুল দিয়ে করে দেওয়া যাবে।’
কোনো সিদ্ধান্ত হয়েছে কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘তৃতীয় শ্রেণির নিয়োগের বিষয়টি আলোচনা হয়েছে। কিন্তু এখনও প্রিসাইজের কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।’
‘তবে বিভিন্ন ফোরামে, সর্বোচ্চ ফোরামে, এই জাতীয় আলোচনা হয়েছে- আলাদা একটা পিএসসি গঠন করে করা (তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী নিয়োগ) যায়। তবে প্রিসাইজ কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।’
তিনি বলেন, ‘খসড়ায় কমিশন গঠন করার কথা বলা হয়েছে। সেই বিষয়টির ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে।’
কমিশনে কমপক্ষে ৬ জন সদস্য থাকবেন জানিয়ে তিনি বলেন, ‘তবে সদস্য কোনভাবেই ১৫ জনের বেশি হবে না। একটা আউট লাইন করে দেওয়া হয়েছে। বাকি ফরমেশনটা রুল দিয়ে করে দেওয়া হবে।’
এসএইচআর/এসএম