স্মার্ট ড্রাইভিং লাইসেন্স বিতরণ শুরু
দুই বছরের বেশি সময় ধরে বন্ধ ছিল ড্রাইভিং লাইসেন্স বিতরণ। অবশেষে আটকে থাকা ১২ লাখ ৪৫ হাজার স্মার্ট ড্রাইভিং লাইসেন্স দেওয়ার কাজ শুরু করেছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ)।
এরই অংশ হিসেবে সোমবার (১১ অক্টোবর) থেকে নতুন করে ড্রাইভিং লাইসেন্স দেওয়ার কার্যক্রম শুরু হয়েছে। তবে লাইসেন্স হাতে পেতে অপেক্ষা করতে হবে আরও কয়েকদিন।
জানা গেছে, লাইসেন্স ছাপা হলে আবেদনকারী চালককে এসএমএসের মাধ্যমে সংগ্রহের তারিখ জানিয়ে দেওয়া হবে। একইসঙ্গে প্রিন্ট হওয়া লাইসেন্স কার্ড প্যাকেজিং করে কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট জেলা সার্কেল অফিসে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে। যারা যে অফিসে লাইসেন্সের জন্য আবেদন করেছেন সেই অফিস থেকে লাইসেন্স পাবেন।
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) ৫৪টি মাঠ পর্যায়ের অফিস রয়েছে, যার অধীনে মোট ৭০টি সার্ভিস ডেলিভারি আউটলেট রয়েছে। এসব সার্ভিস ডেলিভারি আউটলেট থেকেই ড্রাইভিং লাইসেন্স সরবরাহ করা হবে। লাইসেন্স প্রস্তুত হয়ে বিভিন্ন জেলায় সার্ভিস ডেলিভারি আউটলেটে পৌঁছাতে এবং আবেদনকারীদের হাতে পৌঁছে দিতে আরও তিন চারদিন সময় লেগে যাবে। আগামী ছয় মাসের মধ্যে পেন্ডিং সব লাইসেন্স দেওয়া শেষ করবে বিআরটিএ।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, করোনার মধ্যে শুধু আঙ্গুলের ছাপ না নেওয়ায় কমপক্ষে ছয় লাখ আবেদনকারী বিপাকে পড়েছিলেন। এ সমস্যার সুরাহা করতে উদ্যোগ নেয় বিআরটিএ। সম্প্রতি রাজধানীর পল্লবীতে স্থাপিত এনরোলমেন্ট স্টেশনে আবেদনকারীদের আঙ্গুলের ছাপ নেওয়ার কার্যক্রম শুরু হয়।
বিআরটিএর পরিচালক (ইঞ্জিনিয়ারিং) শীতাংশু শেখর বিশ্বাস ঢাকা পোস্টকে এ বিষয়ে বলেছিলেন, আটকে থাকা সব ড্রাইভিং লাইসেন্স অক্টোবরের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে ধাপে ধাপে সরবরাহ করতে পারব। সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। গত ২৯ আগস্ট বিএমটিএফের সঙ্গে বিআরটিএর এ সংক্রান্ত চুক্তি সই হয়েছে। চুক্তি স্বাক্ষরের পর থেকে প্রক্রিয়ায় অগ্রগতি হচ্ছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রায় দুই বছর ধরে বিআরটিএ জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ড্রাইভিং লাইসেন্স সরবরাহ করতে পারছিল না। অন্তর্বর্তীকালীন প্রাপ্তি স্বীকার রশিদ মোটরযান চালানোর অস্থায়ী অনুমতিপত্র হিসেবে ব্যবহার করছেন চালকরা। লিখিত, মৌখিক ও ব্যবহারিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েও ড্রাইভিং লাইসেন্স পাচ্ছিলেন না ১২ লাখ ৪৫ হাজার গাড়িচালক।
বিআরটিএ সূত্রে জানা গেছে, নতুন আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে লাইসেন্স দিচ্ছে মাদ্রাজ সিকিউরিটি প্রিন্টার্স। গত ৩১ ডিসেম্বর থেকে স্মার্ট ড্রাইভিং লাইসেন্স সরবরাহ করার কথা ছিল প্রতিষ্ঠানটির। করোনার সংক্রমণ বেড়ে যাওয়াসহ বিভিন্ন কারণ দেখিয়ে প্রতিষ্ঠানটি দুই দফায় সময় বাড়িয়ে নেয়। এখন অবশ্য প্রতিদিন পল্লবীতে প্রতিষ্ঠানটির স্থাপন করা এনরোলমেন্ট স্টেশনে প্রতি কার্য দিবসে গড়ে প্রায় এক হাজার আবেদনকারীর আঙ্গুলের ছাপ সংগ্রহ করে লাইসেন্স দেওয়ার প্রক্রিয়া এগিয়ে নিচ্ছে।
সব ধরনের পরীক্ষায় পাস করেও অধিকাংশ লাইসেন্স প্রত্যাশী দুই বছর ধরে অপেক্ষা করছেন। প্রয়োজনীয় ফি, ছবি ও আঙ্গুলের ছাপ দেওয়ার পরও স্মার্ট ড্রাইভিং লাইসেন্স তারা পাচ্ছিলেন না। তবে আজ থেকে এ সমস্যার সমাধানের আশা দেখছেন লাইসেন্স প্রত্যাশীরা।
এএসএস/এসকেডি