ভ্যাকসিন বিষয়ক ‘সুরক্ষা’ অ্যাপ হস্তান্তর সোমবার
প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস প্রতিরোধে টিকা কার্যক্রম পরিচালনায় ভ্যাকসিন বিষয়ক ‘সুরক্ষা’ অ্যাপের নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে। সোমবার (২৫ জানুয়ারি) তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে এই অ্যাপলিকেশন হস্তান্তর করা হবে।
রোববার (২৪ জানুয়ারি) সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সেন্টারের (এমআইএস) পরিচালক অধ্যাপক ডা. মিজানুর রহমান।
তিনি জানান, আইসিটি বিভাগ অ্যাপ প্রস্তুত করেছে। তারা জানিয়েছে যে সোমবার আমাদের কাছে হস্তান্তর করবে। প্রধানমন্ত্রী অফিসে অ্যাপটি হস্তান্তর হবে।
এর আগে বৃহস্পতিবার (২১ জানুয়ারি) রাতে আইসিটি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক জানিয়েছেন, ‘সুরক্ষা প্ল্যাটফর্মটি হবে একটি ওয়েব অ্যাপলিকেশন। এটি https://surokkha.gov.bd/ ঠিকানায় থাকবে। এটা হোস্ট করা হবে দেশের ন্যাশনাল ডাটা সেন্টারে। ফলে যতজন এটাতে নিবন্ধন করতে চাইবেন, সেভাবে এর সক্ষমতা বাড়ানো যাবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এই অ্যাপে দেশের নাগরিকদের ডিজিটাল রেজিস্ট্রেশন শুরু হবে। স্মার্টফোনেও অ্যাপলিকেশনটি ব্যবহার করে ভ্যাকসিনের জন্য নাম নিবন্ধন করা যাবে।’
তিনি জানান, ওয়েব অ্যাপে ১৮ বছরের ঊর্ধ্ব বয়সীদের নিবন্ধন করা যাবে। ফলে কোনও ধরনের সমস্যা ছাড়াই নিবন্ধন সম্পন্ন করা যাবে।
২৭ জানুয়ারি দেশে প্রথম করোনা ভ্যাকসিন দেওয়া হবে একজন নার্সকে। রাজধানীর কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে ভার্চুয়ালি যুক্ত থেকে এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
২৮ জানুয়ারি ঢাকার পাঁচটি হাসপাতালে এবং তারপর ৮ ফেব্রুয়ারি সারাদেশে টিকাদান শুরু হবে। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল, মুগদা জেনারেল হাসপাতাল, কুয়েত মৈত্রী হাসপাতাল ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে টিকা দেওয়া হবে। সেখানে ৪০০ থেকে ৫০০ জনের ওপর টিকা প্রয়োগ করা হবে। তাদের এক সপ্তাহ পর্যবেক্ষণে রাখার পর ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে সারাদেশে টিকাদান শুরু হবে।
গত বৃহস্পতিবার (২১ জানুয়ারি) সেরাম ইনস্টিটিউটে তৈরি অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার ২০ লাখ ডোজ টিকা ভারত থেকে উপহার হিসেবে পেয়েছে বাংলাদেশে। এছাড়া বাংলাদেশ সরকারিভাবেও ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট থেকে তিন কোটি ডোজ টিকা কিনছে, যার প্রথম চালানে ৫০ লাখ ডোজ টিকা ২৫ জানুয়ারির মধ্যে দেশে পৌঁছাবে বলে আশা করছে সংশ্লিষ্টরা।
গেল বুধবার (২০ জানুয়ারি) প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্যসচিব মান্নান জানিয়েছিলেন, প্রথম পর্যায়ে দেশের বেসরকারি হাসপাতালে করোনাভাইরাসের টিকা দেওয়া হবে।
এরইমধ্যে টিকার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নিয়ে গাইডলাইন প্রস্তুত করেছে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর। এ বিষয়ে অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মাহবুবুর রহমান ঢাকা পোস্টকে বলেন, যেকোনো ওষুধ বা ভ্যাকসিন প্রয়োগ করলে একটা পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হতে পারে। বিভাগীয়, জেলা ও উপজেলাপর্যায়ে বিষয়টি দেখাশোনার জন্য একটা কমিটি করা হয়েছে। তারা বিষয়টি তদন্ত করে দেখবেন যে এটা কি ভ্যাকসিনের কারণে হলো, না অন্যকোনো কারণে হলো।
‘এটা করার পর আমাদের ঔষধ প্রশাসনের মহাপরিচালক বরাবর একটা রিপোর্ট আসবে। তারপর আবার আমাদের একটি জাতীয় কমিটি আছে, তারা বিষয়টি আবারও এনালাইসিস করবে এবং ফাইনালি রেগুলেটরি অ্যাকশন নেয়া হবে। এরপর আবার এটিকে আমাদের আন্তর্জাতিক মনিটরিং সেলে শেয়ার করব।’
টিকা নিলে কোন ধরনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে— এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘যে স্থানে টিকা দেওয়া হবে সেই স্থানে ব্যথা হতে পারে। হালকা জ্বর আসতে পারে। মাথাব্যথা করতে পারে। এছাড়া স্বল্প পরিমাণে শ্বাসকষ্টও দেখা দিতে পারে।’
টিআই/ওএফ