মৃত সন্তান জন্মের পর মারা গেল গায়ে আগুন দেওয়া কিশোরী
বিয়ের এক বছরের মাথায় শ্বশুরবাড়ির অত্যাচারে গায়ে গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন দেয় নেত্রকোনার কলমাকান্দার সুরাইয়া নেওয়াজ লাবণ্য (১৭) নামে এক কিশোরী গৃহবধূ।
বৃহস্পতিবার (১৪ অক্টোবর) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়েছে। এর আগে সে একটি মৃত সন্তানের জন্ম দিয়েছে।
শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের আবাসিক সার্জন ডা. এসএম আইউব হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, লাবণ্যর শরীরের ৯০ শতাংশ দগ্ধ হয়। আজ সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় আইসিইউতে মারা যায় সে।
লাবণ্যের চাচা এস এম সাইদুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, শ্বশুরবাড়ির লোকজনের মানসিক নিপীড়নে অতিষ্ঠ হয়ে গত ৯ অক্টোবর নিজ গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন দেয় লাবণ্য। তাকে প্রথমে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখান থেকে পরে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে আনা হয়।
তিনি আরও জানান, মৃত্যুর ১২ ঘণ্টা আগে সে মৃত সন্তান প্রসব করে। আর ১২ ঘণ্টা পরে সে নিজেও পরপারে চলে গেল।
এক বছর আগে লাবণ্যের সাথে বিয়ে হয় শেখ সাদী হোসেনের। সাইদুল ইসলাম জানান, বিয়ের পর ২ লাখ টাকা যৌতুক চান লাবণ্যের স্বামী। যৌতুক না দেওয়ায় তার স্বামী, শ্বশুর-শাশুড়ি, ননদ-ভাসুর মানসিকভাবে নিপীড়ন করত। নিপীড়ন সহ্য করতে না পেরে সে গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন লাগিয়েছে বলে মৃত্যুর আগে জানিয়েছে।
নিহতের বাবা আরিফুল ইসলামের সাথে কথা হয় ঢাকা পোস্টের। তিনি বলেন, আমার মেয়ে অনেক যন্ত্রণা নিয়ে মারা গেছে। সকালে নাতীকে আজিমপুর কবরস্থানে কবর দিয়ে এলাম। আর রাতে আমার মেয়েও দুনিয়া ছেড়ে চলে গেল।
তিনি আরও বলেন, এত বড় ঘটনা ঘটে গেল আমার মেয়ের স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির কেউ খোঁজ নিল না। আমার মেয়েকে যারা নির্যাতন করে মেরেছে তাদের বিচার চাই।
লাবণ্যর বিষয়ে জানতে তার স্বামী শেখ সাদীর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তার দুটি ফোন নম্বরই বন্ধ পাওয়া গেছে।
নেত্রকোনার কলমাকান্দা থানার ওসি আবদুল আহাদ বলেন, এ বিষয়ে এখনো কেউ থানায় অভিযোগ করেনি।
এসএএ/এইচকে